আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
80 views
in সালাত(Prayer) by (36 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
একটানা ৪০দিন তাহাজ্জুদ পড়লে দুয়া কবুল হয় এটা শুনেছি। এখন,একদিন যদি তাহাজ্জুদ মিস যায়(উঠে ঘুম থেকে জাগার দুয়া,নবিজি(স) তাহাজ্জুদে যে দুয়া পড়তেন সুরা ইমরান এর ১০ আয়াত তাও পড়া হয়েছে) কিন্তু এরপর ঘুমিয়ে পড়া হয়েছে। আর হায়েযের সময়টাও তো তাহাজ্জুদ পড়া যায়নি,তাহাজ্জুদে উঠে দুয়া করা হয়েছে যদিও।
এই যে একদিন তাহাজ্জুদ সলাত মিস,এতে কি চল্লিশ দিনের শর্ত পূরণ না হয়ে ভেঙে গেছে এবং দুয়া কবুল হবে না-এরকম বিষয়টা?একদিন ছেদ পড়লে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/85969/?show=85969#q85969  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

পবিত্র কুরআনে মুত্তাকীদের জন্য জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে,

اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍ.

সেদিন নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবণবিশিষ্ট জান্নাতে। -সূরা যারিয়াত (৫১) : ১৫

সাথে তাদের কিছু গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণও এসেছে। তন্মধ্যে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল-

وَ بِالْاَسْحَارِ هُمْ یَسْتَغْفِرُوْنَ

রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত। -সূরা যারিয়াত (৫১): ১৮

ইবাদুর রহমান-রহমানের বান্দাদের কতিপয় বৈশিষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে কুরআনে কারীমের সূরা ফুরকানে। সেখানেও উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট্যটি বিবৃত হয়েছে-

وَ الَّذِیْنَ یَبِیْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّ قِیَامًا.

আর তাঁরা রাত অতিবাহিত করে তাঁদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজদারত হয়ে এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। -সূরা ফুরকান (২৫) : ৬৪

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

يَنْزِلُ رَبّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلّ لَيْلَةٍ إِلَى السّمَاءِ الدّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي، فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ.

আমাদের রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছো, দুআ করবে আমি তার দুআ কবুল করব। কে আছো, আমার কাছে (তার প্রয়োজন) চাইবে আমি তাকে দান করব। কে আছো, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৫৮

এই নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করা যায়। যে ইবাদতকে শয়তান সবচেয়ে ঘৃণা করে, তা হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। শয়তানের কাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

রেগুলার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে করনীয়ঃ-

ঘুমানোর আগে বেশ হিম্মতের সহিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ত নিয়ে ঘুমাতে হবে। কোনো কারণে তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠতে না পারলে খালেস নিয়ত থাকার দরুন আপনি তাহাজ্জুদ আদায়ের ছওয়াব পাবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- হযরত আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ أتى فِراشَه وَهُوَ يَنْوي أن يّقُومَ يُصلِّي مِنَ اللّيلِ فغلبتْهُ عَيْناه حَتّى أصْبحَ، كُتبَ لَه مَا نَوى، وَكانَ نومُهُ صدَقةً عَلَيْهِ مِنْ رّبِّه - عز وجل

যে ব্যক্তি রাতে নামায পড়ার নিয়ত করে বিছানায় গেল, কিন্তু ঘুম তাকে পরাস্ত করল, সে উঠতে পারল না, সকাল হয়ে গেল, তাহলে নিয়তের কারণে তার আমলনামায় আমলের সওয়াব লেখা হবে। আর এই ঘুম রবের পক্ষ থেকে তার জন্য সদাকা বলে বিবেচিত হবে।  (সুনানে নাসাঈ, হাদীস ১৭৮৭)

ইশার পর  দ্রুত ঘুমাতে হবে। দ্রুত ঘুমালে কিয়ামুল লাইল ও ফজরের শক্তি সঞ্চয় হয়। এর জন্য দুপুরে কিছুক্ষন ঘুমাতেও পারেন।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমের আদবগুলো রক্ষা করা প্রয়োজন। যেমন অজুসহ ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুমের দোয়া পাঠ করা।

রাসুলুল্লাহ (সা.)এর একটি সুন্নত হলো রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দু হাতের তালুতে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পাঠ করা। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এসব সুন্নত পালন করা ভালো। এ ছাড়া আয়াতুল কুরসি এবং ঘুমের দোয়াগুলো পড়ে ঘুমকেও ইবাদতে পূর্ণ করা যায়।

তাহাজ্জুদের নামাজকে সহজভাবে নিতে হবে। ফজরের ওয়াক্তের ১৫/২০ মিনিট আগে উঠে এই অভ্যাস রপ্ত করা যায়। এরপরে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যায়। নামাজের স্থায়ী ক্যালেন্ডার দেখে ফজরের ওয়াক্ত আসার ১৫ মিনিট পূর্বে এলার্ম দিতে পারেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

জ্বী না, হায়েযের সময় উক্ত ফজিলত প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে উক্ত নিষিদ্ধ সময় ব্যতি রেখে স্বাভাবিক সময়ে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত তাহাজ্জুদের সালাত মিস দেয় তাহলে সে উক্ত ফজিলত থেকে মাহরুম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 137 views
...