কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.
‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)
সাওবান (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
الْـمُخْتَلِعَاتُ ؛ هُنَّ الـمُنَافِقَاتُ.
‘‘(কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া) কোন কিছুর বিনিময়ে তালাক গ্রহণকারিণী মহিলারা মুনাফিক’’। (তিরমিযী ১১৮৬)
তবে কোন মারাত্মক সমস্যা দেখা দিলে কোন কিছুর বিনিময়ে স্বামীর কাছ থেকে তালাক গ্রহণ করা যেতে পারে।
‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা হাবীবা বিন্তে সাহ্লকে তার স্বামী সাবিত বিন্ ক্বাইস বিন্ শাম্মাস মেরে তার একটি হাড় ভেঙ্গে ফেলে। ভোর বেলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ ব্যাপারে জানানো হলে তিনি সাবিতকে ডেকে পাঠালেন। অতঃপর বললেন: তুমি তার (তার স্ত্রী) কাছ থেকে কিছু সম্পদ নিয়ে তাকে ছেড়ে দাও। সাবিত বললেন: এমনকি চলে হে আল্লাহ্’র রাসূল! তিনি বললেন: হ্যাঁ, চলে। তখন সাবিত বললেন: আমি তাকে দু’টি খেজুরের বাগান দিয়েছি। এখনো তা তারই দখলে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: বাগান দু’টি নিয়ে তাকে ছেড়ে দাও। অতঃপর সাবিত তাই করলেন। (আবূ দাউদ ২২২৮)
স্বামী ও স্ত্রীর উপর শরয়ী যেসব বিধানাবলী মানা আবশ্যক। তা যদি উভয়ের পক্ষে একসাথে বসবাস করে মানা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাইতে পারে। যেমন-
১.স্বামীর অধীনে থেকে শরয়ী পর্দা, নামায ইত্যাদি আবশ্যকীয় ইবাদত আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়া।
২.স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা বাসস্থান, খানা, পোশাক ও শারিরীক প্রয়োজন পূরণে অক্ষম হয়ে যাওয়া।
৩.স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর উপর জুলুম করা। প্রহার করা, গালাগাল করা, অপমান করা ইত্যাদি।
৪.স্ত্রী থেকে স্বামীর ছয় মাসের অধিক সফরে চলে যাওয়া। এতে স্ত্রীর ফেতনা পতিত হবার আশংকা হলে স্ত্রী তালাক চাইতে পারে।
৫.স্বামী শরীয়ত গর্হিত অশ্লীল কাজে নিমগ্ন হয়ে পড়লে।
৬.স্ত্রীকে তার পিতামাতার সাথে দেখা সাক্ষাতে বাঁধা প্রদান করলে।
৭.বনিবনা না হয়। রুচির ভিন্নতার কারণে সংসারে অশান্তি অমিল হলে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হলে।
ইত্যাদি কারণে স্ত্রী তার স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
উপরের ঘটনার প্রেক্ষিতে বাবা মা ও মুরব্বিদের মতামত নিয়ে তালাক দেওয়া আপনার জন্য গুনাহের কোন কারণ হয়নি। বাবা মার এই হুকুম পালন সঠিক হয়েছে।
এক্ষেত্রে তালাক দেয়া আপনার জন্য বৈধ হয়েছে।
(০২)
ক্ষতি হবেনা,ইনশাআল্লাহ।
তদুপরি বালা-মুসিবত থেকে হেফাজতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।
(০৩)
এক্ষেত্রে আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখে অন্যত্রে বিবাহ করবেন।
পূর্বের ন্যায় আর কোনো ভুল গুলো যেনো না হয়,সেদিকে সজাগ থাকবেন।
স্ত্রীকে সময় দিবেন, সযত্নে রাখবেন।
পূর্ণ মুহাব্বত করবেন, সংসার যেনো আজীবন টিকিয়ে থাকে,এই মর্মে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।