আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
628 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
শুনেছি,একটানা ৪০দিন তাহাজ্জুদ পড়লে দুয়া কবুল হয়,,১)এই হাদিসটা কি সহিহ্!? নাকি নির্দিষ্ট কোনো দিন ঠিক করে দেননি আল্লাহ তায়ালা, কবুল না হওয়া পর্যন্ত পরতেই থাকতে হবে!?  ভয়ে হাদিসটি বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনোটাই করতে পারছিনা, যদি বিদাত হয়ে যায়! তাই সঠিক টা জানতে চাই,,,আর যদি এই হাদিসটি সহিহ হয়,তবে,,,২)হায়েযের জন্য যদি মাঝে ৬/৭ দিন বাধ্য হয়ে মিস হয়ে যায় তবেকি আমি এই ফজিলত থেকে বঞ্চিত হবো!? ।

৩) হুজুর যদি কেও ফজরের ১৫ মিনিট আগে তাহাজ্জুদ পড়ে, তবেকি তার সেই তাহাজ্জুদ টা কম ফজিলত পূর্ণ, বা কম সওয়াবের হবে!? পড়াশোনার জন্য রাতে দেরি করে ঘুমাতে যেতেহয়,যারফলে তাহাজ্জুদে উঠে সালাত শেষে আবারও খুব ঘুম পায়,এভাবে অনেকসময় দেখাযায় ফজরের সময় জাগতেই পারিনি! এখন কি করবো হুজুর,,, ফজরের ১৫ মিনিট আগে পড়লেও আল্লাহ কি সমপরিমাণ খুশি হবেন না!?

আমার আগের একটা প্রশ্নের এবং এর উত্তরের কিছু অংশ এখানে দিলাম,,,

দু'আ কবুল হওয়ার জন্য দু'আ কারীর ইতিবাচক মনোভাব এবং কবুল হওয়ার পূর্ণ বিশ্বাস তার অন্তরে থাকতে হবে।যেমন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
وعنه، قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - " «ادعوا الله وأنتم موقنون بالإجابة واعلموا أن الله لا يستجيب دعاء من قلب غافل لاه» " (رواه الترمذي، وقال: هذا حديث غريب) .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা আল্লাহকে এমন অবস্থায় ডাকো যে,দু'আ কবুলের সম্পর্কে তোমাদের অন্তরে পূর্ণ ইয়াকিন-বিশ্বাস রয়েছে। জেনে রাখো,আল্লাহ তা'আলা গাফিল এবং খেল-তামাশকারী বান্দার পক্ষ্য থেকে কখনো দু'আ কবুল করেন না। মিশকাতুল মাসাবিহ-২২৪১

১)তাহলে আমি যদি এখন পূর্ণ বিশ্বাস  রাখি যে আল্লাহ তো আমাকে এটা অবস্যই দিবেন যদি আমার জন্য কল্যানকর হয় ,আমি মাঝে মাঝে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য নিজে নিজেই ভেবে অনেক বেশি আনন্দ পাই যে আমি আল্লাহর কাছে ইটা চেয়েছি তিনি অবস্যই আমাকেই তা দিবেন ,এবং এটা পাবার আনন্দটা আমি আগেই পাই এটা কি জায়েজ ?
আবার অনেকসময় দৃঢ় বিশ্বাসের ফলে জিনিষটা না পেতেই না চাইতেও ভেবে ফেলি যে আল্লাহ আমাকে এটা দিয়ে দিলে এরপর আমি এটা নিয়ে এই করবো সেই করবো ,,,অমনি আবার মনেহয় যে আমার জন্য কল্যানকর না হলে তো আমাকে তিনি তা নাও দিতে পারেন তাহলে আগে থেকেই এতো আশা করে বোকামি করছি ,,,,,,আমার এরূপ আগে থেকে আনন্দ পাবার জন্য এবং না পাওয়া বস্তুটাকে নিয়ে অগ্রিম স্বপ্ন দেখার ফলে কি আল্লাহ নারাজ হচ্ছেন ? এটার জন্য কি শাস্তি পেতে হবে আমাকে !?

উত্তর ছিলো যে এটা গোনাহ হবেনা,না জায়েয হবেনা,,

৪)এখন আমি কোনো একজন নির্দিষ্ট দ্বীনদার ব্যাক্তিকে "আল্লাহ গো উনি যদি আমার দুনিয়া আখিরাতের জন্য উত্তম হন,তবে তুমি তাকেই আমার জীবন সঙ্গী করে দিও,আর যদি আমার জন্য উত্তম না হয়,তবে তার সমস্ত কিছু ভুলিয়ে দাও তুমি আমায়," এমনটা দোয়া করি এবং দৃঢ় বিশ্বাস করি,যে আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে দিবেন,যদি তিনি আমার জন্য উত্তম হন,,,তো আমি না চাইতেও অনেকসময় কল্পনা করে ফেলি যে আমরা কিভাবে একসাথে সবসময় আল্লাহর ইবাদত করবো,কিভাবে হাদিসের কথা শুনবো তারকাছে,কিভাবে দুজনে গল্প করবো,.....কখনোই কোনো খারাপ কল্পনা করিনি/করিনা,,,তো এটা কি নাজায়েজ হয়ে যাচ্ছে!??
৫)""আল্লাহ গো,,উনি যদি আমার দুনিয়া আখিরাতের জন্য কল্যানকর হন,তবে তুমি তাকেই আমার জীবনসঙ্গী করে দিও,তুমি তো অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পারো গো আল্লাহ্,আল্লাহ গো,তুমি তার মধ্যেই আমার জন্য সমস্ত কল্যান দান করে তার সাথে আমায় মিলিয়ে দিও প্লিজ!"" এভাবে দোয়া করা কি ঠিক হচ্ছে!?
যেহেতু তিনি কল্যানকর না হলেও,তারমধ্যে আমারজন্য কল্যান দান করে, তারসাথে আমাকে মিল করে দিতে বলছি,এটাতো একরকম তাকে নির্দিষ্ট করে চাওয়া হয়ে যাচ্ছে।

৬)আমি যেভাবে একজনকে চাইছি,,অনুরুপভাবে কোনো তৃতীয় ব্যাক্তি যদি একইভাবে আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে,,(এভাবেই আমাকে চেয়ে)তবে আল্লাহ কারটা শুনবেন!?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের সময়ে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটতম প্রথম আসমানে এসে বান্দাদের ফরিয়াদ শোনেন।

 পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবিব (সা.)-কে উদ্দেশ করে বলেন: ‘এবং রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ কায়েম করবে, ইহা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়, তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে (মাকামে মাহমুদে)।’ (সুরা-১৭ বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৭৯)। 

‘হে বস্ত্রাবৃত! রাত্রিতে দণ্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে; অর্ধরাত অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশি এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্তভাবে ও স্পষ্টভাবে। আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। নিশ্চয় ইবাদতের জন্য রাতে ওঠা প্রবৃত্তি দলনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল। নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। আপনি আপনার পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন এবং একাগ্রচিত্তে তাতে মগ্ন হোন।’ (সুরা-৭৩ মুয্যাম্মিল, আয়াত: ১-৮)।

 ‘হে চাদরাবৃত! উঠুন, সতর্ক করুন, আপন পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষণা করুন, আপন পোশাক পবিত্র করুন এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন। অধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দেবেন না এবং আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে সবর করুন।’ (সুরা-৭৪ মুদ্দাচ্ছির, আয়াত: ১-৭)।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي عَبْدِ اللهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ، فَيَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের মহা মহীয়ান রবব প্রতি রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করে বলেন, আছে কেউ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? আছে কেউ আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করবো? আছে কি কেউ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।
,
(বুখারী (অধ্যায় : তাহাজ্জুদ, অনুঃ রাতের শেষ ভাগে ও সলাতে দু‘আ করা, হাঃ ১১৪৫), মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত, অনুঃ রাতের শেষাংশে দু‘আ যিকিরে উৎসাহ দান) 
,
এটি দোয়া কবুলের সর্বশ্রেষ্ঠ
সময়। প্রতি রাতে এ সময় আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দার ফরিয়াদ শোনেন।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করলে সেই দোয়া অনেক্ষেত্রেই কবুল হয়,আল্লাহ তায়ালা তার ফরিয়াদ শোনেন।
এটি কুরআন হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত। 

তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ফজিলত কুরআন হাদীসের কোথাও পাইনি।

(০২)
এ ধরনের কোনো ফজিলত ফজিলত কুরআন হাদীসের কোথাও পাইনি।
সুতরাং বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

(০৩)
এটা জায়েজ।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে জায়েজ।

(০৫)
এভাবে দোয়া করা ঠিক হচ্ছেনা।

(০৬)
বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 217 views
0 votes
1 answer 150 views
...