আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম
মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন হলো ঃ
১.একজন মানুষ বেকার আছেন, তিনি তার আত্মীয় বা বন্ধু কে বললে হয়তো বা চাকুরীর ব্যবস্থা হয়ে যেতেও পারে কিন্তু তিনি ভয় পাচ্ছেন যে, এতে গুনাহ হতে পারে। কারণ হাদিসে পড়েছেন, মানুষের কাছে নিজের অক্ষমতা প্রকাশ কর‍তে নেই এবং সাহায্য চাইলে একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হয়। অন্যথায় শিরক হয়। এমতাবস্থায় কাউকে চাকুরীর প্রয়োজনীয়তার কথা বললে কি গুনাহ হব?

২. বাচ্চা যদি দুই বছর বয়স শেষ হওয়ার পরও মা কিছু দিন যদি বুকের দুধ পান করায় তাহলে কি হারাম হবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

**১. শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে।

যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন,

وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107)

আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭)

আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন,

فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17)

 আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭)

আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে ইরশাদ করেছেন,

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: 5)

‘‘তার চেয়ে অধিক ভ্রান্ত আর কে হতে পারে, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ছাড়া এমন সত্তাকে ডাকে যে সত্তা কেয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে না’’। (আহকাফ : ৫)

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,

أَمَّنْ يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ (النمل: 62)

‘‘বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির ডাকে কে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে ? আর কে তার কষ্ট দূর করে?’’ (নামল : ৬২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

যেই সাহায্য চাওয়া আল্লাহর সাথেই খাছ (নির্দিষ্ট), সেটি গায়রুল্লাহ থেকে চাওয়া হারাম এবং শিরক।

মানুষ থেকে সাহায্য নেওয়া যেমন: রুগি ডাক্তার হতে , মালিক শ্রমিক হতে ইত্যাদি এগুলো শরীয়তে নিষেধ নয়। এগুলো শিরক নয়। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি শিরক নয়।

**২.

https://ifatwa.info/6845/  নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, ইসলামী শরীয়তে শিশুকে চান্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ

মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সূরা বাকারা- ২৩৩)

উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েয হবে না এবং সন্তানের জন্য উপকারী হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহু তাআলা বিধান দিয়েছেন। বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সন্তানকে দুধ পান করানোর মেয়াদ চান্দ্র বছর হিসেবে দুই বছর।

কারন কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) আর মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে। (এ বিধান) তার জন্য যে দুধ পানের (মেয়াদ) পূর্ণ করতে চায়। -সূরা বাকারা : ২৩৩

আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আর তার (সন্তান) দুধ ছাড়ানো হয় দু বছরে। -সূরা লুকমান : ১৪

لو استغني في حولین حل الإرضاع بعدہا إلی نصف ولا تأثم… ومستحب إلی حولین وجائز إلی حولین ونصف۔ (شامي ۳؍۲۱۱ کراچی)

যদি কঠিন প্রয়োজনে দুই বছর পর দুধ পান করায়, তাহলে আড়াই বছরে আগ পর্যন্ত গুনাহ হবেনা।,,   

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন !

 এই মাসয়ালা নিয়ে যেহেতু ইসলামী স্কলারদের মতবিরোধ রয়েছে, তাই হুকুমের মধ্যে কিছুটা শিথিলতা চলে আসবে। সুতরাং যদি দুই বছরের মধ্যে যদি বাচ্চাকে দুধ ছাড়ানো কোনোভাবেই সম্ভব না হয়,তাহলে বিশেষ প্রয়োজনে তারপরেও দুধ পান করানো হলে সেটিকে হারাম বলা হবেনা। তবে কোনোভাবেই যেনো আড়াই বছর পার না হয়। আড়াই বছরের পর দুধ পান করা হারাম

উল্লেখ্য যে অনেকেই বলেছেন, দুই বছরের পর সামান্য দুধ পান করানোও নাজায়েজ। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মায়ের দুধ ব্যাতিত কৌটার দুধ বা অন্য কোনো খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...