জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১ম লিংকে হাদীসটি এভাবে উল্লেখ রয়েছেঃ-
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ زَحْرٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ قَلَّمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُومُ مِنْ مَجْلِسٍ حَتَّى يَدْعُوَ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ لأَصْحَابِهِ " اللَّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيكَ وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ وَمِنَ الْيَقِينِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مُصِيبَاتِ الدُّنْيَا وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ عَادَانَا وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيبَتَنَا فِي دِينِنَا وَلاَ تَجْعَلِ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু উমর (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নোক্ত বাক্যে তার সাহাবীগণের জন্য দু’আ না করে হঠাৎ কোন মাজলিস হতে খুব কমই বিদায় হতেনঃ “হে আল্লাহ! আমাদের মাঝে তুমি এত পরিমাণ আল্লাহভীতি ভাগ কর যা আমাদের মাঝে ও তোমার প্রতি অবাধ্যাচারী হওয়ার মাঝে বাধা হতে পারে এবং আমাদের মাঝে তোমার প্রতি আনুগত্য এত পরিমাণ প্রদান কর যার দ্বারা তুমি আমাদেরকে তোমার জান্নাতে পৌছে দিবে, এতটা দৃঢ় প্রত্যয় প্রদান কর যার মাধ্যমে তুমি পৃথিবীর যে কোন অনিষ্ট আমাদের জন্য সহজসাধ্য করবে, যতক্ষণ আমাদের তুমি জীবিত রাখ ততক্ষণ আমাদের কৰ্ণ, আমাদের চক্ষু ও আমাদের শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে আমাদের জীবনোপকরণ দান কর (কিংবা আমাদের চোখ-কান মৃত্যু পর্যন্ত তাজা ও সুস্থ রাখ), আর তাকে আমাদের উত্তরাধিকার বানিয়ে দাও।
আমাদের উপর যে যুলুম করে তার প্রতি আমাদের প্রতিশোধ সুনির্ধারিত কর, আমাদের প্রতি যে দুশমনী করে তার বিরুদ্ধে আমাদেরকে সহযোগিতা কর, আমাদের ধর্ম পালনে আমাদেরকে বিপদাক্রান্ত করো না, দুনিয়া অর্জনকে আমাদের ও আমাদের জ্ঞানের উদ্দেশে রূপান্তর করো না এবং আমাদের প্রতি যে দয়া করবে না তাকে আমাদের উপর প্রভাবশালী (শাসক নিয়োগ) করো না”।
হাসানঃ আল-কালিমুত তাইয়্যিব (হাঃ ২২৫/১৬৯), মিশকাত তাহকীক সানী (হাঃ ২৪৯২)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসটি কিছু বর্ণনাকারী খালিদ ইবনু আবী ইমরান হতে, তিনি নাফি’ হতে, তিনি ইবনু উমর (রাযিঃ) হতে এই সনদে রিওয়ায়াত করেছেন।
(তিরমিজি ৩৫০২)
★২য় লিংকে হাদীসটি এভাবে উল্লেখ রয়েছেঃ-
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ زَحْرٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ قَلَّمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُومُ مِنْ مَجْلِسٍ حَتَّى يَدْعُوَ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ لأَصْحَابِهِ " اللَّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيكَ وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ وَمِنَ الْيَقِينِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مُصِيبَاتِ الدُّنْيَا وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ عَادَانَا وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيبَتَنَا فِي دِينِنَا وَلاَ تَجْعَلِ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ...... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নিম্নের এই কালিমাসমূহে সাহাবীদের জন্য দুআ না করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার মজলিস থেকে খুব কমই উঠেছেন। কালিমা গুলো হলঃ
اللَّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيكَ وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ وَمِنَ الْيَقِينِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مُصِيبَاتِ الدُّنْيَا وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ عَادَانَا وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيبَتَنَا فِي دِينِنَا وَلاَ تَجْعَلِ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا
হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য বণ্টন কর তোমার ততটুকু ভয় যতটুকু আমাদের মাঝে এবং তোমার নফরমানীর মাঝে যেন আমাদের জন্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়, তোমার ততটুকু ফরমাবরদারী দাও যতটুকু আমাদের পৌছে দেবে তোমার জান্নাতে। ততটুকু ইয়াকীন দাও যতটুকু দ্বারা সহজ হয়ে যায় আমাদের জন্য দুনিয়ার বিপদাপদ। উপভোগর অবকাশ দাও আমাদের শ্রবন শক্তির, আমাদের দৃষ্টির, আমাদের শক্তির। যতদিন তুমি আমাদের জীবিত রাখবে ততদিন এগুলো তুমি বজায় রেখো। যারা আমাদর উপর যুলুমকরেছে তাদের উপর বদলা তুমিই নিও, যারা আমাদের শত্রুতা করে তাদের মুকাবিলায় তুমিই আমাদের সাহায্য করো। আমাদের দ্বীনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিপদাপন্ন করো না। দুনিয়ার চিন্তাই তুমি আমাদের বড় চিন্তায় পরিণত করো না। এটিকেই তুমি আমাদের জ্ঞনের চূড়ান্ত বানিও না, আর যারা আমাদের দয়া করবে না তাদেরকে তুমি আমাদের উপর আধিপত্য দিও না।
হাদীসটি হাসান–গারীব। কোন কোন রাবী এই হাদীসটি খালিদ ইবনে আবু ইমরান–নাফি–ইবনে উমর (রাযিঃ) সূত্রে রিওয়ায়াত করেছেন।
(তিরমিজি ৩৫০২)
★উল্লেখিত দোয়াটির বাংলা উচ্চারণঃ-
’’আল্ল-হুম্মাকসিম লানা- মিন্ খশ্ইয়াতিকা মা- তাহূলু বিহী বায়নানা- ওয়া বায়না মা’আ-সীকা ওয়ামিন্ ত্ব-’আতিকা মা- তুবাল্লিগুনা- বিহী জান্নাতাকা ওয়ামিনাল ইয়াক্বীনি মা- তুহাওবিনু বিহী ’আলায়না- মুসীবা-তিদ্ দুন্ইয়া- ওয়া মাত্তি’না- বিআসমা-’ইনা- ওয়া আবস-রিনা- ওয়া ক্যুওয়াতিনা- মা- আহ্ইয়াইতানা- ওয়াজ্’আলহুল ওয়া-রিসা মিন্না- ওয়াজ্’আল সা’রানা- ’আলা- মান্ যলামনা- ওয়ানসুরনা- ’আলা- মান ’আ-দা-না ওয়ালা- তাজ্’আল মুসীবাতানা- ফী দীনিনা- ওয়ালা- তাজ্’আলিদ্ দুন্ইয়া- আকবারা হাম্মিনা- ওয়ালা- মাব্লাগা ’ইলমিনা- ওয়ালা- তুসাল্লিত্ব ’আলায়না- মান্ লা- ইয়ার্হামুনা-’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমাদের মধ্যে ঐ পরিমাণ তোমার ভীতি-সঞ্চার করো যা দিয়ে তুমি আমাদের মাঝে ও তোমার নাফরমানীর মধ্যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। তোমার ’ইবাদাত-আনুগত্যের ঐ পরিমাণ আমাদেরকে দান করো, যা দিয়ে তুমি আমাদেরকে তোমার জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং তোমার ওপর ঈমানের ঐ পরিমাণ দান করো যা দিয়ে তুমি দুনিয়ার বিপদাপদ সহজ করে দেবে। হে আল্লাহ! আমাদের উপকার সাধন করো আমাদের কানের মাধ্যমে, আমাদের চোখের মাধ্যমে ও আমাদের শক্তির মাধ্যমে, যতক্ষণ না তুমি আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখো। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের উত্তরাধিকারী জারী রাখো। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের প্রতিশোধ-প্রতিরোধকে সীমাবদ্ধ রাখো তাদের ওপর, যারা আমাদের ওপর যুলম [অত্যাচার-অবিচার] করেছে এবং আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করো তাদের বিরুদ্ধে, যারা আমাদের সাথে শত্রুতা করেছে। হে আল্লাহ! আমাদের দীন সম্পর্কে আমাদেরকে কোন বিপদে ফেলো না এবং দুনিয়াকে আমাদের মৌলিক চিন্তার বিষয় ও জ্ঞানের পরিসীমা করো না। হে আল্লাহ! যারা আমাদের ওপর দয়া প্রদর্শন করবে না, তাদেরকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিও না।)।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উভয় লিংকে দেয়া হাদীসের অর্থই সহীহ।
তবে ১ম লিংকে দেয়া হাদীসের অর্থ কিছুটা বুঝার জন্য সহজ বলে মনে হচ্ছে।
তাই এক্ষেত্রে ১ম লিংকে দেয়া হাদীসের অর্থ মুখস্থ করার পরামর্শ থাকবে।