ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الوائدة والموؤدة فِي النَّار
অর্থ: ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয় এবং যে মেয়েকে কবর দেয়া হয়, উভয়ই জাহান্নামী। (আবূ দাঊদ ৪০৯৪, সহীহুল জামি‘ ৭১৪২)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদিসের ব্যাখ্যায় আল্লাম ইবনুল কাইয়িম(রাহি.) লিখেছেন,
الجواب الصحيح عن هذا الحديث : أن قوله (إن الوائدة والموءودة في النار) جواب عن تينك الوائدة والموءودة ، اللتين سئل عنهما ، لا إخبار عن كل وائدة وموءودة ،
অর্থঃ এই হাদিস(জীবন্ত দাফনকারী নারী ও দাফনকৃত মেয়ে উভয় জাহান্নামী)-এর ক্ষেত্রে সঠিক উত্তর হল, এই কথা হাদিসের প্রশ্নকৃত দুই ব্যক্তির সম্পর্কে বলা হয়েছে। প্রত্যেক জীবন্ত দাফনকারী ও দাফনকৃত সম্পর্কে বলা হয়নি। (আহকামু আহলিল যিম্মা-২/৯৫)
এ কথা বলা সিদ্ধ যে, সেই প্রোথিত কন্যাটি বালেগা তথা প্রাপ্তবয়স্কা ছিল। আর এভাবেই এই হাদিসটির উপর উত্থাপিত অভিযোগ দূরীভূত হয়ে যায়। আল্লাহই সর্বাধিক অবগত’। (হাশিয়াতুল মিশকাত নং ৪০)
শায়েখ আযীম আবাদি(রাহি.) বলেন,
فلا يجوز الحكم على أطفال الكفار بأن يكونوا من أهل النار بهذا الحديث لأن هذه واقعة عين في شخص معين
অর্থঃ এই হাদিস দ্বারা এই কথা বলা শুদ্ধ হবে না যে, কাফির শিশুগন জাহান্নামী। কেননা, এ নির্দিষ্ট ঘটনাটি এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে বলা হয়েছে। (আউনুল মা’বুদ-১২/৩২২)
আল্লাহর রাসুল(ﷺ) কে ওহীর মাধ্যমে এই ঘটনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, এই অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুটি জাহান্নামী হবে। যেমন খিযির(আ.) এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুকে হত্যা করেছিলেন এইজন্য যে, তাকে ইলহামের (বা হতে পারে ওহীর) মাধ্যেমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই বালকটি তার পিতা-মাতাকে কুফরী করতে বাধ্য করবে, তাই তাকে হত্যা করতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
এখন একটি প্রশ্ন আসতে পারে, এই ছোট শিশুর তো কোন পাপ নেই তবে তাকে কিভাবে জাহান্নামে দেওয়া হবে?
আহলে সুন্নাতের অধিকাংশ অলেমদের মতে, অমুসলিমদের শিশুদেরকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন পরীক্ষা করবেন। যারা পরীক্ষায় পাস করবে তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে আর যারা পরীক্ষায় ফেল করবে তাঁরা জাহান্নামী হবে। এটাই শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়ার, ইবনুল কাইয়িম, ইবনে বাযের (রহিমাহুমুল্লাহ) মত। (দেখুনঃ মাজমুউল ফাতাওয়া ইবনে বায-২/৭১২)
এ থেকে বোঝা গেলো যে জাহান্নামী হবে সে মূলত নিজ আমলের জন্যই হবে। পরীক্ষায় পাস না করার জন্য হবে। বিনা দোষে নয়। আল্লাহ কারো উপর সামান্যতম অবিচারও করবেন না। এবং আল্লাহ সর্বোত্তম জানেন।