আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায। একজন মেয়ের কোন মাহরাম যদি অন্য দেশে অবস্থান করে, সেই মাহরামের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কি মেয়েটি একা সফর করতে পারবে?? মানে নিজ দেশ থেকে কোন মাহরাম ছাড়া বাহিরে অবস্থানরত মাহরামের কাছে যেতে পারবে কিনা?যেহেতু একজন মাহরাম সে দেশে আছেইম

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

কোনো নারীর জন্য দুরবর্তি সফর (৭৮ কিলোমিটার)  মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করা জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো। (সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭)

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ مُسْلِمَةٍ تُسَافِرُ مَسِيرَةَ لَيْلَةٍ، إِلَّا وَمَعَهَا رَجُلٌ ذُو حُرْمَةٍ مِنْهَا

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম নারীর জন্য সাথে মাহরাম (যার সাথে বিবাহ হারাম এমন আত্মীয়) ছাড়া এক রাতের রাস্তা সফর করা বৈধ নয়। (আবু দাউদ ১৭২৩)

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/44857/

https://ifatwa.info/67521/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,  ফিৎনার আশংকা না থাকলে সফরের দূরত্বের চেয়ে কম (অর্থাৎ তিনদিন তিনরাত দূরত্বের জায়গা অথবা ৭৭ (এক বর্ণনায় ৮২.৫) কিলোমিটারের চেয়ে কম) দূরত্ব মহিলার জন্য মাহরাম ব্যতীত সফর করা বৈধ রয়েছে। শায়খাইন রাহ তথা ইমাম আবু হানিফা রাহ ও ইমাম আবু ইউসুফ রাহ থেকে বর্ণিত রয়েছে,একদিন একরাত দূরত্বের জায়গা থেকে কম হলে তথা (৭৭÷৩=২৫.৬)২৫.৬ কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম পরিমাণ জায়গা হলে মহিলা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে।অন্যথায় পারবে না। বর্তমান এই ফিতনার যুগে  নিম্নোক্ত মতামত-ই ফাতাওয়া তথা শরয়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্য।তবে এখানেও ফিতনার আশঙ্কা না থাকা চাই।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।(কিতাবুন-নাওয়াযিল;১৫/৪১৭)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/212

**বিশেষ প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম ব্যতিত কাছাকাছি বাজারে যেতে পারবে। অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাকে রক্ষা করে যেতে হবে। তবে মাহরাম ছাড়া মহিলারা সফরের দূরত্ব সমপরিমাণ কোথাও যেতে পারবেন না।

হ্যা,স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন। একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।

এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।

 যথাক্রমেঃ-

 ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ

(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)

এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।

মাহরাম ব্যতীত কোন নারীর একাকী দূরে সফরে কিংবা বিদেশে গমন করা নিষিদ্ধ। নারীর সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ও ফেৎনা থেকে প্রতিরক্ষার জন্যই ইসলামের এই নীতি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মেয়েরা মাহরাম ব্যতীত অন্য কারো সাথে সফর করবে না এবং মাহরাম কাছে নেই এমতাবস্থায় কোন পুরুষ কোন মহিলার নিকট গমন করতে পারবে না। এ সময় এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক অমুক সেনাদলের সাথে জিহাদ করার জন্য যেতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্জ করতে যেতে চাচ্ছে। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি তার সাথেই যাও (বুখারী হা/১৮৬২; মুসলিম হা/১৩৪১)।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

বিশেষ প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম ব্যতিত কাছাকাছি কোন জায়গায় যেতে পারবে। অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাকে রক্ষা করে যেতে হবে। যদি কারো কোনো মাহরাম না থাকে, তাহলে তিনি নেককার মহিলাদের সাথে সফর করার চেষ্টা করবেন। উনি/উনারা দিনের প্রথমাংশে সফর শুরু করবেন, যাতে করে সন্ধ্যার পূর্বেই গন্তব্যস্থলে পৌছে যেতে পারেন। সর্বপ্রথম তিনি নেককারদের জামাতের অনুসন্ধান করবেন, না পেলে অন্তত পরিবেশ নিরাপদ দেখে সফর শুরু করার চেষ্টা করবেন। ফিতনার আশংকা থাকলে কিন্তু উনি/উনারা কোনো সফর করতে পারবেন না।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে ঐ বোনের জন্য মাহরামের সাথে বিদেশে অবস্থান করা জায়েয আছে। তবে নিজ দেশ থেকে গমনকালে তার সাথে কোন একজন মাহরাম থাকা আবশ্যক, যিনি তাকে বিদেশে অবস্থানরত মাহরামের নিকট পৌঁছে দিবেন। কারণ, মাহরাম ব্যতীত কোন নারীর একাকী দূরে সফরে কিংবা বিদেশে গমন করা নিষিদ্ধ।

তবে কিছু স্কালার বলেছেন যে, দি ঐ মহিলার এমন কোন মাহরাম না থাকে যে তার সাথে সফর করবে এবং বিকল্প কোনো রাস্তা নাই তার জন্য, এমতাবস্থায় ঐ বোন অপারগ ও নিরোপায় হয়ে পরিচিত এমন কোনো গায়রে মাহরামের সাথে সফর করতে পারবে, যার সাথে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে। শর্ত হল, সর্বদা নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে, অন্তরে ইস্তেগফার রাখতে হবে এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাকে এড়িয়ে যেতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...