আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
266 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
edited by
আসসালামু আ'লাইকুম। আমি  আমার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে, কোনো ভাই ও নেই। আমার বাবার অবস্থাও আলহামদুলিল্লাহ ভালো সরকারি চাকরিজীবী (পুলিশ কন্সট্যাবল)।   বর্তমানে আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ৩য় বর্ষে আছি (বাসা থেকে সফর সমান দূরত্ব)। কিন্তু দ্বীনের বুঝ পাওয়ার পর থেকেই জেনারেল পড়াশোনার প্রতি আমার আর আগ্রহ কাজ করে নি আর সহশিক্ষা জানার পর থেকেই আম্মুকে বুঝিয়ে আসছি সহশিক্ষা হারাম। আমি ছাড়তে চাই। তাদের একটাই কথা পর্দা করেও সব করা যায়। তাদের অনেক আশা আমি অনেক ভালো রেজাল্ট করে বের হবো। চাকরি বাকরি করব। তাদের ইনকাম করে খাওয়াব। ২৪ বছর হয়ে যাচ্ছে তবুও উনারা আমার বিয়ে নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনাই করে না। ছেলে খুজা তো দূরের কথা।
আমি মনে করি পরিপূর্ণ পর্দা করেও একটা মেয়ে বাহিরে / কর্মক্ষেত্রে দ্বীন নিয়ে টিকে থাকতে পারবে না, তার পর্দাই হবে না। কারণ শরীর ঢাকলেই তো আর পর্দা হয় না।
আমি IOM এর ২৪১১ ব্যাচে ভর্তি হয়েছি + হিফজ করছি অল্প অল্প করে (যেহেতু সারাদিন একাডেমিক চাপ থাকে হিফজ বেশি করতে পারি না) +  দাওয়াতি কাজের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে দিয়েছি। ক্যাম্পাসে মেয়েদের হলে + নিজের মেসে তালিম করা হয়। মুজাকারা করি মাঝে মাঝে। মেয়েদের দাওয়াত দেই তালিমের। (তাবলীগী) আমি আজীবন দায়ীর কাজ করতে চাই+হিফজ করতে চাই+ আইওএমের আলিম কোর্স টা ভালো ভাবে শেষ করতে চাই। আর উত্তম জীবনসঙ্গী চেয়ে দোয়া করে যাচ্ছি। আমি চাই আখিরাতে আমার বাবা মাকে আমার নেক আমল দ্বারা পুরস্কৃত করতে। দুনিয়ায় হয়ত তাদের কিছু দিতে পারব না।  আমার প্রশ্ন,
১. যদি অনার্স শেষ হওয়ার আগেই কোনো উত্তম জীবন সঙ্গী আল্লাহ মিলিয়ে দেন আমি তখন সহশিক্ষা ছেড়ে দিলে বাবা মা কষ্ট পাবে। কিন্তু তারপরও আমি ছেড়ে দিব। এভাবে তাদের কে কষ্ট দিলে কি আমার গুনাহ হবে?
আপনারা যেরুপ শর্ত দিয়েছেন একটা মেয়ের সহশিক্ষায় পড়াশোনা জায়েজ হওয়ার। একটা মেয়ের পক্ষে সেগুলো মানা সম্ভব নয় পুরোপুরি। আর আমি যেহেতু অবিবাহিত এখনো, নজরের হিফাজত করতে খুব কষ্ট হয়, কোনোনা কোনো ভাবে পুরুষ সহপাঠীদের দিকে দৃষ্টি চলেই যায়, এমনকি পুরুষ শিক্ষকের দিকেও। তাই চাচ্ছিলাম বিয়েটা হয়ে গেলে একেবারেই সহশিক্ষা ছেড়ে দিতে।
২. যেহেতু পড়াশোনায় মন বসে না, ভার্সিটির চাপে ইবাদত + আমল ও খুব কম করা হয়। আমি যদি কোনো রকম ক্লাস করে কোনো রকম এক্সাম দিয়ে শুধু পাশ করে যাই, রেজাল্ট এর কথা না বলি কারণ তাদের আশানুরূপ ভালো রেজাল্ট করতে পারব না। (মিথ্যাও বলি না, বলি পাশ করছি তারা আর কিছু জিজ্ঞেস করে না)। মানে আমি ক্যাম্পাসে যতদিন আছি দাওয়াতি কাজের নিয়তেই থাকব (বিয়ের আগ পর্যন্ত) এতে করে কি বাবা মাকে ঠকানো হবে? আম্মু আব্বু জানেন যে আমি তালিমে যাই।

৩. যেহেতু আব্বুর অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আবাদি জমিজমাও আছে। তাই আমি চাকরি করব না, আল্লাহর কাছে বাবা মায়ের উত্তম রিজিকের জন্য দোয়া করব৷ চাকরি করব না শুনলে রাগ করেন উনারা। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি আমি করব না মানে করব না। আমি মনে করি আল্লাহ তায়ালা তো ভালো ভাবেই চালাচ্ছেন, আমার চাকরি কেন করতে হবে তাহলে, এতে তাদের কষ্ট দেয়ার ফলে তো আমার গুনাহ হবে না তাই না।

সুপরামর্শ দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।
জাঝাকুমুল্লহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানাতাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল২৩)


https://ifatwa.info/83795/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1722

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
বিবাহের পর সহ শিক্ষা ছেড়ে দিলে বাবা মা কষ্ট পেলেও প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

সবচেয়ে ভালো হবে,বিবাহের পর আপনার স্বামীকে দিয়ে আপনার বাবা মাকে বুঝানোর।
ইনশাআল্লাহ, তাতে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

(০২)
আপনি যদি কোনো মিথ্যার আশ্রয় না নেন,তাহলে প্রশ্নের বিবরন মতে এতে বাবা মাকে ঠকানো হবেনা।

(০৩)
না, এতে আপনার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (0 points)

আসসালামু আলাইকুম শায়েখ  আমি  এই লিংকের ১ নং প্রশ্নে ও ২ নং প্রশ্নে যে উপোরক্ত লিংকের কথা বলে ছিলাম https://ifatwa.info/87493/ তা হলো 

https://ifatwa.info/87460/ এই লিংকের ১ নং প্রশ্নের লিংক গুলো। আমি প্রশ্নে লিংক এড্রেস দেই নি এই জন্য কি জবাব চেন্জ হবে?

মানে https://ifatwa.info/87493/ এই লিংকের  ১ ও ২ নং প্রশ্ন উত্তর কি একই থাকবে যে জিজ্ঞেস করতে হবে না আর কাজ টা সঠিক হয়েছে?

এই উত্তর টা দিবেন প্লিজ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...