আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in পবিত্রতা (Purity) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।সাদাস্রাব সংক্রান্ত অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় আমাকে।এই জন্য ইবাদাতে অনেক বেশি বিঘ্ন ঘটে।নিম্নে আমার কয়েকটা প্রশ্ন।
১.ধরুন,সাদাস্রাব গায়ে লেগে শুকিয়ে গেলো এবং টয়লেটের লাজ শেষে বুঝতে পারলাম যে,সাদাস্রাব লাগা স্থানে পানি পৌছে গিয়েছে।এই ক্ষেত্রে পানির কারণে কি সাদাস্রাব বা নাপাকী ছড়িয়ে যাবে?

২.সাদাস্রাব লেগে শুকিয়ে যাওয়ার পর ওই স্থান না ডলে শুধু মাত্র পানি ঢেলে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আনুমানিক কতলিটার পানি ব্যাবহার করতে হবে?

৩.শরীরে বাচ্চাদের প্রস্রাব লেগে শুকিয়ে যাওয়ার পর শুধু পানি প্রবাহিত করে দিলে হবে না?

৪.আমি প্যাড ইউস করি টিস্যু দিয়ে যাতে সাদাস্রাব গায়ে না লাগে।টিস্যু তো পানি শুষতে পারে। যদি এমন হয় যে সাদাস্রাব নির্গত হয়ে টিস্যুতে এক দিরহাম পরিমাণ লেগে যায় তাহলে কি শরীর নাপাক হবে?মানে আমি বোঝাতে চাচ্ছি,শরীরের তুলনায় টিস্যু তো পানি শুষতে পারে তুলনামূলক বেশি তাই শরীরের নাপাক আর অবশিষ্ট থাকবে কিনা।

৫।আমার আম্মু আমাকে কিছু কিনা দিলে আমার সন্দেহ হয় টাকাটা আসলে কোথা থেকে এসেছে।আম্মুর কোনো হারাম ইনকাম নেই।আমার সন্দেহ মূলত এইজন্য হয় আমার সৎ বাবা আমার নাবালেগ ভাইবোনেদের দেওয়া টাকা থেকে আমার জন্য আম্মু খরচ করলো কিনা।শুধু এইক্ষেত্রে না আরো অনেকক্ষেত্রে আমার এইরকম সন্দেহ হয়।যদি এইরকম সন্দেহমূলক চিন্তার ক্ষেত্রে ৬০/৭০% মনে হয় যে না এতে কোনো সমস্যা নেই হালাল। তাহলে কি হালাল ধরে নিবো?

৬।সাদাস্রাব বের হয়েছে বলে ধারণা হলো কিন্তু হাতে কাজ থাকাতে চেক করতে পারলাম না।কাজ শেষ করে দেখি লজ্জাস্থান শুকনা।অর্থাৎ, বের হয়েছে কিনা তা নির্ণয়ের আর কোনো উপায় থাকলো না তাহলে এইক্ষেত্রে কি পবিত্র বলেই ধরে নিবো?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদিস শরিফে এসেছে,আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَتْنَا أُمُّ يُونُسَ بِنْتُ شَدَّادٍ، قَالَتْ حَدَّثَتْنِي حَمَاتِي أُمُّ جَحْدَرٍ الْعَامِرِيَّةُ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ عَنْ دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ فَقَالَتْ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم وَعَلَيْنَا شِعَارُنَا وَقَدْ أَلْقَيْنَا فَوْقَهُ كِسَاءً فَلَمَّا أَصْبَحَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ الْكِسَاءَ فَلَبِسَهُ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الْغَدَاةَ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ هَذِهِ لُمْعَةٌ مِنْ دَمٍ . فَقَبَضَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى مَا يَلِيهَا فَبَعَثَ بِهَا إِلَىَّ مَصْرُورَةً فِي يَدِ الْغُلَامِ فَقَالَ " اغْسِلِي هَذِهِ وَأَجِفِّيهَا ثُمَّ أَرْسِلِي بِهَا إِلَىَّ " . فَدَعَوْتُ بِقَصْعَتِي فَغَسَلْتُهَا ثُمَّ أَجْفَفْتُهَا فَأَحَرْتُهَا إِلَيْهِ فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِنِصْفِ النَّهَارِ وَهِيَ عَلَيْهِ

উম্মু জাহদার আল-‘আমিরিয়্যাহ সূত্রে বর্ণিত। তিনি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে গেলে কি করতে হবে? ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, এক রাতে আমি (হায়িয অবস্থায়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে রাত যাপন করলাম। আমাদের গায়ে নিজ নিজ কাপড় ছিল। সেটির উপর আমরা একটি চাদরও জড়িয়ে নিলাম। ভোর হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ চাদরখানি পরিধান করে ফজরের সলাত আদায়ে চলে গেলেন। তিনি সলাত আদায় করার পর বসলেন। তখন এক লোক বলল, হে আল্লাহর রসূল! এতে রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাগ ও তার আশেপাশের অংশ হাতের মুঠোয় ধরে ঐ অবস্থায়ই এক গোলামের দ্বারা চাদরটি আমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং বললেনঃ এটা ধুয়ে ভাল করে চিপে নিয়ে আবার আমার নিকট পাঠিয়ে দাও। আমি এক পাত্র পানি নিয়ে তা ধুয়ে ভাল করে পানি নিংড়িয়ে (শুকিয়ে) তাঁর নিকট পাঠিয়ে দিলাম। দুপুরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ চাদরটি গায়ে দিয়ে (ঘরে) ফিরলেন।
(আবু দাউদ ৩৮৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে সাদা স্রাব যেহেতু শরীরে লেগে একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে, তাই সাদাস্রাব বা নাপাকী ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয় নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না। একেবারে শুকিয়ে না গেলে সেক্ষেত্রে নাপাকি ছড়িয়ে যাওয়া বলা হবে।
তদুপরি প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ছড়িয়ে যাওয়া স্থান ধুয়ে নেয়ার পরামর্শ থাকবে।

(০২)
সেই স্থান ডলে ধোয়াই হাদীসের নির্দেশ। 
তাই ডলে মলে ধোয়াই আবশ্যক। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ الْمُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّ امْرَأَةً، سَأَلَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الثَّوْبِ يُصِيبُهُ الدَّمُ مِنَ الْحَيْضَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " حُتِّيهِ ثُمَّ اقْرُصِيهِ بِالْمَاءِ ثُمَّ رُشِّيهِ وَصَلِّي فِيهِ "

আসমা বিনতু আবী বাকার সিদীক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হায়িযের রক্ত • লাগা কাপড়ের বিধান সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আঙ্গুল দিয়ে খুঁটে খুঁটে তা তুলে ফেল, অতঃপর পানি দিয়ে তা আংগুলের মাধ্যমে মলে নাও, অতঃপর তাতে পানি গড়িয়ে দাও, অতঃপর তা পরে নামায আদায় কর। (সহীহ। ইবনু মাজাহ (৬২৯), বুখারী ও মুসলিম। তিরমিজি ১৩৮)

(০৩)
না,হবেনা। 
ডলে ধোয়া আবশ্যক। 

(০৪)
এক্ষেত্রে শরীরে যেহেতু এক দিরহাম সমপরিমাণ নাপাকি লাগেনি,তাই শরীর নাপাক হবেনা। তবে ঐ প্যাড পরিধানরত অবস্থায় নামাজ আদায় করা যাবেনা।
কেননা সেটি নাপাক।

আর এক্ষেত্রে সাদা স্রাব বের হওয়ার দরুন পুনরায় অযু আবশ্যক হবে।

(০৫)
এতে সমস্যা নেই।

আপনি হালাল ধরে নিবেন।

(০৬)
এক্ষেত্রে সেখানে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে চেক করবেন,তাহলে ইনশাআল্লাহ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।

আপনি যদি সাদা স্রাব বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন,সেখানে পানি দিয়ে চেক করার পরেও নাপাকির চিহ্ন বা গন্ধ না পেলে সেক্ষেত্রে পবিত্র বলেই ধরে নিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 80 views
0 votes
1 answer 37 views
...