আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in সালাত(Prayer) by (8 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্

প্রথমেই বলে রাখি আমি বিতর্কের খাতিরে নয়, বরং জানার উদ্দেশ্যে প্রশ্নটা করেছি। আমি নিজেও একজন হানাফি মাজহাবের অনুসারী। আমার প্রশ্ন হল বিতর নামাজের তিন রাকাতের যেমন দলিল পাওয়া যায়, তেমনি এক রাকাতের স্পষ্ট হাদিস পাওয়ার পরও আমরা কেনো হানাফি মাজহাবে এক রাকাতের বিতরের নামাজকে নাজায়েজ বলে? প্রথমে আমি একরাকাতের হাদিসের রেফারেন্সগুলো নোট করতে চাই:

- তিনি বলেন, একবার মু’আবিয়াহ (রাঃ) ‘ইশার সলাতের পর এক রাক’আত বিতরের সলাত আদায় করেন। তখন তাঁর নিকট ইব্‌নু ‘আব্বাসের আযাদকৃত গোলাম হাযির ছিলেন। তিনি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করেন, তখন ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তাঁকে কিছু বলো না, কেননা, তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহচর্য লাভ করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৯)

- ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলা হল, আপনি আমীরুল মু’মিনীন মু’আবিয়াহ (রাঃ)-এর সঙ্গে এ বিষয় আলাপ করবেন কি? যেহেতু তিনি বিতর সলাত এক রাক’আত আদায় করেছেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি ঠিকই করেছেন, কারণ তিনি নিজেই একজন ফকীহ্। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯০)

- আবূ আইয়ূব আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলিমের উপর বিতর সলাত অপরিহার্য। সুতরাং কেউ ইচ্ছে হলে পাঁচ রাক’আত আদায় করবে, কেউ তিন রাক’আত আদায় করতে চাইলে সে তাই করবে এবং কেউ এক রাক’আত বিতর আদায় করতে চাইলে সে এক রাক’আত আদায় করবে। - সুনানে আবু দাউদ: ১৪২২

সুনানে আবু দাউদের হাদিসটা লক্ষ্য করলে দেখবেন স্পষ্ট এক রাকাতের বর্ণনা পাওয়া যায়। যা আরও উপরের দুই হাদিসের সাহাবীদের থেকেও প্রমাণিত। বিতর নামাজ নিয়ে আপনাদের পূর্বের একটি বিস্তারিত পোষ্টটি পড়েছি এই লিংক থেকে https://www.ifatwa.info/859 যেখানে আপনারা লিখেছেন "নামায সর্বনিম্ন দুই রাকাত। এর নীচে নামায নেই।" তাহলে তো আবু দাউদের হাদিসটি তা মিথ্যা প্রমাণ করে। এমনকি অনেক আলেমকে এমনও বলতে শুনেছি, হাদিসে ২+১ রাকাতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু হাদিসটিতে রসুল সা: বলেছেন কেউ যদি চাই পাঁচ, কেউ তিন, কেউ এক রাকাতও পড়তে পারবে। যত আলেমকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি সবাই যুক্তি দিয়ে এক রাকাতের হাদিসটি এড়িয়ে যেতে চাই। কারও কাছে এর যথাযথ উত্তর পাই না। নিশ্চয় এক রাকাতের হাদিস না নেওয়ার পেছনে পূর্বের ইমামদের কোনো যৌক্তিকতা রয়েছে। যা আপনাদের কাছে জানতে চাই। জাযাকাল্লাহু খাইরন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবূ আইয়ূব (রাঃ)থেকে বর্ণিত।
١٢٦٥ - وَعَنْ أَبِي أَيُّوبَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " «الْوَتْرُ حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ، فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِثَلَاثٍ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ» ". رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ، وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ. 
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ বিতরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) প্রত্যেক মুসলিমের আদায় করা অবশ্য কর্তব্য। তাই যে লোক বিতরের সালাত পাঁচ রাক্’আত আদায় করতে চায় সে যেন পাঁচ রাক্’আত আদায় করে। যে লোক তিন রাক্’আত আদায় করতে চায় সে যেন তিন রাক্’আত আদায় করে। আর যে লোক এক রাক্’আত আদায় করতে চায় সে যেন এক রাক্’আত আদায় করে। 
(আবূ দাঊদ ১৪২২, নাসায়ী ১৭১০, ইবনু মাজাহ্ ১১৯০, সহীহ আল জামি‘ ৭১৪৭, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৭৭৩)

মোল্লা আলী কারি রাহ মিরকাত কিতাবে উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন যে,
وَقَالَ أَبُو حَنِيفَةَ: لَا يَصِحُّ الْإِيتَارُ بِوَاحِدَةٍ، وَلَا تَكُونُ الرَّكْعَةُ الْوَاحِدَةُ صَلَاةً، وَالْأَحَادِيثُ الصَّحِيحَةُ تَرُدُّ عَلَيْهِ. اهـ. 
ইমাম আবু হানিফা রাহ এর মতে এক রা'কাত দ্বারা বিতির আদায় হবে না।কেননা সহীহে হাদীসে একাধিক রাকাত দ্বারা বিতির প্রমাণিত।

হাদীসে বর্ণিত এক রাকাত বিতিরের সমাধান কি?
এই প্রশ্নের জবাব দারুল উলূম দেওবন্দের একটি ফাতাওয়ায় বলা হয়

(فتوى: 345/د = 342/د)
حدیث مذکور میں پانچ رکعت کے ذریعہ وتر پڑھنے کا مطلب یہ ہے کہ پہلے دو رکعت سنت یا نفل پڑھ لے پھر تین رکعت وتر پڑھے۔ تین رکعت وتر ہوگی دو سنت یا نفل۔ اس جملہ کا یہی مطلب علماء نے بیان کیا ہے۔ حدیث مذکور کا اگلا جملہ کہ جو شخص تیں رکعت وتر پڑھنا چاہے تو ایسا بھی کرسکتا ہے یعنی ایک سلام سے ہمارے علماء احناف رحمہم اللہ یہی مطلب بیان کرتے ہیں اور اس کے جواز میں کسی امام کا بھی اختلاف نہیں ہے۔ البتہ امام شافعی رحمة اللہ علیہ کے یہاں تین رکعت فصل کرکے پڑھنا افضل ہے۔ حدیث مذکور کا تیسرا جملہ جو شخص ایک رکعت وتر پڑھنا چاہے تو ایسا بھی کرسکتا ہے۔ امام شافعی اور بعض دیگر ائمہ رحمہم اللہ کے نزدیک یہ درست ہے ہمارے علمائے احناف اس کا یہ مطلب بیان کرتے ہیں کہ دو رکعت پہلے پڑھ کر تیسری رکعت کے ذریعہ اس کو وتر بنالیا جائے کیونکہ نبی کریم صلی اللہ علیہ وسلم سے بُتیَراء نماز اور تنہا ایک رکعت نماز پڑھنے کی ممانعت صحیح احادیث سے ثابت ہے کہ ایک رکعت کوئی نماز نہیں ہوتی عن أبي سعید أن رسول اللّہ صلی اللہ علیہ وسلم نہی عن البتیراء أن یصلي الرجل واحدة یوتر بہا وعن ابن مسعود أنہ قال ما چزأت رکعة قط ایس لیے امام شافعی رحمة اللہ علیہ کے بہت سے اصحاب تنہا ایک رکعت کو مکروہ کہتے ہیں۔ پھر مذکورہ فی السوال حدیث پر موقوف اور مرفوع ہونے کے اعتبار سے بھی محدثین نے کلام کیا ہے۔ تفصیلی بحث کے لیے بذل المجہود کا مطالعہ فرمائیں۔ دیگر یہ کہ خود ابوداوٴد میں مذکور فی السوال حدیث کے بعد دو حدیثیں وتر کی تین رکعتیں ہونے کا ثبوت پیش کررہی ہیں، جس میں پہلی رکعت میں سورہٴ سبح اسم ربک الاعلی دوسری رکعت میں قل یا ایہا الکافرون تیسری رکعت میں قل ھو اللہ احد پڑھنے کا عمل آنحضرت صلی اللہ علیہ وسلم سے منقول ہے۔ ہذا یدل علی أنہ صلی اللہ علیہ وسلم یوتر بثلث رکعات بسلام واحد اور ایک روایت میں یہ صراحت بھی ہے کہ آپ صلی اللہ علیہ وسلم تیسری کے آخر ہی میں سلام پھیرتے تھے۔ لہٰذا تین رکعت وتر پڑھنا تمام ائمہ کے نزدیک بالاجماع جائز ہے۔ اور امام اعظم ابوحنیفہ رحمة اللہ علیہ کے یہاں واجب ہے اُن احادیث کی بنا پر جن میں آنحضرت صلی اللہ علیہ وسلم سے تین رکعتیں پڑھنا ثابت ہے، نیز ایک رکعت نماز کی ممانعت ثابت ہے۔

মর্মার্থ, এক রাকাত বিতিরের অর্থ হল, দুই রাকাত প্রথমে পড়ে তারপর রা'ফে ইয়াদাইন করে এক রাকাত মিলিয়ে বিতির পড়া।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/859


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...