بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
শরীয়তের বিধান হলো গুনাহের
কাজ/অন্যায় কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই। অন্যকে সেই কাজে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই। মহান আল্লাহ
তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَتَعَاوَنُوا
عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের
সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর।
নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}
ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ
ﻣَﻌْﺒِﺪٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ
ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ
ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ،
ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে
বললেন,তুমি কি নেকীর
কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,
তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা
করো। নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত
থাকে। আর গোনাহ হল সেটা, যা
অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয় এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত
কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে
বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ
ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ
ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি। তিনি
বলেন, সন্দেহ
যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো। (সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)
নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
عن عامر،
قال: سمعت النعمان بن بشير، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول:
"الحلال بين، والحرام بين، وبينهما مشبهات لا يعلمها كثير من الناس، فمن اتقى
المشبهات استبرأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات: كراع يرعى حول الحمى، يوشك أن
يواقعه، ألا وإن لكل ملك حمى، ألا إن حمى الله في أرضه محارمه، ألا وإن في الجسد
مضغة: إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، ألا وهي القلب "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
(কোনো জিনিষ) হালাল (হওয়া)
পরিস্কার। (এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যা এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান
রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা। যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ
থেকে বেঁছে থাকল, সে
যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত
হল, সে
যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো। এখানে সম্ভাবনা রয়েছে
যে, পশু
ক্ষেতে নেমে যাবে।
জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই
একটি সীমান্তরেখা রয়েছে এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,
তার হারাম বিধি-বিধান। জেনে রাখ! শরীরে
একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে। আর যখন
সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়, তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,
ক্বলব বা অন্তর। (সহীহ বুখারী-৫২)
একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
لَعَنَ
رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤكِلَهُ،
وَشَاهِدَيْهِ، وَكَاتِبَهُ.
যে সুদ খায়,
যে সুদ খাওয়ায়,
যে সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ
বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় সকলের প্রতি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম লা‘নত করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ১২০৬
এ ছাড়াও আরও অসংখ্য হাদীসে
সুদ খাওয়া, সুদ
দেওয়া এবং সুদের সাথে সকল সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। যেহেতু
সুদ আদান প্রদান সহ সুদের সাথে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় জিনিষ হারাম।
সুতরাং ব্যাংকের জন্য জায়গা ভাড়া দেয়া জায়েয হবে
না। কেননা এতকরে সুদী কারবারে সাহায্য করা হবে। (কিতাবুল ফাতাওয়া-৫/৪১১)
আরো জানুন: https://ifatwa.info/3926/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ব্যাংকিং সম্পর্কে আপনার লিখিত বইয়ে যদি
উদ্দেশ্য থাকে যে, মানুষকে সুদের ক্ষতি ও ভয়াবহতা থেকে বাঁচানো ও জন সচেতনতা সৃষ্টি
করা এবং সুদের কারবার থেকে নিরুৎসাহিত করা তাহলে উক্ত বই আপনার জন্য সদকায়ে জারিয়া
হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। মানুষ আপনার বই পড়বে ও সুদের মত গুনাহ থেকে বাঁচবে ইনশাআল্লাহ।
তবে যদি প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যাবস্থাকে
আপনি প্রমোট করেন অথবা সাধারণ মানুষকে প্রচলিত সুদভিত্তিক ব্যাকিং ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত
হওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদাণ করেন তাহলে আপনার জন্য উক্ত বই লেখা জায়েয নেই। কারণ, এটি
হারাম কাজের প্রতি সহযোগিতা করার নামান্তর। আপনার নিয়ত ও কাজের উপর বইটির হুকুম নির্ভর
করছে।
বিঃদ্রঃ আমাদের পর্যবেক্ষণমতে বাংলাদেশের কোন ব্যাংকই শরয়ী মানদন্ড
রক্ষা করে ব্যাংকিং করে না। তা’ই এসব ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা বা সুদের টাকা
নিজ প্রয়োজনে ব্যয় করা জায়েজ হবে না। বরং সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে।