বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
প্রথমত আমাদের দু'টি বিষয় সম্পর্কে সম্মক অবগত হতে হবে।
এক, ক্রয়-বিক্রয়ে কারো পক্ষ্য থেকে কোনোপ্রকার বাধ্যবাধকতা এবং সে বাধ্যবাধকতা কে অনুসরণ করার বিধান।
দুই, সরকারের পক্ষ্য থেকে করারোপের বিধান।
মূলকথা হল,প্রত্যেকেরই এ অধিকার রয়েছে যে,সে তার টাকা দ্বারা নিজ পছন্দমাফিক যেকোনো পণ্য যেকোনো জায়গা থেকে ক্রয় করবে।(ফাতাওয়ায়ে শামী-৫/৪৪৮)সুতরাং বহির্বিশ্ব থেকে তার আমদানি-রফতানিতে কারো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য হবে না।
হ্যা একটি বিশুদ্ধ ইসলামি সরকারের পক্ষ্য থেকে জনস্বার্থে আমদানি-রফতানির উপর করারোপ সহ বিভিন্ন প্রকার বিধিনিষেধ আরোপিত হতে পারে।এ বিধিনিষেধ কে মান্য করা অবশ্যই সবার জন্য ওয়াজিব যদি শরীয়ত বিরোধী কোনো বিষয় তাতে না থাকে। কিন্তু যেহেতু আমাদের সরকার ব্যবস্থায় শরীয়তকে পুরোপুরিভাবে অনুসরণ করা হয় না, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনৈসলামিক বিষয়াবলীকে বাস্তবায়ন করার প্রয়াস চালানো হয়।তাই ইনসাফের দাবী হল, উক্ত সরকারের হস্তক্ষেপকে মান্য করা ততটুকু জরুরী হবে না, যতটুকু একটি বিশুদ্ধ ইসলামি সরকারের বিধিনিষেধ কে মান্য করা জরুরী হয়।
কিন্তু যেহেতু সরকারী বিধিনিষেধ কে অগ্রাহ্য করার ধরুণ অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে হয়।যেমন- এক্ষেত্রে মিথ্যা বলতে হবে বা নিজ জান মালে ক্ষতির আশংকা, ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাই এক্ষেত্রে সরকারী বিধিনিষেধ কে মান্য করাই উচিৎ। তাছাড়া যখন মানুষ কোনো দেশের নাগরিকত্ব সনদ গ্রহণ করে -তখন সে কথা বা হাবভাব দ্বারা- এটাই অঙ্গিকার করে নেয় যে, সে সরকারের সকল প্রকার আইন-কানুন মেনে চলবে।
এই অঙ্গিকার নামার দাবী এটাই যে,যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারী বিধিনিষেধ শরীয়তের মূলনীতিকে অতিক্রম না করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত সরকারী হুকুমকে মান্য করতে হবে।এবং মান্য করাটা ওয়াজিব পর্যায়ের।
সুতরাং বহির্বিশ্ব থেকে সরকারকে না জানিয়ে আমদানি-রফতানি করা যদিও জায়েয। কিন্তু সরকার যেহেতু করারোপ করে ফেলেছে,অন্যদিকে সরকারি এই বিধিনিষেধ কে অগ্রাহ্য করার ধরুণ অনেক শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে,
তাই উলামায়ে কেরাম এমন আমদানি-রফতানি এবং সেই মালের ক্রয়-বিক্রয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/৯০
সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
এখানে দু'টি বিষয় অনুধাবনযোগ্য।
এক, সরকারের পক্ষ্য থেকে করারোপ করা।বেধ উদ্দেশ্যে সরকারের সেই অধিকার রয়েছে।এবং জনগণও কিছুটা শর্তের ভিত্তিতে সেই বিধিনিষেধ মানতে শরয়ী ভাবে বাধ্য।কর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-700
দুই, ক্রয়-বিক্রয়ের উপর সরকারের পক্ষ্য থেকে বিধিনিষেধ আরোপ করা।যদিও এটা সরকারের জন্য ঠিক নয় তবে বিভিন্ন হেকমতের আলোকে সেটা সরকারের জন্য অনুমোদিত হয়ে যায়।
সুতরাং করফাঁকি দিয়ে বাহির থেকে মাল এনে কম দামে বিক্রি করা কখনো উচিৎ হবে না।
সুতরাং এমন মাল ক্রয়-বিক্রয় থেকে মুসলমানদেরকে দূরে থাকতে হবে।
কিন্তু যদি সরকার অসহনীয় পর্যায়ের করারোপ করে ফেলে তাহলে করারোপ কমানোর আন্দোলনের অংশ হিসেবে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার পূর্ব পর্যন্ত রুখসত থাকবে যদি অন্যকোনো শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হতে না হয়।এমনটাই ফুকাহায়ে কেরামের ভাষ্য থেকে অনুধাবন করা যায়।
(২) বিদেশ থেকে আসার মুহুর্তে কিছু কিনে নিয়ে আসা বা কাউকে দিয়ে ক্রয় করানো উভয়ই জায়েয রয়েছে।কেননা এটা কস্টমস বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত রয়েছে।
আল্লাহ-ই ভালো রয়েছেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ