আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আমার বিয়ে হয়েছে দেড় বছর ধরে।আমার শশুরবাড়ির সাথে আমার বাবার বাড়ির ঝামেলা হয় স্বর্নের গহনা, উপহার, আপ্যায়ন এসব নিয়ে।আমার বাবা মা আমার শশুরবাড়ির কাওকে উপহার দেননি ইদের সময় ও আমাকে এবং কাওকেই পোশাক দেন না।আমার বাবা মায়ের আর্থিক সমস্যার কারণে উনারা উপহার দিতে পারেন না।অপরদিকে আমার শশুর শাশুড়ির মত হলো সামাজিকতা ও সুন্দর সম্পর্ক রক্ষা করার জন্য যত্ন করার জন্য আমার বাবা মার ছোট হলেও কিছু উপহার দেয়া উচিৎ। আমার বাবার বাড়ির রান্না আমার শশুর শাশুড়ি খেতে পারেন না তাদের অসুবিধা হয়।শশুর শাশুড়ীর অভিযোগ  আমার বাবা মা আমার যথাযথ খোজ খবর নেন না আমি অসুস্থ হলেও ব্যায়ভার বহন করেন না, জামাইকে ও তেদেরকে খেদমত করেন না।আমার বাবা মা এই বাসায় আসলে বা টেলিফোন করলে আমার শশুর শাশুড়ি উনাদের অপমান করেন।নানাবিধ কারণে আমার বাড়িতে আমার শশুর বাড়ির কেউ যান না এবং কোনো যোগাযোগ ও নেই দীর্ঘদিন ধরে।আমাকে শুধু ফোনে কথা বলার অনুমতি দিয়েছেন কিন্তু বাবার বাসায় যাওয়ার অনুমতি নেই।সেকারণে আমার বাবার বাসা অনেক কাছে থাকা সত্তেও আমি মা-বাবাকে দেখতে যেতে পারিনা।আমার বিয়ে মসজিদে হওয়ায় অন্য আত্নীয় স্বজন যেমন মামা চাচা খালা ফুপু দের সাথে ও পরিচয় আমার শশুরবাড়ির হয়নি,তাছাড়া উনারাও এসব ব্যাপারে উদাসীন।আল্লাহ তায়ালা আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে বলেছেন।

এমতাবস্থায় দুই বাড়ির সম্পর্ক রক্ষার্থে আমার কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/38201/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-

“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

ইফকের ঘটনায় মা আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট তার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি চাওয়ার হাদিস:
তিনি বলেন:
أتأذن لي أن آتي أبوي

“(হে আল্লাহর রাসূল,) আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন?” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)

لا يجوز للمرأة الخروج من بيت زوجها إلا بإذنه ، لا لوالديها ولا لغيرهم ؛ لأن ذلك من حقوقه عليها ، إلا إذا كان هناك مسوغ شرعي يضطرها للخروج

“কোন মহিলার জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েয নয়। পিতামাতা বা অন্য কারো নিকট নয়। কারণ এটি তার উপর স্বামীর হক। অবশ্য যদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ কোনো কারণ থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১৯/১৬৫)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
স্ত্রীর জন্য জরুরি হল, বিশেষ কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে স্বামীর নিকট অনুমতি নেয়া। স্বামী অনুমতি দিলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে এবং নিজেকে ফিতনা থেকে হেফাযতে রেখে স্ত্রী বাইরে যেতে পারে। দূরে কোথাও যাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই তার পিতা, ভাই ইত্যাদি মাহরাম পুরুষের সাথে যাবে। কিন্তু স্বামী যদি তাকে যেতে নিষেধ করে তাহলে স্ত্রীর জন্য তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। অন্যথায় সে স্বামীর ‘অবাধ্য’ হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহগার হবে।

তবে https://ifatwa.info/52907/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
স্বামীর জন্য জায়েজ নেই,যে সে তার স্ত্রীকে বাবা মার সাথে কথা বলা ও দেখা সাক্ষাৎ হতে নিষেধ করে।

স্ত্রীর জন্য তার বাবা মার সাথে সাক্ষাৎ করার ক্ষেত্রে বিধান হলো,যদি স্ত্রীর বাবা মা তার কাছে আসতে পারে।
তাহলে তারাই এসে দেখা করে যাবে।
আর যদি তাদের আসা অসম্ভব হয়,তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে এক দিন স্ত্রীকে তার বাবা মার সাথে সাক্ষাৎ এর জন্য যেতে দিতে হবে।
আসা যাওয়ার খরচ স্বামী বহন করবে।

যদি দূরে বাড়ি হয়,তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে না পাঠালেও মুনাসিব তথা উপযুক্ত সময় পর সাক্ষাৎ করার জন্য যেতে অনুমতি দিতে হবে।

বিস্তারিত জানতে উক্ত লিংক দ্রষ্টব্য।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা বাবার বাসা যদি কাছে হয় তথা সফরের দূরত্বে না হয় এবং দিনে গিয়ে দিনেই আসা সম্ভব হয়,আর আপনার বাবা মার আপনাকে দেখতে আসা অসম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে সপ্তাহে একবার দিনে গিয়ে দিনেই আসা আপনার জন্য জায়েজ।
এক্ষেত্রে স্বামী/ শশুর,শাশুড়ীর বাধা দেয়া জায়েজ নেই।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বামী/ শশুর,শাশুড়ী আপনাকে আপনার মা বাবার সাথে শুধুমাত্র কথা বলার অনুমতি দিয়েছে,এক্ষেত্রে আপনার পক্ষে যদি তাদের সাথে দেখা করার অনুমতি নেয়া সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে আপাতত ফোনে কথা বলেই আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখবেন,এরপর আস্তে-ধীরে স্বামীকে বুঝিয়ে মাঝে মাঝে দিনে গিয়ে দিনে আসার জন্য হলেও বাবার বাসায় যাওয়ার অনুমতি নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...