আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
415 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
একজন নারী পুরুষ ২ বছর আগে হারাম সম্পর্ককে লিপ্ত ছিল, তারপর সম্পর্ক ছেদ হয় পারিবারিক কারণে। তখন দুইজন ই জাহেল ছিল। ১ বছর আগে নারীর মধ্যে আল্লাহর রহমতে পরিবর্তন হয়। সে অতীতের সবকিছুর জন্য তওবা করে। এখন নারী যেই হক নষ্ট করছে তার স্বামীর সেইটা কি হবে?? সেই পুরুষের মধ্যেও পরিবর্তন এক মাস আগে, এখন ওই পুরুষ ও তার ভবিষ্যৎ স্ত্রী এর হক নষ্ট করেছে এই বিষয়ে ইসলাম কি বলেে?? শুধু তওবা কি যথেষ্ট?
এই নারী পুরুষ দুইজন ই তাদের পরিবর্তনের পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে কি পরিবারের সম্মতিতে??
আর নারী যেহেতু পুরুষের থেকে ১ বছরের বয়সে বড়, তাই পুরুষের মাথায় চিন্তা কাজ করতেছে যে নারী রা তো সবকিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে দ্রুত, যেহেতু বয়সে বড় তাই আরো দ্রুত আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে, এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা এবং উত্তর চাচ্ছি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে??

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


যেনার শাস্তি সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

الزانية والزاني فاجلدوا كل واحد منهما مائة جلدة

ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। ’ –সূরা নূর: ২

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে একশ’ বেত্রাঘাত ও রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড)। ’ –সহিহ মুসলিম

আরো জানুনঃ 
,
উক্ত শাস্তি কার্যকর করবে সরকার।
সুতরাং দেশে ইসলামী শাসন না থাকার কারনে উক্ত আইন কেহ নিজে কার্যকর করবেনা।
এটার দায়ীত্ব সরকারের।
,
উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে যেনার উক্ত শাস্তি তার দুনিয়াবি শাস্তি।
তাহা কার্যকর করা হলেও আখেরাতের শাস্তি থেকে হেফাজতের জন্য অবশ্যই তওবা করতে হবে।  
,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উভয়ের খালেছ দিলে তওবা করতে হবে। 
তওবার মাধ্যমে গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَأَذَانٌ مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِّنَ الْمُشْرِكِينَ ۙ وَرَسُولُهُ ۚ فَإِن تُبْتُمْ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ وَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ غَيْرُ مُعْجِزِي اللَّهِ ۗ وَبَشِّرِ الَّذِينَ كَفَرُوا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ [٩:٣] 

আর মহান হজ্বের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে লোকদের প্রতি ঘোষণা করে দেয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ মুশরেকদের থেকে দায়িত্ব মুক্ত এবং তাঁর রসূলও। অবশ্য যদি তোমরা তওবা কর, তবে তা, তোমাদের জন্যেও কল্যাণকর,আর যদি মুখ ফেরাও,তবে জেনে রেখো, আল্লাহকে তোমরা পরাভূত করতে পারবে না। আর কাফেরদেরকে মর্মান্তিক শাস্তির সুসংবাদ দাও। [সূরা তওবা-৩] 

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২] 

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 
,
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেনার জন্য অন্তর দিয়ে খালেছ দিলে তওবা করলে আল্লাহ কবুল করতে হবে।
,

والتوبة من شروطها : الإقلاع عن الذنب ، والندم على ما تقدم منه ، والعزم على أن لا يعود إليه ، وإن كان حق من حقوق الآدميين : فيطلب منهم المسامحة .

তাওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
আর ইস্তেগফার হল শুধু মৌখিকভাবে আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
,
মানুষের হক থাকলে সেটি আদায় বা মিটিয়ে নিতে হবে। 

আরো জানুনঃ 

তওবার পদ্ধতি সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছেলে মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।
শরীয়তের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
এখানে নারী যেহেতু এক বছর বড়,সেক্ষেত্রে আশা করা যায় তেমন সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
আল্লাহর উপর ভরসা করে তাদের বিবাহ করাই উচিত।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...