আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (17 points)
প্রিয় হযরত, আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমাকে এক বোন জিজ্ঞাসা করেছে, " মেয়েদের নাকি ছেলেদের বাম পাজরের হাড় দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি। এখন ঐ আপুর প্রশ্ন হচ্ছে-

১. আল্লাহ যদি সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেন, আর স্ত্রীকে স্বামীর বাম পাজরের হাড় দিয়ে করেন তাহলে যারা একাধিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন / একটা বিয়ের পরে সংসার ভেঙ্গে আরও ৩ টা সংসার হয়ে যায় , তাহলে কি ঐ মেয়েদের ঐ সব ছেলেদের পাজরের হাড় দিয়ে আল্লাহ বানিয়েছেন??
২. জান্নাতের মধ্যে ছেলেদের জন্য হুর আছে। কোনো মেয়ের স্বামী যদি জাহান্নামী হয় আর মেয়েটা যদি জান্নাতি হয় তাহলে তার বেলা কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?? আবার মেয়ে জাহান্নামে গেল স্বামী জান্নাতে তখন কি হবে?

৩. আল্লাহর নবী নাকি কুমারী মেয়ে বিবাহ করতে বলেছেন, তাহলে যারা ধর্ষিত হয়, তাদের বেলা কি হবে?
অনুগ্রহ করে উত্তর  গুলো জানাবেন ।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
সুরা নিসার ০১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اتَّقُوۡا رَبَّکُمُ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ وَّ خَلَقَ مِنۡہَا زَوۡجَہَا وَ بَثَّ مِنۡہُمَا رِجَالًا کَثِیۡرًا وَّ نِسَآءً ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ الَّذِیۡ تَسَآءَلُوۡنَ بِہٖ وَ الۡاَرۡحَامَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلَیۡکُمۡ رَقِیۡبًا ﴿۱﴾

হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফ্স থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক। 

সুরা যুমারের ০৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَأَنزَلَ لَكُم مِّنْ الْأَنْعَامِ ثَمَانِيَةَ أَزْوَاجٍ يَخْلُقُكُمْ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ خَلْقًا مِن بَعْدِ خَلْقٍ فِي ظُلُمَاتٍ ثَلَاثٍ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَأَنَّى تُصْرَفُونَ

তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে। অতঃপর তা থেকে তার যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তোমাদের জন্যে আট প্রকার চতুষ্পদ জন্তু অবতীর্ণ করেছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভে পর্যায়ক্রমে একের পর এক ত্রিবিধ অন্ধকারে। তিনি আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ? [ সুরা যুমার ৩৯:৬ ]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّهُنَّ خُلِقْنَ مِنْ ضِلَعٍ وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلَاهُ فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسْرَتَهُ وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নারীদেরকে সদুপদেশ দিবে। কারণ তাদেরকে পাঁজরের বাঁকা হাড় হতে সৃষ্টি করা হয়েছে, পাঁজরের হাড়ের মধ্যে সবচেয়ে বাঁকা (হাড়) হলো উপরেরটি। অতঃপর তুমি যদি ঐ হাড়কে সোজা করতে চেষ্টা কর, তবে তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি রেখে দাও, তবে সর্বদা বাঁকাই থাকবে। সুতরাং (আমার নাসীহাত) তোমরা নারীদেরকে সদুপদেশ দিবে।
(বুখারী ৫১৮৬, মুসলিম ১৪৬৮, ইরওয়া ১৯৯৭, সহীহ আত্ তারগীব ১৯২৭।)
,
عَنْ قَتَادَةَ قال " جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا قَالَ : خُلِقَتْ حَوَّاءُ مِنْ ضِلْعٍ مِنْ أَضْلاعِهِ لِيَسْكُنْ إِلَيْهَا .
"تفسير ابن أبي حاتم" (5/ 1631)
সারমর্মঃ  হাওয়া কে পাজড়ের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।

وعن مجاهد في قوله : ( وخلق منها زوجها ) قال: حواء، من قُصَيري آدم وهو نائم .
"تفسير الطبري" (7 /515)
সারমর্মঃ  হাওয়া আঃ  কে আদম আঃ এর  পাজড়ের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
যেই সময়ে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন।

ثم روى معناه عن ابن عباس والسدي وابن إسحاق .
وقال البغوي رحمه الله :
" خلق الله حواء من ضلع آدم "
"تفسير البغوي" (7 /186)

 : "تفسير ابن أبي حاتم" (12/ 410) ، "التحرير والتنوير" (4 /216) ، "فتح القدير" (2 /399) .
সারমর্মঃ আল্লাহ তায়ালা  হাওয়া কে আদম আঃ এর পাজড়ের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
"মেয়েদের নাকি ছেলেদের বাম পাজরের হাড় দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন"

একথা কুরআন হাদীসের কোথাও নেই।
শুধুমাত্র এতটুকু প্রমাণিত যে আল্লাহ তায়ালা  হাওয়া কে আদম আঃ এর পাজড়ের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন।

এখানে সমস্ত মেয়েরা উদ্দেশ্য নয়।

(০২)
মেয়ের স্বামী যদি জাহান্নামী হয় আর মেয়েটা যদি জান্নাতি হয় তাহলে সে অন্য জান্নাতি পুরুষ এর স্ত্রী হবে।

স্ত্রী জাহান্নামে গেলে স্বামী জান্নাতে গেলে তখন সে অন্য জান্নাতী নারীকে পাবে,যার স্বামী জাহান্নামে গিয়েছে।

(০৩)
রাসুলুল্লাহ সাঃ কুমারী মেয়েকে বিবাহ করতে উদ্ভুদ্ধ করেছেন,তবে কোনো বিধবা/তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিবাহ করতে নিষেধ করেননি।

সুতরাং যারা ধর্ষিতা হয়,তাদের যদি কোনো মুসলিম বিবাহ করে,এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...