আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
শায়েখ কয়েক দিন থেকে দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে মাথায় নানা রকমের চিন্তা ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। আমি একটু হেল্প চাইছি।
১. আমি চাকরী করি, বেতন কবে পাবো তাই নিয়ে চিন্তা করছিলাম  দিয়ে স্ত্রী হটাৎ জিজ্ঞাসা করলাম আজ ১০ তারিক হয়ে গেলো বলো,  আর ২০ দিন  । সঙ্গে সঙ্গে মনে তালাকের ভাবনা হয়ে জাই এত দিন পর তালাক এই ভাবনা মনে মনে হয়। সঙ্গে সঙ্গে উচ্চরণ করে বললাম আর ২০ দিন পর বেতন পাবো।
হুজুর উল্লেখিত প্রশ্ন অনুযায়ী তালাক হবে না তো? এমনি যে সময় ব্যাবহার করা হয়েছে বেতনের জন্য। দিয়ে মনে মনে যে ভাবনা হয়েছিল সেই সময় এর পর কোনো তালাক হবে না তো?
২. আজকে অফিস যাবনা তাই ভাবছিলাম আমার অফিস এর টাইম ১১ টা , দিয়ে স্ত্রী কে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবলাম , তাই স্ত্রী কে বললাম সিদ্ধান্ত নাও ১১ তার আগে। দিয়ে হটাৎ তালাকের ভাবনা চলে আসছে মাথায়। এর জন্য স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবে না তো??
৩.  এইখানে যেসব সংখ্যা প্রয়োজন এ  লিখছিলাম, বা প্রশ্ন করছিলাম তখন আমার মনে নানা  উল্টোপাল্টা ভাবনা হচ্ছিলো, আমি মন কে পাত্তা না দিয়ে প্রশ্ন করলাম এর জন্য কোনো তালাক হবে না তো??

৪. আমার স্ত্রী বলছে সে অন্য একটা জায়গাতে বেড়াতে যাবে, তাই আমার মনে হলো তাহলে তো পাসপোর্ট করতে হবে। তাই আমি বলছি স্ত্রী কে তাহলে আমরা ই করি চলো( পাসপোর্ট কথা টা বলতে গিয়ে মনে পড়ছে না । সঙ্গে সঙ্গে তালাকের ভাবনা চলে আসছে) দিয়ে স্ত্রী কে বললাম চলো পাসপোর্ট করি। এর জন্য কি সমস্যা হবে?

৫. অফিস যাবো স্ত্রী বলছে ডিমের ভাজা করে দিবো নাকি ভূজিয়া করে দিবো। আমার মনে সব সময় তালাকের  ভাবনা চলে আসছে । তাই ভয় হতে থাকলো কি বলবো ভয় হচ্ছে।   আমি বললাম তোমার যেটা টেস্টি মনে হচ্ছে সেটা করো । আমার মনে মনে তালাক এর অধিকার এর ভাবনা চলে আসছে। আমি এইগুলো ভাবতে ও চাইনা।
নরমালি স্ত্রীর গায়ে হাত দিলাম , দিয়ে মনে মনে তালাক এর ভাবনা হলো। স্ত্রীর গা থেকে হাত টা সরিয়ে নিলাম মনে মনে তালাক এর ভাবনা ছিল। আমি মুখে কোনো কথা বলিনি। শায়েখ কোনো তালাক হবে না তো?

** মুফতি আব্দুল ওয়াহিদ সাহেব plz আমাকে উত্তর দিয়ে সাহায্য করুন। আমাকে শুধু এইটুকু বলুন কোনো কি তালাক হবে? বা স্ত্রী কি কোনো তালাকের অধিকার পাবে?   আমি শান্তিতে আমার  দ্বীনের কাজ করতে পারি। ও চিন্তা মুক্ত ভাবে অফিস যেতে পারি। একটু এডিট করলাম।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

তালাকের কথা চিন্তা করল কিন্তু সে শব্দ করে উচ্চারন করল না, বা তার  জিহবা নড়ল না, অর্থাৎ সে মনে মনে বলল, তাহলে তালাক পতিত হবে না। কারণ শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

 

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية..

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

 

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

 

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )

 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো তালাক হবে না ইনশাআল্লাহ এবং স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেও না। তাই পেরেশানী করার কোনো কারণ নেই।

 

মুহতারাম!

ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়। কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।

 

আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন। যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে।

 

 বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না

 

এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন।

আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে।

আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন।

 

https://iom.edu.bd/course/waswasa/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...