আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,324 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
১. ঈমানি মৃত্যুর জন্য কি কি আমল করা যেতে পারে।

২. শহীদী মৃত্যু,, মুজাহিদ হওয়ার জন্য কি আমল করা যেতে পারে।

৩. রাসুলুল্লাহ সাঃ কে স্বপ্ন দেখার জন্য কি কি আমল করতে পারি।

৪.মৃত্যু পর্যন্ত সঠিক ঈমান আকিদা ধরে রাখতে পারবো কি না ভয় হচ্ছে।

৫. এড মুক্ত ভিডিও প্লেয়ার চালাতে হলে ৪৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। নতুবা ভিডিও অন্য প্লেয়ার দিয়ে চালালে অশ্লীল এড আসে। ইউটিউবে একজন সিস্টেম করে দিছে ফলে টাকা ছাড়াই এডমুক্ত প্লেয়ারটি চালানো যা।।  এটি জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(১.৪)

হাদীস শরীফে একথা বলা হয়েছে যে, কিছু মানুষ জীবনভর ইবাদত করে এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। কিন্তু মৃত্যুর নিকটবর্তী সময়ে পাপাচারে লিপ্ত হয়। ফলে তার মৃত্যু হয় অশুভ অবস্থায়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ব্যক্তি জান্নাতীদের আমল করতে থাকে, এমনকি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে শুধু এক হাত দূরত্ব অবশিষ্ট থাকে। এমন সময় তার তাকদীর অগ্রগামী হয় এবং সে জাহান্নামীদের আমলে লিপ্ত হয়ে যায়। অবশেষে তার ঠিকানা হয় জাহান্নাম।-সহীহ বুখারী ১১/৪১৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৬৪৩
,
সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে জনৈক ব্যক্তি এত বীরত্বের সাথে লড়াই করছিল যে, সাহাবায়ে কেরাম তা দেখে বিস্ময় বোধ করলেন এবং বললেন, আজ (যুদ্ধের ময়দানে) সে আমাদের যতটা উপকার করেছে আর কেউ তা করতে পারেনি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তো জাহান্নামী। জনৈক সাহাবী আরজ করলেন, সে যদি জাহান্নামী হয় তাহলে আমাদের মধ্যে আর কে জান্নাতী হবে? একজন বললেন, আমি তার সাথে থাকব এবং দেখব, সে কী করে। তার বর্ণনা- লোকটি লড়াইয়ের একপর্যায়ে মারাত্মকভাবে আহত হল এবং কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য তলোয়ারের অগ্রভাগ বুকে ঠেকিয়ে তার উপর ঝাঁপ দিল এবং আত্মহত্যা করল। এ দৃশ্য দেখে ঐ ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ফিরে এলেন এবং বলতে লাগলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহর রাসূল জিজ্ঞাসা করলেন, কী হয়েছে? তিনি তখন পূর্ণ ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করলেন।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই মানুষ এমন আমল করে, যা মানুষের দৃষ্টিতে জান্নাতীদের আমল, কিন্তু (আল্লাহর কাছে) সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত। আবার কেউ এমন আমল করে, আপাত দৃষ্টিতে যা জাহান্নামীদের আমল, কিন্তু (আল্লাহর কাছে) সে জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত।
অন্য রেওয়ায়েতে আরো আছে, ‘সর্বশেষ আমলই প্রকৃত আমল।’-সহীহ বুখারী ১১/৪৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১২
,
★সুতরাং সর্বদায় নেক আমল চালিয়ে যেতে হবে,এবং আল্লাহর কাছে ভালো মৃত্যুর দোয়া করতে হবে।
,

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালো ও সুন্দর মৃত্যুর জন্য কখনো এ দোয়া করতে ভুলতেন না। আর তাহলো-

اَللَّهُمَّ أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا فِيْ الْأُمُورِ كُلِّهَا، وَأجِرْنَا مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الآخِرَةِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আহসিন আক্বিবাতানা ফিল উমুরি কুল্লিহা ওয়া আঝিরনা মিন খিযয়িদ দুনইয়া ওয়া আজাবিল আখিরাহ।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের সব কাজের শেষ ফল সুন্দর করুন এবং আমাদেরকে দুনিয়ার লাঞ্ছনা ও কবরের আজাব থেকে মুক্ত রাখুন।’ (মুসনাদে আহমদ)
,
উলামায়ে কেরামগন কিছু আমল বলেছেনঃ
  
১. কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা। কেউ যদি পূর্ণাঙ্গভাবে কুরআন-সুন্নাহ আঁকড়ে ধরতে পারে তবে সে ঈমানি জীবন-যাপন করতে পারবে এবং ঈমানি মৃত্যু লাভ করতে পারবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না, যখন তোমরা দুটো জিনিসকে আঁকড়ে ধরবে। আর তার একটি হলো আল্লাহর কিতাব আর অন্যটি হলো তার রাসুলের সুন্নাহ।

২. নেক আমলের ওপর নিয়োজিত থাকা। কোনো ব্যক্তি দুনিয়াতে যে কাজে নিয়োজিত থাকবে, সে ওই কাজের ওপরই মৃত্যুবরণ করবে। যদি কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার চেষ্টা করে তবে তার জীবনের শেষ পরিণতিও কুরআন-সুন্নাহর আলোকে হবে। সুতরাং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেক আমল, ভালো কথা ও সুন্দর আচরণে নিজেকে নিয়োজিত রাখা জরুরি। এমনটি করতে পারলে জীবনের শেষ কাজটিও নেক কথা ও কাজেই শেষ হবে।

৩. ভালো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। ভালো কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য ভালো মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। যারা দীন, ঈমান ও কল্যাণের কথা ছাড়া অন্যায়মূলক কোনো কথা বলে না। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন- হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (আল্লাহকে ভয় করার উপায় হিসেবে) সত্যবাদীদের সঙ্গে চলাফেরা (সুসম্পর্ক) রাখ।

৪. ঈমানকে নবায়ন করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের ঈমানকে নবায়ন কর। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর রাসূল! ঈমান কীভাবে নবায়ন করব? তখন তিনি বললেন, বেশি বেশি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়তে থাক।

৫. বেশি বেশি মেসওয়াক করা। রাসূল সা. বলেছেন, আমার উম্মাতের উপর যদি কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদের প্রত্যেক সালাতের সময় মেসওয়াক করার নির্দেশ করতাম। (বুখারি: ৮৮৭, মুসলিম: ৫৮৯)
আল্লামা ইবনে হাজার রহ. মোনাব্বেহাত কিতাবে মেসওয়াকের বিশটি উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে সর্ব নিম্ন উপাকারিতা হলো ময়লা দূর করা, আর সর্বোচ্চ উপকারিতা হলো মৃত্যুর সময় কালেমা স্মরণ হওয়া।

৬. একান্তে দোয়া করা। শেষ জীবনে যেন ঈমানি মৃত্যু হয়, আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে যেন মৃত্যু লাভ হয় সে জন্য বেশ কিছু দোয়া আছে, যেগুলো একান্তে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। দোয়া করার সময় এর অর্থ অনুধাবন করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ পরিণতি ভালো হতে অনেকগুলো দোয়া শিখিয়েছেন। কুরআনেও অনেক দোয়া এসেছে। 
আর তাহলো- 
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমার জানামতে আপনার প্রতি শিরক হয় এমন ভয়াবহ অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার আশ্রয় চাই। 
আর আমার অজান্তে ঘটে যাওয়া শিরকে থেকেও ক্ষমা প্রার্থনা করি।

اَللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ 
 অর্থ: হে (মানুষের) অন্তর পরিবর্তনকারী আল্লাহ! আমাদের অন্তরকে তোমার আনুগত্যের দিকে পরিবর্তন কর।’ (মুসলিম, মিশকাত)
,
يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّت قَلْبِىْ عَلَى دِيْنِكَ 

অর্থ : হে (মানুষের) অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দীনের উপর দৃঢ় রাখ। (তিরমিজি, মিশকাত)

رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ 

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের ধৈর্যদান করুন এবং মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান করুন।

رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ

অর্থ: হে আমাদের প্রভু! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে ধাবিত করো না; এবং তোমার কাছ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর; নিশ্চয় তুমিই সবকিছুর দাতা।

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ 


অর্থ: আমাদের সহজ সরল পথের হেদায়েত দিন। যে পথে চলা লোকদের ওপর আপনি নেয়ামত দান করেছেন। অভিশপ্ত ও গোমরাহির পথ থেকে বিরত রাখেন।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفِتَنِ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ 

অর্থ: হে আল্লাহ! যে ফেতনাগুলো দেখা যায় আর যেগুলো দেখা যায় না, সব ধরনের ফেতনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।
,
(০২)

শহীদি মৃত্যু দুই প্রকার। এক প্রকার হলো প্রকৃত শহীদ। তা হলো, দ্বিন কায়েমের জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন দেওয়া। এ ধরনের শহীদের মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না; বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’ (সুরা আল-বাকারা : ১৫৪)
,
আরেক প্রকারের শহীদ হলো, হুকুমি। অর্থাৎ তারা শহীদের সাওয়াব প্রাপ্ত হবেন। 

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শহীদ পাঁচ প্রকার। যেমন—১. প্লেগ বা মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী, ২. পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী, ৩. পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী, ৪. কুপে পড়ে মৃত্যুবরণকারী ও ৫. আল্লাহর রাস্তায় শহীদ (বুখারি ও মুসলিম)

,
সায়িদ ইবনে যায়েদ রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন, যে তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়, সে শহীদ। যে তার পরিবার-পরিজনদের রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়, সে শহীদ। যে দ্বীন রক্ষায় নিহত হয়, সে শহীদ। যে তার জীবন রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৭২; তিরমিজি, হাদিস : ১৪১৮)

মহামারী জাতীয় কোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা। আনাস ইবনে মালেক রা: বলেন, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তাউন’ হচ্ছে সব মুসলিমের জন্য শাহাদত। (বুখারি ১০/১৬৫-১৬৭; মুসনাদে আহমদ ৩/১৫০, ২২০)

সন্তান প্রসবের সময় ও নেফাস অবস্থায় নারী মৃত্যুবরণ করা। উবাদা ইবনে সামিত রা: থেকে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন-সন্তান প্রসব করতে গিয়ে নারীর মৃত্যু হলে তা শাহাদত। তার সন্তান তাকে জান্নাতের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমদ ৪/২০১, ৫/৩২৩)

পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে কিংবা ভূমিধসে মৃত্যুবরণ করা। আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, শহীদ পাঁচ শ্রেণীর : প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণকারী, পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী, পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী, ভূমিধসে মৃত্যুবরণকারী এবং আল্লাহর পথের শহীদ। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৬৩; মুসলিম, হাদিস :১৯১৫)

হজরত জাবির ইবনে ওতাইক বলেন, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও আরো সাত শ্রেণীর শহীদ আছেন। যথা প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, জাতুল জাম্বে (ফুসফুসের একটি বিশেষ ব্যাধি) মৃত্যুবরণকারী শহীদ, পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী শহীদ, আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, ধসের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী নারী শহীদ। (মুসনাদে আহমদ ৫/৪৪৬; আবু দাউদ, হাদিস : ৩১১১; নাসায়ি ৪/১৩-১৪)
,
★শহীদি মৃত্যুর জন্য কিছু আমল করা যেতে পারেঃ

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عن معقل ابن يسار عن النبي صلى اللهعليه وسلم قال : ” من قال حين يصبح ثلاث مرات : أعوذ بالله السميعالعليم من الشيطان الرجيم . وقرأ ثلاث آيات من آخر سورة الحشر وكلالله به سبعين ألف ملك يصلون عليه حتىمسى ، وإن مات في ذلك اليوم مات شهيدا ، ومن قالها حين يمسى كانبتلك المنزلة “

হযরত মাকাল বিন ইয়াসার রাঃ রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিন বার পড়বে “আউজুবিল্লাহিস সামীয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম”। তারপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত [ হুয়াল্লাহুল্লাজী লা-ইলাহা শেষ পর্যন্ত] তিলাওয়াত করবে। তাহলে আল্লাহ তাআলা উক্ত ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা নিযুক্ত করেন। যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাতের দ্আু করতে থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে। [তথা মাগরিব থেকে সকাল পর্যন্তের জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা গুনাহ মাফীর জন্য দুআ করে, আর সে সময়ে মারা গেলে শহীদের সওয়াব পাবে]।
সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৯০।
কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৩৫৯৭।
আত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং-৩৭৯
সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৩৪২৫।
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-২৫০২।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২০৩০৬।
মুসনাদুশ সাহাবাহ, হাদীস নং-২৯৭৯৫।
মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-২১৫৭।
এ হাদীসটি হাসান পর্যায়ের হাদীস।
,
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ شَهَادَةً فِي سَبِيلِكَ وَوَفَاةً بِبَلَدِ رَسُولِكَ 

যাইদ ইবন আসলাম (রহঃ) বর্ণনা করেন, উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) বলতেন, হে আল্লাহ! তোমার রাহে শাহাদত আর তোমার রাসূলের এই নগরে (মদীনায়) আমার মৃত্যু তোমার কাছে আমি প্রার্থনা করি।
(মুয়াত্তা মালিক ৯৮৯)
,
সুতরাং এই দোয়া পড়তে হবে। 
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ شَهَادَةً فِي سَبِيلِكَ
,
قال صلى الله عليه وسلم ((من سأل اللَّه الشهادة بصدق، بلّغه اللَّه منازل الشهداء وإن مات على فراشه)).
وفي لفظ آخر: ((من طلب الشهادة صادقاً أعطيها ولو لم تصبه))
مسلم،  كتاب الإمارة، باب استحباب طلب الشهادة، برقم 1908.
সারমর্মঃ সত্য দীলে আল্লাহর কাছে যে শাহাদত চাইবে,আল্লাহ তায়ালা তাকে শহীদদের মর্যাদা দান করবেন,যদিও সে তার বিছানায় মারা যাক। 
,
وعن حفصه رضي اللَّه عنها، أن عمر قال: ((اللَّهم ارزقني شهادة في سبيلك، واجعل موتي في بلد رسولك)) فقالت حفصه: ((أنى يكون هذا؟ قال: يأتيني به اللَّه إن شاء))
انظر صحيح البخاري،  أبواب فضائل أبواب المدينة، باب كراهية النبي r أن تُعرى المدينة، برقم 1890 .

হযরত ওমর রাঃ এই দোয়া পড়তেনঃ 
اللَّهم ارزقني شهادة في سبيلك، واجعل موتي في بلد رسولك)
,
(০৩)
বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা করা যাবেনা। 


أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي )
হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। 
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

রাসুল (সা.)-কে স্বপ্নে দেখতে হলে তাঁর প্রতি অন্তরে অধিক ভালোবাসা থাকতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর সুন্নতের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ২/২৩৪)
,
প্রিয় নবীকে স্বপ্নে দেখার আমল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে  …
সত্যিকারের নবী প্রেমে মাতোয়ারা হওয়া, তার সুন্নতসমূহ পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে উদ্গ্রীব হওয়া। তাহলেই কেবল নবী করিম (সা.) কে স্বপ্নে দেখা সম্ভব।
কোনো কোনো আলেম বলেছেন, নবী করিম (সা.) কে স্বপ্নে দেখতে হলে, বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। অজুসহকারে পবিত্র হয়ে বিছানায় শয়ন করা। শেষ রাতে উঠে তওবা করা।
তাহাজ্জুদ পড়তে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...