আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (43 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি একটি ইউনিভার্সিটির ছাত্র এবং আমার কিছু পরামর্শ প্রয়োজন, তাই একটু বিস্তারিত বলছি।
আমি সাধারণত কথা কম বলতে পছন্দ করি। অথবা এটাও ধরা যায়, অন্যদের সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলা হয়ে উঠছে না। যার ফলে অনেক আমল থেকে বঞ্চিত হয়ে যাই। আমার মানুষের ভালোভালো কথা শুনতে ভালো লাগে, আলেমদের মজলিশে বসে নিজের আত্মশুদ্ধি করতে ভালো লাগে কিন্তু যখন ই অন্য মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, অথবা দাওয়াতের বিষয় আসে, তখনই পিছিয়ে পরি।

উদাহরণস্বরূপ, একজন আলেমের সাথে দেখা, আমার সাথের বন্ধুরা ঠিকই উনার সঙ্গে কথার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করার মাধ্যমে একটা ছোটখাটো পরিচয় তৈরী করে ফেলেছে। কিন্তু আমি গুছিয়ে কথা বলতে না পারার কারণে কথা বলারও সুযোগ হয়নি, পরিচয়ও তেমন হয়নি। ঠিক একইভাবে, আমার সাথের ফ্রেন্ডসরা, অনলাইন লেখালেখির মাধ্যমে, অথবা অফলাইনে মানুষকে দ্বীনি বিষয়ে কনভেন্স করার মাধ্যমে দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে দাওয়াত দেওয়ার এই পদ্ধতিগুলো কার্যকর হয়ে উঠে না। আমার আশেপাশে দাওয়াতের কাজ করার অনেক সুযোগ কিন্তু আমি তা কাজে লাগাতে পারছি না। এর পাশাপাশি, আত্মীয়তার সম্পর্কেও এই সমস্যাটা আমার জন্য বাধা হচ্ছে। ভালো করে সবার সঙ্গে কথা বলতে না পারার কারণে, সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্কও হয়ে উঠে না, যার ফলে আত্মীয়দের মাঝে দাওয়াত দেওয়ারও সুযোগ কম।

এর কোনো সমাধান অথবা উন্নতি করার জন্য আপনার পরমর্শ চাই। ধন্যবাদ।

1 Answer

0 votes
by (679,160 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

দাওয়াতের গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلاً مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ إِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ، وَلاَ تَسْتَوِى الْحَسَنَةُ وَلاَ السَّيِّئّةُ ادْفَعْ بِالَّتِى هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِيْ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةً كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيْمٌ.

‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হ’তে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত। সৎকর্ম ও অসৎকর্ম সমান নয়। প্রতুত্তর নম্রভাবে দাও, দেখবে তোমার শত্রুও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে পরিণত হয়েছে’ (হা-মীম সিজদা ৩৩-৩৪)।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِيْنَ آمَنُوا وَتَوَاصَوا بَالصَّبْرِ وَتَوَاصَوا بِالْمَرْحَمَةِ- أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ.

‘অতঃপর (আল্লাহর নৈকট্য তারাও লাভ করতে পারে) যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরে ধৈর্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরে দয়া করার উপদেশ দেয়। তারাই হল ডানপন্থি, তারাই সফল’ (বালাদ ১৭)। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أبيْ مَسْعُوْدٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ.

আবু মাসঊদ আনছারী (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কল্যাণের পথ দেখাবে সে ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ নেকী পাবে, যে ঐ পথে চলবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/১৯৯ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ... مَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئٌ وَمَنْ سَنَّ فِيْ الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَ وِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئٌ.

জারীর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি (দাওয়াতের মাধ্যমে) ইসলামের একটি (মৃত) সুন্নাত চালু করবে সে তার নেকী পাবে এবং ঐ সুন্নাতের প্রতি মানুষ আমল করে যত নেকী পাবে তাদের সমপরিমাণ নেকী তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো নেকী কমকরা হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ আমল চালূ করবে সে জন্য তার পাপ রয়েছে। আর ঐ মন্দ আমল করে যত লোক যে পরিমাণ পাপ অর্জন করবে সবার সমপরিমাণ পাপ তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো পাপ এতটুকুও কম করা হবে না’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২১০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২০০‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ نَضَّرَ اللهُ إِمْرَاً سَمِعَ مِنَّا شَيْئًا فَبَلَّغَهُ كَمَا سَمِعَهُ فَرُبَّ مُبَلِّغٍ أَوْعَى لَهُ مِنْ سَامِعٍ.

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুক যে ব্যক্তি আমার কোন হাদীছ শুনে এবং যেভাবে শুনেছে ঠিক সেভাবে অপরের নিকট পৌঁছে দেয়। কেননা অনেক সময় যার নিকট পৌঁছানো হয়, সে ব্যক্তি শ্রোতা অপেক্ষা অধিক জ্ঞানী হয়’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারেমী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২১৬ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে বুঝা যাচ্ছে যে কম কথা বলায় অভ্যস্ত হওয়ায় আপনি মূলত দ্বীনের দাওয়াতের কাজ হতে বঞ্চিত হচ্ছেন,দায়ীদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করতে না পারার দরুন অনেক কিছু জানতে পারছেননা,অনেক কাজ করতে পারছননা।

সুতরাং আপনার জন্য পরামর্শ থাকবে,দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে গিয়ে কমপক্ষে এক চিল্লা লাগানোর।

ইনশাআল্লাহ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...