আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ। উস্তায নিচের লেখাটা আমি পাওয়ার পর নিজে আমল করি আর অন্যরাও যাতে করতে পারেন এজন্য শেয়ার করি ইসলামিক গ্রুপে। কিন্তু একজন আমলগুলোর রেফারেন্স জানতে চেয়েছেন। আমি যে মাধ্যমে জানতে পেরেছি সেখানে রেফারেন্সের উল্লেখ ছিলো না। তবে অথেনটিক মনে হয়েছে বিধায় শেয়ার করি এবং আমল করি।
.......
--একদিন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেছিল "ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৫টি কাজ প্রতিরাতে করবে"
১..৪ হাজার দিনার সদকা করবে।
২..একটি কুরআন খতম করবে।
৩..জান্নাতের মূল্য পরিশোধ করবে।
৪..দুজন ব্যক্তি যদি দুজনের উপর রাগ করে থাকে তাইলে সেই রাগ ভাঙ্গিয়ে তাদেরকে খুশি করে তুলবে।
৫..একবার হজ্জ করবে, তারপর ঘুমাতে যাবে।
---হযরত আলী (রাঃ) তখন বললেন "হে রাসূলুল্লাহ! এটা তো মনে হচ্ছে অসম্ভব,আমি এই পাঁচটি কাজ কিভাবে করতে পারবো?
--তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন
১.. "সূরা ফাতিহা ৪বার পড়লেই চার হাজার দিনার সদকা করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে"
২.. "সূরা ইখলাস ৩বার পড়লে একটি কুরআন খতমের সাওয়াব পাবে"
৩.. "তিনবার যেকোনো একটি দরুদ শরীফ পড়বে, তাহলে জান্নাতের মুল্য পরিশোধ করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাওয়া যাবে। যেমন সবচেয়ে ছোট দরুদ শরীফ হচ্ছে "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম"
৪.."যেকোনো ইস্তাগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহ ১০বার পাঠ করলে দুজন অখুশি মানুষকে খুশি করার সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে"
৫.."সর্বশেষ কালেমা শাহাদত চারবার পাঠ করলে একটি হজ্জ সমপরিমাণ সাওয়াব পাওয়া যাবে"

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

লোকমুখে একটি বর্ণনার কথা শোনা যায়,
আলী রা.-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আলী! তুমি পাঁচটি কাজ না করে ঘুমাবে না। কাজ পাঁচটি হল :

১. চার হাজার দিনার ছদকা দিয়ে ঘুমাবে।

২. এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করে ঘুমাবে।

৩. জান্নাতের মূল্য দিয়ে ঘুমাবে।

৪. দু’ ব্যক্তির মাঝের বিবাদ মিটিয়ে ঘুমাবে।

৫. একটি হজ্ব আদায় করে ঘুমাবে।

এ কথা শুনে আলী রা. বললেন, আল্লাহর রাসূল! এ তো আমার জন্য দুঃসাধ্য কাজ। আমি কীভাবে এগুলো করতে পারি?

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

(১) ঘুমের সময় চার বার সূরা ফাতেহা পাঠ করলে তোমার আমলনামায় চার হাজার দিনার ছদকা করার সওয়াব লেখা হবে।

(২) তিন বার কুলহুওয়াল্লাহ সূরা পড়লে তোমার আমলনামায় এক খতম কুরআন পড়ার সওয়াব লেখা হবে।

(৩) তিন বার দরূদ শরীফ পাঠ করলে জান্নাতের মূল্য আদায় হয়ে যাবে।

(৪) দশবার ইসতেগফার পড়লে বিবাদ মিটানোর সওয়াব লাভ হবে।

(৫) চার বার কালেমায়ে তামজীদ পাঠ করলে এক হজ্বের সওয়াব পাওয়া যাবে।

একথা শুনে আলী রা. বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমি প্রতিদিনই এই আমল করে ঘুমাবো- ইনশাআল্লাহ!

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এটি একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে এ বর্ণনা নেই। এটি আরব-অনারব সকলের মাঝেই প্রসিদ্ধ।
কিন্তু এর দালীলীক কোনো ভিত্তি নেই। 

এ ধরনের ভিত্তিহীন বর্ণনা প্রচার করা গুনাহের কাজ। এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

কেননা মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।       
রাসূল সাঃ এর নামে মিথ্যা কথা বলার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী এসেছে হাদীসে। 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ»

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল।
 {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১২০০, মুসনাদে ইবনুল জিদ, হাদীস নং-১৪৮০, মুসনাদে দারেমী, হাদীস নং-৬১৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩}

عَنِ المُغِيرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ، مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ»

হযরত মুগীরা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল ইরশাদ করেছেন, আমার উপর মিথ্যারোপ করা অন্য কারো উপর মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল। 
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১২৯১, ১২২৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১২৭৬}

تذكرة الموضوعات لطاهر الفتّني: (ص: 8، ط: إدارة الطباعة المنيرية)
الثالث في كتب أحاديثها موضوعة في الكذابين.
في الخلاصة قال الشيخ قد صنف كتب في الحديث وجميع ما احتوت عليه موضوع كما مر من موضوعات القضاعي.۔۔۔. ومنها وصايا علي رضي الله عنه كلها موضوعة عنه سوى الحديث الأول وهو "أنت مني بمنزلة هارون من موسى غير أنه لا نبي بعدي"
সারমর্মঃ-
রাসুলুল্লাহ সাঃ আলি রাঃ কে ওছিয়ত করেছিলেন,এ মর্মে সমস্থ রেওয়ায়াতে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। 
তবে একটি রেওয়ায়াত ব্যাতিত,এই রেওয়ায়াত সহীহ। তাহা হলো,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলী (রাযিঃ) কে বলেছেনঃ তুমি আমার কাছে তেমন যেমন মূসা (আঃ) এর কাছে হারূন। তবে আমার পর আর কোন নাবী আসবেন না।

الأسرار المرفوعة لملا علي القاري: (ص: 371، ط: دار الکتب، بشاور)
وقد قال بعض المحققين إن وصايا علي المصدرة بياء النداء كلها موضوعة غير قوله عليه الصلاة والسلام
يا علي أنت مني بمنزلة هارون من موسى إلا أنه لا نبي بعدي.
সারমর্মঃ-
রাসুলুল্লাহ সাঃ আলি রাঃ কে ওছিয়ত করেছিলেন,এ মর্মে সমস্ত রেওয়ায়াত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। 
তবে একটি রেওয়ায়াত ব্যাতিত,এই রেওয়ায়াত সহীহ। তাহা হলো,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলী (রাযিঃ) কে বলেছেনঃ তুমি আমার কাছে তেমন যেমন মূসা (আঃ) এর কাছে হারূন। তবে আমার পর আর কোন নাবী আসবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকাল্লাহু খইরন কাসিরন উস্তায। আমি তো না জেনেই আমল করে ফেলেছি আর শেয়ারও করেছি। ইন শা আল্লাহ চেষ্টা করব এখন সঠিকটা জানানোর।
by
উস্তায ওছিয়তের বিষয় ছাড়া আমলগুলো এত সংখ্যকবার করলে যে ফজিলতের কথা বলা হয়েছে এগুলো কি আলাদাভাবে হাদিস দ্বারা প্রমাণিত? যেমন সূরা ইখলাসের তিনবার  তিলাওয়াত কুরআনুল কারীম একবার খতমের সমান এটা তো সঠিক। এটার মত বাকি আমলগুলো ঐ নির্দিষ্ট সংখ্যকবার আদায় করলে উল্লেখিত ফজিলত লাভ করা যাবে এ বিষয়গুলো কি সঠিক?
by (678,880 points)
সূরা ইখলাস তিনবার তিলাওয়াত করলে কুরআনুল কারীম একবার খতমের সমান ছওয়াব হবে, এটা সঠিক। 
বাকি আমলগুলো ঐ নির্দিষ্ট সংখ্যকবার আদায় করলে উল্লেখিত ফজিলত লাভ হবে,এধরণের কোনো হাদীস নেই।
সুতরাং বাকি আমল গুলি  ঐ নির্দিষ্ট সংখ্যকবার আদায় করলে উল্লেখিত ফজিলত পাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
by
শুকরিয়া উস্তায। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...