بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
কোনো নারীর জন্য দুরবর্তি
সফর (৭৮ কিলোমিটার) মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর
করা জায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْهُ
قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا
تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ
اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً
قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
[‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে
এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী
সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে।
আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, যাও
তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো। (সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯,
সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪,
সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭)
حَدَّثَنَا
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ
سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ
مُسْلِمَةٍ تُسَافِرُ مَسِيرَةَ لَيْلَةٍ، إِلَّا وَمَعَهَا رَجُلٌ ذُو حُرْمَةٍ
مِنْهَا
আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ কোনো মুসলিম নারীর জন্য সাথে মাহরাম (যার সাথে বিবাহ হারাম এমন আত্মীয়) ছাড়া
এক রাতের রাস্তা সফর করা বৈধ নয়। (আবু দাউদ ১৭২৩)
বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/44857/
https://ifatwa.info/67521/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফিৎনার আশংকা না থাকলে সফরের দূরত্বের চেয়ে কম (অর্থাৎ তিনদিন তিনরাত দূরত্বের
জায়গা অথবা ৭৭ (এক বর্ণনায় ৮২.৫) কিলোমিটারের চেয়ে কম) দূরত্ব মহিলার জন্য মাহরাম ব্যতীত
সফর করা বৈধ রয়েছে। শায়খাইন রাহ তথা ইমাম আবু হানিফা রাহ ও ইমাম আবু ইউসুফ রাহ থেকে
বর্ণিত রয়েছে,একদিন
একরাত দূরত্বের জায়গা থেকে কম হলে তথা (৭৭÷৩=২৫.৬)২৫.৬ কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম পরিমাণ জায়গা হলে মহিলা
মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে।অন্যথায় পারবে না। বর্তমান এই ফিতনার যুগে নিম্নোক্ত মতামত-ই ফাতাওয়া তথা শরয়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার
যোগ্য।তবে এখানেও ফিতনার আশঙ্কা না থাকা চাই।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।(কিতাবুন-নাওয়াযিল;১৫/৪১৭)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/212
**বিশেষ প্রয়োজনে মহিলারা
মাহরাম ব্যতিত কাছাকাছি বাজারে যেতে পারবে। অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাকে রক্ষা করে যেতে
হবে। তবে মাহরাম ছাড়া মহিলারা সফরের দূরত্ব সমপরিমাণ কোথাও যেতে
পারবেন না।
হ্যা,স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল
হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন। একেই পরিভাষায়
জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন
করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
যথাক্রমেঃ-
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ
ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে
বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক
ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।
মাহরাম ব্যতীত কোন নারীর একাকী
দূরে সফরে কিংবা বিদেশে গমন করা নিষিদ্ধ। নারীর সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ও ফেৎনা থেকে
প্রতিরক্ষার জন্যই ইসলামের এই নীতি। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
মেয়েরা মাহরাম ব্যতীত অন্য কারো সাথে সফর
করবে না এবং মাহরাম কাছে নেই এমতাবস্থায় কোন পুরুষ কোন মহিলার নিকট গমন করতে পারবে
না। এ সময় এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক অমুক সেনাদলের সাথে জিহাদ করার জন্য
যেতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্জ করতে যেতে চাচ্ছে। রাসূল (ছাঃ) বললেন,
তুমি তার সাথেই যাও (বুখারী হা/১৮৬২;
মুসলিম হা/১৩৪১)।
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিশেষ প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম
ব্যতিত কাছাকাছি কোন জায়গায় যেতে পারবে। অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাকে রক্ষা করে যেতে হবে। যদি
কারো কোনো মাহরাম না থাকে, তাহলে
তিনি নেককার মহিলাদের সাথে সফর করার চেষ্টা করবেন। উনি/উনারা দিনের প্রথমাংশে সফর শুরু
করবেন, যাতে
করে সন্ধ্যার পূর্বেই গন্তব্যস্থলে পৌছে যেতে পারেন। সর্বপ্রথম তিনি নেককারদের জামাতের
অনুসন্ধান করবেন, না
পেলে অন্তত পরিবেশ নিরাপদ দেখে সফর শুরু করার চেষ্টা করবেন। ফিতনার আশংকা থাকলে কিন্তু
উনি/উনারা কোনো সফর করতে পারবেন না।
সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে ঐ বোনের জন্য
মাহরামের সাথে বিদেশে অবস্থান করা জায়েয আছে। তবে নিজ দেশ থেকে গমনকালে তার সাথে কোন
একজন মাহরাম থাকা আবশ্যক, যিনি তাকে বিদেশে অবস্থানরত মাহরামের নিকট পৌঁছে দিবেন। কারণ, মাহরাম ব্যতীত কোন নারীর একাকী দূরে সফরে কিংবা বিদেশে গমন করা নিষিদ্ধ।
তবে কিছু স্কালার বলেছেন যে, যদি ঐ মহিলার এমন কোন মাহরাম না থাকে যে তার সাথে
সফর করবে এবং বিকল্প কোনো রাস্তাও নাই তার জন্য, এমতাবস্থায়
ঐ বোন অপারগ ও নিরোপায় হয়ে পরিচিত এমন কোনো গায়রে মাহরামের সাথে সফর
করতে পারবে, যার
সাথে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে। শর্ত হল, সর্বদা নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে,
অন্তরে ইস্তেগফার রাখতে হবে এবং প্রয়োজন
অতিরিক্ত কথাকে এড়িয়ে যেতে হবে।