ইসলামের দৃষ্টিতে মিউজিক, বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হারাম।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রাহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে নাফে’! এখনো কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম হ্যাঁ। অতঃপর আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। -মুসনাদে আহমদ হাদীস : ৪৫৩৫; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪৯২৪ বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকেও এমন একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।-ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৯০১
,
নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বাজনাদার নুপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।-সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৫২৩৭
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হল শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২১১৪
মৃদু আওয়াজের ঘণ্টি-ঘুঙুরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আধুনিক সুরেলা বাদ্যযন্ত্র,মিউজিকের বিধান কী হবে তা খুব সহজেই বুঝা যায়।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাযি. বলেন,
الْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِى الْقَلْبِ كَمَا يُنْبِتُ الْمَاءُ الزَّرْعَ
পানি যেমন (ভূমিতে) তৃণলতা উৎপন্ন করে তেমনি গান মানুষের অন্তরে নিফাক সৃষ্টি করে। (বাইহাকী ২১৫৩৬ তাফসীরে কুরতুবী ১৪/৫২)
সলফে সালেহীন; সাহাবা ও তাবেঈনদের ভাষ্য অনুযায়ী মিউজিক,গান অন্তরে মুনাফিকী (কপটতা) উদগত করে এবং বহু গুনাহর সমষ্টি হল গান ও বাদ্যযন্ত্র। যেমন- ক) নিফাক এর উৎস। খ) ব্যভিচারের প্রেরণা জাগ্রতকারী। গ) মস্তিষ্কের উপর আবরণ। ঘ) কোরআনের প্রতি অনিহা সৃষ্টিকারী। ঙ) আখিরাতের চিন্তা নির্মূলকারী। চ) গুনাহের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টিকারী এবং ছ) জিহাদী চেতনা বিনষ্টকারী। (ইগাছাতুল লাহফান ১/১৮৭)
(০২)
কবিরা গুনাহ হয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
ইবনে আসাকির হযরত আনাস রাঃ সূত্রে বর্ণনা করেন,রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন
من استمع قينة صب في أذنيه الآنك يوم القيامة)(ضعیف الجامع الصغیر للالبانی حدیث:4510 والضعیفه حديث:4549
যে ব্যক্তি কোন গায়কের নিকট বসে গান শুনলো, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ পাক তার কানে গলিত সীসা ঢেলে দিবেন।
(যয়ীফুল জামিউস সাগির লিল আলবানী ৪৫১০)
(৩-৫)
জায়েজ হবেনা।
(০৬)
এক্ষেত্রে গুনাহের কাজে সহযোগিতার গুনাহ আপনার হবে।
(০৭)
গান শোনার শাস্তি উপলব্ধি করে তাহা শোনা থেকে বাঁচার চেষ্টা করা।
নেককারদের সোহবতে বেশি বেশি সময় থাকা।
মন্দ লোকদের সোহবতে না থাকা।
গুনাহের পরিবেশ বর্জন করা।
একাকিত্ব পরিহার করার চেষ্টা করা।
অবসরে না থেকে সর্বদা কোনো কাজে লিপ্ত থাকার চেষ্টা করা।
গান শোনার মাধ্যম (মোবাইল/কম্পিউটার/টিভি ইত্যাদি) হতে দূরে থাকা।