আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,941 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম

১) শেষ বৈঠকে বসার নিয়ম কি ?

২)  আঙ্গুলি ইশারা করা নিয়ে যে মতভেদ হয়েছে তা কি সরাসরি হাদিসের কারণে নাকি ব্যাখার ভিন্নতার কারণে ? আর আঙ্গুলি ইশারা করার সঠিক নিয়ম কি ?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
নামাজে বৈঠকে বসার নিয়ম সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ
   
হযরত আয়েশা রা. বলেন,
كَانَ )رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-( يَقُولُ فِى كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى. أخرجه مسلم في باب صفة الصلاة (٤٩٨) وابن أبي شيبة، (٢٩٤٣)
অর্থ: তিনি ( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক দুই রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। এবং বাম পা বিছিয়ে দিতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন।

[মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪৯৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪৩; আবু দাউদ তায়ালিসী, হাদীস নং ১৬৫১, আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৩০৫০; মুসনাদে ইসহাক, হাদীস নং ১৩৩১, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২৪০৩০, ইবনে মাজাহ,হাদীস নং ৮৯৩; আবু দাউদ, হাদীস নং ৭৮৩; আবু আওয়ানা, হাদীস নং ২০০৪]

হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,
قدمت المدينة قلت لأنظرن إلى صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم فلما جلس يعني للتشهد افترش رجله اليسرى ووضع يده اليسرى يعني على فخذه اليسرى ونصب رجله اليمنى. أخرجه الترمذي(٢٩٢ )وقال حسن صحيح وابن أبي شيبة، (٢٩٤٢).

অর্থ: আমি মদীনা আসলাম, আর (মনে মনে) বললাম, আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায দেখবো। (তিনি বলেন), যখন তিনি বৈঠক করলেন, অর্থাৎ তাশাহহুদের জন্য তখন তাঁর বাম পা বিছিয়ে দিলেন, এবং তাঁর বাম হাত বাম উরুর উপর রাখলেন। আর ডান পা খাড়া রাখলেন।
[তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৯২; তিনি বলেছেন, এটি হাসান সহীহ। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪২; নাসাঈ, হাদীস নং ১১৫৯; সুনানে দারিমী, ১/৩১৪, মুসনাদে আহমদ, ৪/৩১৮, তাহাবী ১/১৫২; বায়হাকী, ২/১৩২]

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেছেন,
إنما سنة الصلاة أن تنصب رجلك اليمنى وتثنى اليسرى. أخرجه البخاري(٨٢٧) والنسائي(١١٥٧-١١٥٨) وابن أبي شيبة (٢٩٤٤).
অর্থ: নামাযে সুন্নত হলো ডান পা খাড়া রাখবে এবং বাম পা বিছিয়ে দেবে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৮২৭; নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং ১১৫৭, ১১৫৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৯৪৪।
নাসায়ী শরীফে বাম পায়ের উপর বসার কথাও বর্ণিত হয়েছে।

(০২)
নামাজে আত্তাহিয়্যাতু পড়তে পড়তে যখন “আশহাদু আল্লা..ইলাহা” পর্যন্ত পৌছবে তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা দ্বারা গোরক বানাবে, এবং শাহাদত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। “ইল্লাল্লাহ” বলার পর শাহাদত আঙ্গুলি নিচু করবে। তবে অন্য আঙ্গুলগুলো আপন অবস্থায় নামাযের শেষ পর্যন্ত থাকবে।

عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا قَعَدَ يَدْعُو وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ وَوَضَعَ إِبْهَامَهُ عَلَى إِصْبَعِهِ الْوُسْطَى وَيُلْقِمُ كَفَّهُ الْيُسْرَى رُكْبَتَهُ
হযরত আমের আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদ পড়ার জন্য বসতেন,তখন ডান হাতখানা ডান উরুর উপর এবং বাঁ হাতখানা বাঁ উরুর উপর রাখতেন। আর শাহাদত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। এ সময় তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলিকে মধ্যমার সাথে সংযুক্ত করতেন এবং বাঁ হাতের তালু [বাঁ] হাঁটুর রাখতেন। {সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১৩৩৬,সহীহ ইবনে হিব্বান-৫/২৭০}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ إِذَا جَلَسَ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَرَفَعَ إِصْبَعَهُ الْيُمْنَى الَّتِى تَلِى الإِبْهَامَ فَدَعَا بِهَا وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى بَاسِطُهَا عَلَيْهَا
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ নামায পড়ার সময় যখন বসতেন বৈঠক করতেন] তখন হাত দুইখানা দ্ইু হাঁটুর উপর রাখতেন। আর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববতী [শাহাদাত] আঙ্গুল উঠিয়ে ইশারা করতেন এবং বাঁ হাত বাঁ হাঁটুর উপর ছড়িয়ে রাখতেন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৩৩৭}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ إِذَا قَعَدَ فِى التَّشَهُّدِ وَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُمْنَى وَعَقَدَ ثَلاَثَةً وَخَمْسِينَ وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদের জন্য বসতেন, তখন বাম হাতকে রাখতেন বাম হাঁটুর উপর এবং ডান হাতখানা ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। আর [হাতের তালু ও আঙ্গুলসমূহ গুটিয়ে আরবী] তিপ্পান্ন সংখ্যার মত করে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। {সহীহ মুসলিম,হাদীস নং-১৩৩৮}

عن عبد الله بن الزبير أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يشير بأصبعه إذا دعا ولا يحركها
হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন তাশাহুদ পড়তেন,তখন আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন, কিন্তু আঙ্গুল নাড়াতেই থাকতেন না। {সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৯৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৯৮৯, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-১৫৯৪}


فالمراد وضع الاكف ثم قبض الاصابع بعد ذلك عند الاشارة وهو المروى عن محمد فى كيفية الاشارة، قال يقبض خنصره والتى تليها ويحلق الوسطى والابهام ويقيم المسبحة وكذا عن ابى يوسف فى الامالى (الى ان قال) وصفة الاشارة عن الحلوانى انه يرفع الاصبع عند النفى ويضعها عند الاثبات اشارة اليهما، (حلبى كبير-328)

 সারমর্মঃ আত্তাহিয়্যাতু পড়তে পড়তে যখন “আশহাদু আল্লা..ইলাহা” পর্যন্ত পৌছবে তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা দ্বারা গোরক বানাবে, এবং শাহাদত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। “ইল্লাল্লাহ” বলার পর শাহাদত আঙ্গুলি নিচু করবে। তবে অন্য আঙ্গুলগুলো আপন অবস্থায় নামাযের শেষ পর্যন্ত থাকবে।
,
★তবে অন্যান্য কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে আঙ্গুল নাড়ানো অবস্থায় রাখতে হবে।
তাদের এই মতটিও ছহীহ আছে। 
তাদের মতানুসারীগন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।
এতে কোনো সমস্যা নেই।        


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 53 views
...