বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
(১)
আমরা ছোটবেলায় পড়েছি।এবং সত্য পড়েছি যে, মানুষ সামাজিক জীব।সে একা বাস করতে পারেনা।প্রতিবেশীদের সাথে মিলেমিশেই মানুষ তার সময় কে অতিবাহিত করে।এবং লেনদেন করেই তার প্রয়োজনকে পূর্ণ করে।
একটি সমাজ অনেক-কে নিয়ে গঠিত হয়।তাদের কেউ নেককার থাকে আবার কেউ বা বদকার।
পূর্ণ নেককার সমাজ রাসূলুল্লাহ সাঃএবং খেলাফতে রাশেদার সময়ে পৃথিবীতে ছিল।তারপর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আর আসবে কি না সেটা অনিশ্চিত।
কিন্তু কিয়ামত পর্যন্ত এই পৃথিবীতে মানুষকে বসবাস করতে হবে। নেককার বদকার উভয় মিলেই সমাজকে পরিপূর্ণতা দিতে হবে।এবং পরস্পর লেনদেন করেই প্রত্যেকে নিজ নিজ প্রয়োজনকে পূর্ণ করতে হবে।যে নেককাজে ব্রতী হবে সে পরকালে পুরুস্কার পাবে।আর যে বদ কাজের দিকে অগ্রসরমান থাকবে,তাকে পরকালে শাস্তি পেতে হবে।
কেউ কারো বোঝা সে দিন বহন করবে না।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺗُﻨﺬِﺭُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺨْﺸَﻮْﻥَ ﺭَﺑَّﻬُﻢ ﺑِﺎﻟﻐَﻴْﺐِ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺰَﻛَّﻰ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻳَﺘَﺰَﻛَّﻰ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ ﻭَﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴﺮُ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।
সুপ্রিয় পাঠক! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনারা তাদের সাথে পরস্পর লেনদেন করতে পারবেন।তবে তাদের সুদী কোনো কাজে আপনি তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারবেন না।
(২)
কোরআন এবং হাদীসের অকাট্য দলীল প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে যে,সুদ এবং সুদী কারবারে সকল প্রকার সহযোগিতা হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺒِﺮِّ ﻭَﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺈِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏِ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা- মায়েদা-২)
আপনাদের এখানকার লোকজন সুদী কারবারে হর-হামেশা লিপ্ত রয়েছে।সুতরাং তাদের সুদী লেনদেনের কিস্তি বাবৎ টাকা ঋণ দেয়াও এক প্রকার সহযোগিতা। তাই এই সুদী লোকদেরকে ঋণ দেওয়া কখনো জায়েয হবে না।কেননা সুদী লেনদেনে সহযোগিতা করা সম্পূর্ণরূপে হারাম।
তবে যদি কেউ আপনার নিকট এ বলে তাওবাহ করে, যে ভাই আমি সুদী লেনদেনে জড়িত হয়ে ভূল করেছি।শেষবারের মত আমাকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করো।আমি আর এই লেনদেন করবো না।তাহলে এমতাবস্থায় আপনি তাকে ঋণ দিতে পারবেন।
(৩)
পাত্র-পাত্রী পরস্পর পরস্পরকে সরাসরি দেখে নেয়াই নিয়ম।এবং সর্বাধিক সতর্কতা।ছবি-ভিডিও এর শরয়ী হুকুম সম্পর্কে বর্তমান দুনিয়ার উলামায়ে কেরামদের মতপার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম বিনা জরুরতে ফটো তোলাকে নাজায়েয বলে থাকেন।
যেখানে সরাসরি পাত্র-পাত্রী দেখা অনেক অনেক কল্যাণকর,সেখানে ছবি ছেয়ে পাঠানো কখনো উচিৎ নয়।এবং বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত ছবি তোলা জায়েযও নয়।
পাত্র-পাত্রী দেখাদেখির জন্য ছবি তোলা জরুরতের আওতাধীন হবে না।কেননা জরুরত বলা হয়, যা না হলেই নয়। অথচ এখানে ছবি তোলা ছাড়াও সরাসরি পাত্র-পাত্রীকে দেখা সম্ভব রয়েছে।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ