আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
 এক বোনের দাম্পত্য সমস্যা। তার জবানে তুলে ধরছি ইনশাআল্লাহ
আমি একজন বিবাহিত নারী।  আমার বিয়ের প্রায় ৫/৬ বছর হয়েছে। আমাদের একটি পুত্র সন্তান ও রয়েছে।
 বিয়ের পরে ১/২ বছর আমার এবং আমার স্বামীর দাম্পত্য জীবন অনেক ভালোই চলছিল। কিন্তু এর পর থেকে তার এবং আমার মাঝে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তিনি আমাকে  সময় দিতেন না, সাংসারিক কোনো বিষয়ে কোনো রকম চিন্তা ছিল না। এমনকি আমাদের সন্তানকেও সেভাবে সময় দিতো না বা কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতো না। সবসময়ই চাইতো আমাকে বিদায় করে অন্য কাউকে নিয়ে আসতে। এসব নিয়ে দাম্পত্য জীবনে নানা কলহেরও সৃষ্টি হয়। উনার রোজগারের অবস্থাও খুব একটা ভালো না। অনেক বেশি পরিমাণ ঋণ জমা হয়েছে তার কাঁধে। বলতে গেলে ঋণ দিয়েই সে সংসারের খরচ চালায়। সামান্য একটা কারণ নিয়েই সে অনেক বেশি হাইপার হয়ে যায়। সে মোটামুটি দ্বীন মেনে চললেও অনেক মেয়ের সাথে চ্যাটিং করতো, কারণ হিসেবে ব্যবসায়িক আলাপ বলে চালিয়ে দিতো। কিছু দিন আগে সে একটি বেদ্বীন মেয়েকে বিয়ে করেছে, যে কিনা পর্দা পর্যন্ত করে না। তার পরিবার আমাকে অনেক পছন্দ করে বলে সে চেয়েছিল দুজনকেই রাখতে। আমিও রাজি ছিলাম কিন্তু সে কাউকেই সঠিক ভাবে সময় দিতে পারে না। কোনো রকমে সংসারের মিনিমাম খরচ দিয়ে যাচ্ছে।
 এখন আবারো সে ২য় জনকে তালাক দিয়ে ৩য় আরেকটি বিয়ে করতে চাচ্ছে।
 আমি এখন এসব সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। আমি সবসময়ই মানসিক টেনশনে থাকি এবং বুক ধড়ফড় করে। বেশ কিছুদিন থেকে একজন নিউরোলজিস্ট এর চিকিৎসা গ্রহণ করছি।
তার ২য় বিয়ের কথা আমার পরিবারে মা এবং ছোট ভাই শুধু জানে। বাবা এখন পর্যন্ত কিছুই জানেন না।
 এখন আমার ডিভোর্সের চিন্তা মাথায় এসেছে।
 আমার একটি সন্তান আছে আড়াই বছরের।
এমতাবস্থায় যদি আমি ডিভোর্স নিই তাহলে কি আমার গুনাহ হবে বা আমার এই সিদ্ধান্ত কি সঠিক হবে?
 অনেক বার ইস্তিখারা করেছি। কিন্তু কিছু বুঝতে পারছি না।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://www.ifatwa.info/37650/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.

‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)

সাওবান (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْـمُخْتَلِعَاتُ ؛ هُنَّ الـمُنَافِقَاتُ.

‘‘(কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া) কোন কিছুর বিনিময়ে তালাক গ্রহণকারিণী মহিলারা মুনাফিক’’। (তিরমিযী ১১৮৬)

তবে কোন মারাত্মক সমস্যা দেখা দিলে কোন কিছুর বিনিময়ে স্বামীর কাছ থেকে তালাক গ্রহণ করা যেতে পারে।

‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা হাবীবা বিন্তে সাহ্লকে তার স্বামী সাবিত বিন্ ক্বাইস বিন্ শাম্মাস মেরে তার একটি হাড় ভেঙ্গে ফেলে। ভোর বেলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ ব্যাপারে জানানো হলে তিনি সাবিতকে ডেকে পাঠালেন। অতঃপর বললেন: তুমি তার (তার স্ত্রী) কাছ থেকে কিছু সম্পদ নিয়ে তাকে ছেড়ে দাও। সাবিত বললেন: এমনকি চলে হে আল্লাহ্’র রাসূল! তিনি বললেন: হ্যাঁ, চলে। তখন সাবিত বললেন: আমি তাকে দু’টি খেজুরের বাগান দিয়েছি। এখনো তা তারই দখলে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: বাগান দু’টি নিয়ে তাকে ছেড়ে দাও। অতঃপর সাবিত তাই করলেন। (আবূ দাউদ ২২২৮)

স্বামী ও স্ত্রীর উপর শরয়ী যেসব বিধানাবলী মানা আবশ্যক। তা যদি উভয়ের পক্ষে একসাথে বসবাস করে মানা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাইতে পারে। যেমন-

১.স্বামীর অধীনে থেকে শরয়ী পর্দা, নামায ইত্যাদি আবশ্যকীয় ইবাদত আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়া।

২.স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা বাসস্থান, খানা, পোশাক ও শারিরীক প্রয়োজন পূরণে অক্ষম হয়ে যাওয়া।

৩.স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর উপর জুলুম করা। প্রহার করা, গালাগাল করা, অপমান করা ইত্যাদি।

৪.স্ত্রী থেকে স্বামীর ছয় মাসের অধিক সফরে চলে যাওয়া। এতে স্ত্রীর ফেতনা পতিত হবার আশংকা হলে স্ত্রী তালাক চাইতে পারে।

৫.স্বামী শরীয়ত গর্হিত অশ্লীল কাজে নিমগ্ন হয়ে পড়লে।

৬.স্ত্রীকে তার পিতামাতার সাথে দেখা সাক্ষাতে বাঁধা প্রদান করলে।

৭.বনিবনা না হয়। রুচির ভিন্নতার কারণে সংসারে অশান্তি অমিল হলে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হলে।

ইত্যাদি কারণে স্ত্রী তার স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের স্বামী যদি তার আবশ্যকীয় জরুরত তথা বাসস্থান, খানা, পোশাক ও শারিরীক প্রয়োজন পূরণে অক্ষম হয়ে যায়,বা সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও এসব জরুরত পূরন না করে,আর এক্ষেত্রে স্বামী কর্তৃক তালাকে তাফবিজের ক্ষমতা প্রাপ্তাও হয়,সেক্ষেত্রে সেই বোন ডিভোর্স নিতে পারবে,তথা নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারবে।

স্বামী কর্তৃক তালাকে তাফবিজের ক্ষমতা প্রাপ্তা না হলে স্বামী তালাক চাইবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...