আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (34 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।

১/ আমার আম্মু গত তিন বছর যাবত কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত। তিনি সপ্তাহে তিনটি ডায়ালাইসিস করেন। অন্যান্য ডায়ালাইসিসরত  রোগী যেরকম মোটামুটি চলাফেরা,কাজকর্ম করার মত সুস্থ থাকে আম্মু সেরকম না৷ আম্মু এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।আই সি ইউতে যেতে হয়েছে৷ কিডনির সমস্যার কারণে তার লিভার এবং হার্টেও সমস্যা হয়েছে। তার মারাত্মক শ্বাসকষ্ট আছে।মধ্যম বয়সের আমার আম্মু এখনই কাজকর্ম করতে পারেন না।তার কষ্ট আমরা সহ্য করতে পারি না। ডাক্তাররা আম্মুকে কিডনি ট্রা্ন্সপ্ল্যান্ট করতে বলেছেন।তারা বলেন কিডনি বিকলের জন্য ডায়ালাইসিস প্রকৃত চিকিৎসা না৷ ট্রা্ন্সপ্ল্যান্টই প্রকৃত চিকিৎসা। আম্মু ডায়ালাইসিস করেও অসুস্থ থাকেন।আম্মুর নিকটাত্মীয়দের মধ্যে আমরা অনেক অনুরোধ করেছি আম্মুকে কিডনি ডোনেট করার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের ব্যর্থ করেছে।এখন কিডনি দেয়ার মত আমার অল্পবয়সী বোন আছেন৷ আম্মু কিছুতেই আপুর কিডনি নিতে চান না। কারন আপু অবিবাহিত। ডাক্তার, নার্সরা যাদের সাথে আমরা এই বিষয়ে পরামর্শ করছি তারা বলেছে আপুর অপারেশনটা তার জন্য ভালো হবে না। আমরা এমন উদাহরণও দেখেছি যে একটি মেয়ে তার মা কে কিডনি দিয়ে দেয়ার কারণে তার বিয়েতে সমস্যা হয়েছে। ডাক্তার বলেছে বাচ্চা নেয়ার সময়ে সমস্যা হতে পারে।

আম্মুর কথা হচ্ছে" আমার মেয়ের জীবনে এমন সমস্যা হলে আমি অপরাধবোধে মরে যাবো। এর থেকে আমি অসুখে মরে যাই। "

আম্মুর অসুস্থতা সত্যি অসহনীয়। তার আমরা অনাত্মীয় লোকের থেকে কিডনি নেয়ার পরিকল্পনা করছি যে টাকার বিনিময়ে কিডনি দিবেন।

আদম সন্তানের কোনো অঙ্গ তো টাকার বিনিময়ে ক্রয় করা জায়েজ নাই। আমাদের অবস্থার জন্য কি এ কাজটা জায়েজ হবে?  চিকিৎসা না করে কোনো রোগীকে কি এভাবে ফেলে রাখা যায়?

(এক বোনের প্রশ্ন)


২/ইউটিউবে যেসব ভিডিওর মনিটাইজেশন অন করা থাকে ওই চ্যানেলের মালিকের ইনকাম হালাল না হারাম তা নিয়ে আলেমদের কথাবার্তা আছে। কিন্তু আমি যদি এরকম ভিডিও দেখি যেখানে মনিটাইজেশন অন আছে আমার কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/17579/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
পৃথিবীতে মানুষই সবচেয়ে মর্যাদাবান। তারাভরা আকাশ, জোছনা ভরা রাত বিছিয়ে রাখা বিস্তৃত সবুজ ভূমি সব আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালার সব সৃষ্টিই মানুষের কল্যাণে। মানুষের প্রয়োজনে। 

মানবজাতিকে মর্যাদাবান করার জন্য মহান প্রভু মানুষের অবয়ব ও কাঠামোগত সৌন্দর্য, বিবেক-বুদ্ধি ও জ্ঞান-গরিমায় উন্নতি দিয়েছেন। দিয়েছেন ভাব-ভাষা ও শৈলীর শক্তি। আল্লাহতায়ালা বলেন, 
لقد خلقنا الإنسان في احسن تقويم
আমি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তিন ৪)। 

মানুষের মন-মনন, চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানের মর্যাদা প্রদানে কোরআন বলেছে, 
علم الانسان ما لم يعلم
আল্লাহতায়ালা মানুষকে এমন জ্ঞান দান করেছেন যা সে জানত না। (সূরা আলাক ৫)। 

আল্লাহ আরও বলেছেন, 
وعلم الأمم أسماء كلها
আমি আদমকে বস্তুজগতের সব জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি। (সূরা বাকারা ৩৩)।

 সমগ্র সৃষ্টির তুলনায় মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথা কোরআন এভাবে উচ্চারণ করছে, আমি তো মানুষকে মর্যাদা দান করেছি, জলে ও স্থলে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদের উত্তম রিজিক দিয়েছি। সৃষ্টির অনেকের ওপর আমি মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা বনি ইসরাইল ৭০)।

পৃথিবীর ফুল ফল, বৃক্ষ-তরু-লতা, পাখ-পাখালি সব আয়োজনই মানুষের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে সমগ্র সৃষ্টি নিবেদিত। সেই মানুষের হাড়, মাংস বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যথেচ্ছ ব্যবহার, মানব অঙ্গ বেচাকেনা, আদান-প্রদান, কাটাছেঁড়া করা আদৌ কি মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ? নাকি চিরায়ত ধারায় মর্যাদাবান জাতি মানব সভ্যতার প্রতি অভিশাপ? 

আল্লাহ তায়ালার দেওয়া অংগ প্রতঙ্গের মালিক মানুষ নয়,এগুলো সবই আল্লাহ তায়ালার  প্রদত্ত আমানত।
এই জন্য চোখ বা শরীরের যেকোনো অঙ্গ জীবিত অবস্থায় বা মৃত বরনের পর দান করা শরীয়তে জায়েজ  নেই।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা ১৮/৩৩৭ ঢাবিল,কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/১৯৬)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মানুষের মৃত্যুর আগে বা পরে শরীরের কোনো অঙ্গ দান করা জায়েজ নেই।
অতএব কিডনি ডোনেট করাও জায়েজ নেই। 

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টাকার বিনিময়ে হোক বা টাকা ছাড়া হোক,আপনার ছোট বোনের কিডনি হোক বা অন্য কাহারো কিডনি হোক,কোনোক্রমেই অন্যের কিডনি আপনার মায়ের শরীরের প্রতিস্থাপন করা জায়েজ হবেনা।

(০২)
সেটা যদি বৈধ ভিডিও হয়,এবং নাজায়েজ add যদি না দেখেন,সেক্ষেত্রে আপনি উক্ত ভিডিও দেখলে আপনার গুনাহ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...