আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in পবিত্রতা (Purity) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

আমি একটা বিষয় নিয়ে খুব লজ্জিতবোধ করছি। আমার পিরিয়ড শেষ হয়ে ফরজ গোসল করতে ১ দিন বাকী ছিলো। আমার স্বামী খুব করে চাচ্ছিলো সহবাস করতে। কিন্তু আমি ফরজ গোসল করিনি তখনো। যদিও ওই সময় পিরিয়ড বন্ধ ছিলো  ।  তেমন একদম ই হচ্ছিল না,  আর আমার স্বামী খুব করে চাওয়াতে তখনি সহবাস করে ফেলে।  এখন কাজের জন্য করণীয় কি.? এটা কত বড় গুনাহ হয়েছে.? এখন কি করতে হবে একটু বলে দিবেন প্লিজ

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/11302/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

২:২২২ وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ هُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَ لَا تَقۡرَبُوۡهُنَّ حَتّٰی یَطۡهُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَهَّرۡنَ فَاۡتُوۡهُنَّ مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ 

আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।

রক্ত বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হয়। দ্বিতীয় অর্থানুযায়ী স্ত্রী যতক্ষণ না গোসল করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করা হারাম থাকবে। ইমাম শাওকানী এটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। (ফাতহুল ক্বাদীর) আমাদের নিকট দু’টোই আমলযোগ্য, তবে দ্বিতীয়টি প্রাধান্য পাওয়ার অধিক যোগ্য।

যখন রক্ত আসা বন্ধ হয়। অর্থাৎ, গোসল ছাড়াই সে পবিত্র হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় পুরুষের জন্য তার সাথে (গোসলের পূর্বে) সহবাস করা জায়েয। ইবনে হায্ম এবং অন্য কিছু ইমামগণ এরই সমর্থক। আল্লামা আলবানীও এই মতের সমর্থন করেছেন। (আদাবুয্ যিফাফ ৪৭ পৃষ্ঠা)

হায়েজের সর্বোচ্চ সীমা ১০ দিনের মাথায় এসে যদি হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে। তবে সহবাস গোসল করার পরেই উত্তম।

আর যদি ইহার কম সময়ে হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে গোসল করার পর সহবাস জায়েজ আছে। অথবা এতটুকু সময় অপেক্ষা করবে,যার মধ্যে গোসল করে কাপড় পরিধান করে নামাজ শুরু করতে পারে। বা হায়েজে শেষ হওয়ার পর  নামাজের ওয়াক্ত চলে যায়,আর নামাজ তার যিম্মায় লাযেম তথা আবশ্যকীয় হয়ে যায়। (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১/২১১)

ویحل وطو ئھا اذا انقطع حیضھا لا کثرہ بلا غسل وجوباً بل ندباً الخ

الدر المختار علی ہامش ردالمحتارباب الحیض جلد اول ص ۲۷۱ ۔ط۔س۔ج۱ص۱۲۲۹۴ظفیر۔

সারমর্মঃ

যদি হায়েজের সর্বোচ্চ সীমার দিনে এসে হায়েজ বন্ধ হয়, তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে। এ সময় গোসল ওয়াজিব নয়, বরং মুস্তাহাব।

وان لاقلہ الخ لایحل حتی تغتسل او تیمم بشرطہ او یمضی علیھا زمن یسع الغسل ولبس الثیاب الخ (الدر المختار علی ہامش ردالمحتارباب الحیض ج۱ ص ۲۷۲۔ط۔س۔ج۱ص۲۹۴)ظفیر۔

সারমর্মঃ আর যদি তার আগেই হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে গোসল করা ব্যাতিত সহবাস জায়েজ নেই, অথবা এতটুকু সময় অপেক্ষা করবে,যার মধ্যে গোসল করে কাপড় পরিধান করে নামাজ শুরু করতে পারে।

وإن کان الانقطاع دون عادتہا وعادتہا دون العشر لایحل وطوٴہا وإن اغتسلت حتی تمضی عادتہا؛ لأن عود الدم غالب۔ (مجمع الأنہر)

সারমর্মঃ তার যদি অভ্যাসের দিনের আগেই হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কোনোভাবেই সহবাস জায়েজ নেই। তার অভ্যাসের দিন যাওয়া পর্যন্ত।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

সুতরাং যদি প্রতি মাসে অভ্যাস অনুযায়ী যেই নির্দিষ্ট দিন গুলো রয়েছে,এর আগেই যদি হায়েজ শেষ হয়ে যায়,তাহলে তো সেই নির্দিষ্ট দিন গুলো শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সহবাস কোনোভাবেই জায়েজ নেই। কারন পুনরায় হায়েজ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি উক্ত নির্দিষ্ট দিনে এসে হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তার অভ্যাস যদি ১০ দিনের কম হয়, তাহলে গোসল বা নামাজের এক ওয়াক্ত অতিক্রম করার আগ পর্যন্ত  সহবাস জায়েজ নেই। এতে গুনাহ হবে। এবং স্বীয় গোনাহের উপর অনুতপ্ত হয়ে ইস্তেগফার করলে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন বলে আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ।

হায়েজের সর্বোচ্চ সীমা ১০ দিনের মাথায় এসে যদি হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যতীতই সহবাস জায়েজ আছে। তবে সহবাস গোসল করার পরেই উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...