بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হিংসা বা অহংকার মানুষের নিকৃষ্টতম চরিত্রের নাম। সুতরাং এটি
কোনো ক্ষেত্রেই জায়েয নেই। তবে হাদিস শরিফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন,
لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ
آتَاهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ
النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ
وَآنَاءَ النَّهَارِ
দু’টি ব্যাপার ছাড়া হিংসা পোষণ করা যায় না। একটি হল, এমন ব্যক্তি
যাকে মহান আল্লাহ কুরআনের ইলম দান করেছেন। সে তদনুযায়ী রাত-দিন আমল করে। আরেক ব্যক্তি
যাকে আল্লাহ তা’আলা অর্থ-সম্পদ দান করেছেন। সে রাত-দিন তা (আল্লাহর পথে) খরচ করে।
(এ দু’ ব্যক্তির সাথে হিংসা পোষণ করা যায়। (বুখারী ৩৭৩৭ মুসলিম ৮১৫)
মুহাদ্দিসগণ হাদীসটির
ব্যাখ্যা নিম্নরূপে করেছেন,
الْحَسَدُ قِسْمَانِ : حَقِيقِيٌّ وَمَجَازِيٌّ
، فَالْحَقِيقِيُّ تَمَنِّي زَوَالِ النِّعْمَةِ عَنْ صَاحِبِهَا ، وَهَذَا
حَرَامٌ بِإِجْمَاعِ الْأُمَّةِ مَعَ النُّصُوصِ الصَّحِيحَةِ ، وَأَمَّا
الْمَجَازِيُّ فَهُوَ الْغِبْطَةُ وَهُوَ أَنْ يَتَمَنَّى مِثْلَ النِّعْمَةِ
الَّتِي عَلَى غَيْرِهِ مِنْ غَيْرِ زَوَالِهَا عَنْ صَاحِبِهَا ، فَإِنْ كَانَتْ
مِنْ أُمُورِ الدُّنْيَا كَانَتْ مُبَاحَةً ، وَإِنْ كَانَتْ طَاعَةً فَهِيَ
مُسْتَحَبَّةٌ ، وَالْمُرَادُ بِالْحَسَدِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ مَعْنَاهُ
الْمَجَازِيُّ
হিংসা দু’ প্রকার। বাস্তব এবং রূপক। বাস্তব হিংসা হল- কোন ব্যক্তিকে
মহান আল্লাহ যে নেয়ামত দান করেছেন তার অবসান কামনা করা। এটি সহিহ বর্ণনার আলোকে উম্মতের
ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে হারাম। আর রূপক অর্থে হিংসা হল-ঈর্ষা। অর্থাৎ, অবসান কামনা
না করে নিজের জন্যেও অনুরূপ নেয়ামত কামনা করা। যদি এটি জাগতিক বিষয়ে হয় তাহলে জায়েয
এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে হলে মুস্তাহাব। আর এই হাদিসে হিংসা দ্বারা রূপক অর্থই উদ্দেশ্য
নেয়া হয়েছে। (মুসলিম শারহে নববী ১/২৭২)
হাফেজ ইবন হাজর আসকালানি রহ. বলেন,
وأما الحسد المذكور في الحديث فهو الغبطة،
وأطلق الحسد عليها مجازا، وهي أن يتمنى أن يكون له مثل ما لغيره من غير أن يزول
عنه
হাদিসেল্লেখিত হিংসা দ্বারা উদ্দেশ্য, ঈর্ষা। একে
হিংসা শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে রূপকভাবে। আর ঈর্ষা বলা হয়, অবসান কামনা
না করে নিজের জন্যেও অনুরূপ নেয়ামত কামনা করা। (ফাতহুল বারী ১/৭৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যদি আপনার বান্ধবী
থেকে আরো অনুপ্রাণিত হয়ে তার চেয়েও অধিক পড়াশুনা করে তার চেয়ে অধিক অগ্রসর হতে চান
তাহলে তা প্রশংসনীয় ও জায়েয। তবে তার কোন ক্ষতি করা বা অনিষ্ট কামনা করা যাবে না। বরং আপনি তার চেয়েও অধিক মেহনত ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন।