بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
**১. শিরক দুই প্রকার: এক.
শিরকে জলী, দুই.
শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে।
যেমন ইবাদত,
যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক,
তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা,
উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর
কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া,
গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী
মনে করা ইত্যাদি।
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন,
وَلَا تَدْعُ
مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ
إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ
لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107)
‘আল্লাহ ছাড়া এমন
কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা
তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে
নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন,
তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে
তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭)
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন,
فَابْتَغُوا
عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17)
‘আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭)
আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে
ইরশাদ করেছেন,
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ
لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: 5)
‘‘তার
চেয়ে অধিক ভ্রান্ত আর কে হতে পারে, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ছাড়া এমন সত্তাকে ডাকে যে সত্তা কেয়ামত
পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে না’’। (আহকাফ : ৫)
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
أَمَّنْ
يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ (النمل: 62)
‘‘বিপদগ্রস্ত
ব্যক্তির ডাকে কে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে ? আর কে তার কষ্ট দূর করে?’’
(নামল : ৬২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যেই সাহায্য চাওয়া আল্লাহর
সাথেই খাছ (নির্দিষ্ট), সেটি
গায়রুল্লাহ থেকে চাওয়া হারাম এবং শিরক।
মানুষ থেকে সাহায্য নেওয়া যেমন: রুগি ডাক্তার হতে , মালিক শ্রমিক হতে ইত্যাদি এগুলো শরীয়তে নিষেধ নয়। এগুলো
শিরক নয়। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি শিরক নয়।
**২.
https://ifatwa.info/6845/ নং
ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, ইসলামী শরীয়তে শিশুকে চান্দ্রমাসের হিসাবে
সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো
যাবে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ
الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ
اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ
মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে।
এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ
পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সূরা বাকারা- ২৩৩)
উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে
দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েয হবে না এবং সন্তানের জন্য উপকারী হবে না। কেননা যেটা সন্তানের
জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহু তাআলা বিধান দিয়েছেন। বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সন্তানকে দুধ
পান করানোর মেয়াদ চান্দ্র বছর হিসেবে দুই বছর।
কারন কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) আর মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই
বছর দুধ পান করাবে। (এ বিধান) তার জন্য যে দুধ পানের (মেয়াদ) পূর্ণ করতে চায়। -সূরা
বাকারা : ২৩৩
আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আর তার (সন্তান) দুধ ছাড়ানো হয় দু বছরে। -সূরা
লুকমান : ১৪
لو استغني في
حولین حل الإرضاع بعدہا إلی نصف ولا تأثم… ومستحب إلی حولین وجائز إلی حولین
ونصف۔ (شامي ۳؍۲۱۱ کراچی)
যদি কঠিন প্রয়োজনে দুই বছর পর দুধ পান করায়, তাহলে আড়াই বছরে আগ পর্যন্ত গুনাহ হবেনা।,,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন !
এই মাসয়ালা নিয়ে যেহেতু ইসলামী স্কলারদের মতবিরোধ রয়েছে, তাই
হুকুমের মধ্যে কিছুটা শিথিলতা চলে আসবে। সুতরাং যদি দুই বছরের
মধ্যে যদি বাচ্চাকে দুধ ছাড়ানো কোনোভাবেই সম্ভব না হয়,তাহলে
বিশেষ প্রয়োজনে তারপরেও দুধ পান করানো হলে সেটিকে হারাম বলা হবেনা। তবে কোনোভাবেই যেনো আড়াই বছর পার না হয়। আড়াই বছরের পর দুধ পান করা হারাম।
উল্লেখ্য
যে অনেকেই বলেছেন, দুই
বছরের পর সামান্য দুধ পান করানোও নাজায়েজ। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মায়ের দুধ
ব্যাতিত কৌটার দুধ বা অন্য কোনো খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ থাকবে।