আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (15 points)
আমার স্বামী একটি হাসপাতাল এর কাস্টমার কেয়ার পোস্ট এ আছে।তার কাজ ই হচ্ছে রোগী আসলে তাদের সমস্যা অনুযায়ী কোন ডাক্তার ভালো তা সাজেস্ট করা।অনেক সময় অনেক রোগীরা অসচ্ছল থাকে এবং কম টাকায় কোন ডাক্তার অপারেশন করে তা জানতে চায়,,আমার স্বামী যে ডাক্তার কম টাকায় অপারেশন করে উনার নাম ই বাধ্য হয়ে বারবার বলা লাগে।এতে করে ওই ডাক্তার খুশী হয়ে আমার স্বামীকে কিছু টাকা হাদিয়া দেন,,হাদিয়া না নিলেও মাঝেমধ্যে ডিনার করান,,একেবারে জোড়াজুড়ি করেই।


১.আমার প্রশ্ন হলো এই হাদিয়ার টাকা নেয়া জায়েজ কি না?(উনি সবসময় নিতেও চান না,,১০টা রোগী দিলে হয়তো ৩-৪জনের সময় জোর করে হাদিয়া দেয়)


২.বিভিন্ন ডাক্তারদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার ফলে তারা বিভিন্ন কলম,প্রসাধনী এসব মাঝেমধ্যে হাদিয়া দেন।এগুলো ব্যবহার করা কি জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/62112/ নং ফাতওয়াতে আছে যে,

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো। নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা, যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

 

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো। (সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)

 

নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-

عن عامر، قال: سمعت النعمان بن بشير، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "الحلال بين، والحرام بين، وبينهما مشبهات لا يعلمها كثير من الناس، فمن اتقى المشبهات استبرأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات: كراع يرعى حول الحمى، يوشك أن يواقعه، ألا وإن لكل ملك حمى، ألا إن حمى الله في أرضه محارمه، ألا وإن في الجسد مضغة: إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، ألا وهي القلب "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, (কোনো জিনিষ) হালাল (হওয়া) পরিস্কার।(এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যাঁ এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা। যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকল, সে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হল, সে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো। এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যে, পশু ক্ষেতে নেমে যাবে।

 

জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,তার হারাম বিধি-বিধান।জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে।আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়,তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,ক্বলব বা অন্তর। (সহীহ বুখারী-৫২)

 

ক. আমাদের যতটুকু জানা আছে যে, বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি থেকে ডাক্তারদেরকে কলম, প্যাড, টাওয়েল, গ্লাস, রুহ আফজা, ফ্রিজ, গাড়ী ইত্যাদি এই জন্য উপহার দেওয়া হয় যে, যেনো ডাক্তার সাহেবরা ঔ কোম্পানির ঔষধ লিখেন। যার কারণে দেখা যায় যে, ঐ কোম্পানির থেকে আরো ভালো মানের ঔষধও বাজারে আছে কিন্তু তাদের থেকে  গিফট নেওয়ার কারণে ডাক্তার সাহেব তাদের ঔষধ লিখে দেন যা একেবারে হারাম ও নাজায়েজ এবং এগুলো সরাসরি ঘুষের মধ্যে পড়বে। সুতরাং ডাক্তারদের জন্য এই ক্ষেত্রে উক্ত গিফটগুলো নেওয়া একেবারে হারাম ও নাজায়েজ হবে।

 

খ. আর যদি এমন হয় যে, ঐ কোম্পানির ঔষধ বাস্তবেই অনেক ভালো মানের। আর ডাক্তাররা গিফটের জন্য নয় বরং ভালো মানের হওয়ার কারণেই উক্ত কোম্পানির ঔষধ মানুষদেরকে দিয়ে থাকেন। অত:পর কোম্পানি (ঘুষ হিসেবে নয়) বরং এমনি এমনি ঐ ডাক্তারকে এগুলো হাদিয়া দেন তখন এগুলো নেওয়া জায়েজ আছে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে  যদি এমন হয় যে, বাস্তবেই ঐ ডাক্তারগণ খুবই ভালো ও অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং তারা গরীবদেরকে কম টাকায় ভালো মানের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আর আপনার স্বামী গিফটের জন্য নয় বরং ভালো মানের হওয়ার কারণেই উক্ত ডাক্তারদের ব্যাপারে মানুষদেরকে অবগত করে থাকেন বা পাঠিয়ে থাকেন। অত:পর ডাক্তারগণ এমনি এমনি আপনার স্বামীকে এগুলো হাদিয়া দেন তখন এগুলো নেওয়া জায়েজ আছে।

 

২. জী হ্যাঁ, (উপরোক্ত বিষয় যদি না থাকে) তাহলে আপনার স্বামীর পরিচিত ডাক্তারগণ আপনার স্বামীকে এগুলো হাদিয়া হিসেবে দিলে তা নেওয়া ও ব্যবহার করা জায়েজ হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...