আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
"হানাফি  ফিকহ অনুযায়ী পুর নামাজ বর্ণনা করলে আমার জন্য শুবিধা হত।কোথাও হাদিস অনুযায়ী সব গুল পাইনাই।সবগুল হাদিস অনুযায়ী বুঝায় দিলে শুবিধা হত।জাতে জানতে পারি জানাতে পারি। এখন থেকে হানাফি ফিখ নিয়ে পরাশুনা করব তাই"।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

নামাযের ফরয ১৩টি

নামাজের বাহিরে ৭ ফরজ।
১. শরীর পাক হওয়া। (সূরা মায়িদা আয়াত : ৬)

২. কাপড় পাক হওয়া। (সূরা মুদ্দাছ্ছির, আয়াত : ৪)

৩. নামাযের জায়গা পাক হওয়া। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)

৪. ছতর ঢাকা (অর্থাৎ পুরুষগণের নাভি হতে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত এবং মহিলাদের চেহারা, কব্জি পর্যন্ত দুই হাত এবং পায়ের পাতা ব্যতিরেকে সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা)। (সূরা  আ‘রাফ, আয়াত : ৩১)

৫. কিবলামুখী হওয়া। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৪৪)

৬. ওয়াক্তমত নামায পড়া। (সূরা নিসা আয়াত : ১০৩)

৭. অন্তরে নির্দিষ্ট নামাযের নিয়ত করা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১)

নামাজের ভিতরে ৬ ফরজ।

১. তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ শুরুতে আল্লাহু আকবার বলা। (সূরা মুদ্দাছছির, আয়াত : ৩)

২. ফরয ও ওয়াজিব নামায দাঁড়িয়ে পড়া।(সূরা বাকারা, আয়াত : ২৩৮)

৩. ক্বিরা‘আত পড়া (অর্থাৎ কুরআন শরীফ হতে ছোট এক আয়াত পরিমাণ পড়া।) (সূরা মুয্যাম্মিল ,আয়াত : ২০)

৪. রুকু করা। (সূরা হজ্জ, আয়াত : ৭৭)

৫. দুই সিজদা করা। (সূরা হজ্জ, আয়াত : ৭৭)

৬. শেষ বৈঠক (নামাযের শেষে তাশাহহুদ পরিমাণ বসা) (আবু দাউদ, হাদীস নং-৯৭০)

বি.দ্র. নামাযী ব্যক্তির নিজস্ব কোন কাজের মাধ্যমে (যেমন- সালাম ফিরানো) নামায থেকে বের হওয়াও একটা ফরয। (আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৫১৩)

নামাযের কোন ফরয বাদ পড়লে নামায বাতিল হয়ে যায়। সাহু সিজদা করলেও নামায সহীহ হয় না। (প্রমাণ : আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৫০৫ শামী, ১ : ৪৪৭/ হিদায়া, ১ : ৯৮)

নামাযের ওয়াজিব ১৪টি

১. সূরা ফাতিহা পূর্ণ পড়া। (বুখারী, হাদীস নং-৭৫৬)

২. সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য একটি সূরাহ বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ মিলানো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৭৭৬, মুসলিম, হাদীস নং-৪৫১)

৩.ফরযের প্রথম দুই রাক‘আতকে ক্বিরা‘আতের জন্য নির্দিষ্ট করা। করা। (বুখারী শরীফ, হা নং ৭৭৬/ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫১)

৪. সূরা ফাতিহাকে অন্য সূরার আগে পড়া। (তিরমিযি, হাদীস নং-২৪৬/ ত্বাহাবী, হাদীস নং-১১৭২)

৫.নামাযের সকল রোকন ধীর স্থিরভাবে আদায় করা। (অর্থাৎ রুকু, সিজদা এবং রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ও দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসে কমপক্ষে এক তাসবীহ পরিমাণ দেরী করা।) (আবু দাউদ, হাদীস নং-৮৫৬, ৮৫৭, ৮৫৮)

৬. প্রথম বৈঠক করা (অর্থাৎ তিন অথবা চার রাক‘আত বিশিষ্ট নামাযের দুই রাক‘আতের পর বসা)। (বুখারী, হাদীস নং-৮২৮)

৭. উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৮৩০, ৮৩১/ মুসলিম, হাদীস নং-৪০২, ৪০৩)

৮.প্রত্যেক রাক‘আতের ফরয এবং ওয়াজিবগুলোর তরতীব বা সিরিয়াল ঠিক রাখা। (তিরমিযী, হাদীস নং-৩০২)

৯. ফরয ও ওয়াজিবগুলোকে স্ব স্ব স্থানে আদায় করা। (যেমন দ্বিতীয় সিজদা প্রথম সিজদার সাথে করা। প্রথম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু শেষ করে ততক্ষণাৎ তৃতীয় রাকা‘আতের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি। (বাদায়িউস সানায়ে, ১ : ৬৮৯)

১০.বিতরের নামাযে তৃতীয় রাক‘আতে কিরাআতের পর কোন দু‘আ পড়া। অবশ্য দু‘আ কুনূত পড়লে ওয়াজিবের সাথে সুন্নাতও আদায় হয়ে যাবে। (নাসায়ী হাদীস নং-১৬৯৯/ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১১৮২/ ত্বহাবী, হাদীস নং-১৪৫৫)

১১. দুই ইদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বলা। (আবু দাউদ, হাদীস নং-১১৫৩)

১২. দুই ঈদের নামাযে দ্বিতীয় রাক‘আতে অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলার পর রুকুর জন্য ভিন্নভাবে তাকবীর বলা। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং-৫৭০৪/ মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৫৬৮৫)

বি.দ্র. এ তাকবীরটি অন্যান্য নামাযে সুন্নাত।

১৩. ইমামের জন্য যোহর, আসর এবং দিনের বেলায় সুন্নাত ও নফল নামাযে ক্বিরা‘আত আস্তে পড়া এবং ফজর, মাগরিব, ইশা, জুম‘আ, দুই ঈদ, তারাবীহ ও রমযান মাসের বিতর নামাযে ক্বিরা‘আত শব্দ করে পড়া। (মারাসীলে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১/ মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৫৭০০/ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং-৫৪৫২)

বি.দ্র. আস্তে পড়ার অর্থ মনে মনে নয়, কারণ তাতে নামায শুদ্ধ হয় না। বরং আওয়াজ না করে মুখে পড়া জরুরী।

১৪. সালাম-এর মাধ্যমে নামায শেষ করা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৯৯৬)

বি.দ্র.- উল্লেখিত ওয়াজিবসমূহের মধ্য হতে কোন একটি ভুলে ছুটে গেলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। সিজদায়ে সাহু না করলে বা ইচ্ছাকৃত কোন ওয়াজিব তরক করলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে। পুনরায় পড়া ওয়াজিব হবে। (প্রমাণ : শামী, ১৪ : ৪৫৬/ আলমগীরী, ১ : ৭১/ আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৫১০) 

নামাযের সুন্নাত সমূহ

১. উভয় পায়ের আঙ্গুলসমূহ কিবলামুখী করে রাখা এবং উভয় পায়ের মাঝখানে চার আঙ্গুল, ঊর্ধ্বে এক বিঘত পরিমাণ ফাঁকা রাখা।(নাসায়ী হাদীস নং- ৮৯২/ হিন্দিয়া, ১ : ৭৩)

২. তাকবীরে তাহরীমার সময় চেহারা কিবলার দিকে রেখে নজর সিজদার জায়গায় রাখা এবং হাত উঠানোর সময় মাথা না ঝুঁকানো।(তিরমিযী, হাদীস নং- ৩০৪/ মুস্তাদরাক, ১৭৬১)

৩. উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠানো। অর্থাৎ উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির মাথা কানের লতি পর্যন্ত উঠানো। (মুসলিম, হাদীস নং- ৩৯১)

৪. হাত উঠানোর সময় আঙ্গুলসমূহ ও হাতের তালু কিবলামুখী রাখা। (তাবরানী আউসাত, হাদীস নং- ৭৮০১)

৫. আঙ্গুলসমূহ স্বাভাবিকভাবে রাখা অর্থাৎ একেবারে মিলিয়েও না রাখা, আবার বেশি ফাঁক ফাঁক করেও না রাখা। (মুস্তাদরাক, হাদীস নং- ৮৫৬)

৬. ইমামের তাকবীরে তাহরীমা বলার পর সাথে সাথে মুক্তাদীর তাকবীরে তাহরীমা বলা। অবশ্য খেয়াল রাখতে হবে মুক্তাদীর তাকবীরে তাহরীমা যেন ইমামের তাকবীরে তাহরীমার পূর্বে শেষ না হয়। এরূপ হলে মুক্তাদীর নামায হবে না। (মুসলিম, হাদীস নং ৪১৪, ৪১৫/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৩৪)

৭. হাত বাঁধার সময় ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের (পাতার) উপর রাখা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭২৬/ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং- ৩৯৪২)

৮. ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠাঙ্গুলি দ্বারা গোলাকার বৃত্ত বানিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরা। (তিরমিযী, হাদীস নং- ২৫২/ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৮১১)

৯. অবশিষ্ট তিন আঙ্গুল বাম হাতের উপর স্বাভাবিকভাবে বিছিয়ে রাখা। (ফাতহুল কাদীর, ১ : ২৫০)

১০. নাভীর নীচে হাত বাঁধা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৫৬/ হিন্দিয়া, ১ : ৭৩)

১১. ছানা পড়া। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৭৫, ৭৭৬)

১. প্রথম রাকা‘আতে ছানা পড়ার পর পূর্ণ আ‘উযুবিল্লাহ পড়া। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৬৪/ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৮০৭)

২. প্রতি রাকা‘আতে সূরা ফাতিহা ও সূরা মিলানোর পূর্বে পূর্ণ বিসমিল্লাহ পড়া।(নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং- ৯০৫)

৩. সূরা ফাতিহার পর সকলের জন্য নীরবে ‘আমীন’ বলা।(সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং- ১২৫৬/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৮০)

৪. ফজর এবং যোহরের নামাযে ত্বিওয়ালে মুফাসসাল অর্থাৎ লম্বা ক্বিরা‘আত (সূরা ‘হুজুরাত’ থেকে সূরা ‘বুরূজ’ পর্যন্ত), আসর এবং ইশার নামাযে আউসাতে মুফাসসাল অর্থাৎ মধ্যম ক্বিরা‘আত (সূরা ‘ত্বরিক’ থেকে সূরা ‘লাম-ইয়াকুন’ পর্যন্ত) এবং মাগরিবে ক্বিসারে মুফাসসাল অর্থাৎ ছোট ক্বিরা‘আত (সূরা ‘ইযা-যুলযিলাত্’ থেকে সূরা ‘নাস’ পর্যন্ত) থেকে প্রতি রাকা‘আতে যে কোন একটি সূরা বা কোন কোন সময় বড় সূরা থেকে এ পরিমাণ ক্বিরা‘আত পড়া।(নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং- ৯৮৩/ মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ২৬৭২)

৫. ফজরের প্রথম রাক‘আত দ্বিতীয় রাক‘আত অপেক্ষা লম্বা করা। অন্যান্য ওয়াক্তে উভয় রাক‘আতে ক্বিরা‘আতের পরিমাণ সমান রাখা উচিত। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৪৫১, ৪৫২)

৬. ক্বিরা‘আত অত্যন্ত তাড়াতাড়ি বা একেবারে ধীর গতিতে না পড়া, বরং মধ্যম গতিতে পড়া। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৭৩৩)

৭.ফরয নামাযের তৃতীয় এবং চতুর্থ রাক‘আতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৭৬)

১.তাকবীর বলা অবস্থায় রুকুতে যাওয়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৮৯)

২. উভয় হাত দ্বারা হাঁটু ধরা।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৯০)

৩. হাতের আঙ্গুলসমূহ ফাঁক করে ছড়িয়ে রাখা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৩১)

৪. উভয় হাত সম্পূর্ণ সোজা রাখা, কনুই বাঁকা না করা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৩৪)

৫. পায়ের গোছা, হাঁটু ও উরু সম্পূর্ণ সোজা রাখা। হাঁটু সামনের দিকে বাঁকা না করা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৮৬৩)

৬. মাথা, পিঠ ও কোমর সমান রাখা, উঁচু-নীচু না করা এবং পায়ের দিকে নজর রাখা। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৪৯৮/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮২৮)

৭. রুকুতে কমপক্ষে তিনবার রুকুর তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল ‘আযীম) পড়া।(আবু দাউদ, হাদীস নং- ৮৮৯)

৮.রুকু হতে উঠার সময় ইমামের ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ এবং মুক্তাদীর ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ এবং একাকী নামায আদায়কারীর উভয়টি বলা।(আলমগীরী, ১ : ১২/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৭৮৯, ৭৩৩)

বি.দ্র. রুকু থেকে উঠে সম্পূর্ণ সোজা হয়ে এক তাসবীহ পরিমাণ স্থিরভাবে দাঁড়ানো জরুরী। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮০০, ৮০১, ৮০২)

১. তাকবীর বলা অবস্থায় সিজদায় যাওয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮০৩)

বি.দ্র. সিজদায় যাওয়া ও সিজদা হতে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর এক আলিফ থেকে অধিক টানা উচিত নয়। অবশ্য হদর এবং তারতীলের পার্থক্য থাকবে। (শামী, ১ : ৪৮০)

২. প্রথমে উভয় হাঁটু মাটিতে রাখা। (নাসায়ী, হাদীস নং- ১০৮৯/ আবু দাউদ, হাদীস নং- ৮৩৮)

৩. তারপর হাঁটু থেকে আনুমানিক এক হাত দূরে উভয় হাত রাখা এবং হাতের আঙ্গুলসমূহ কিবলামুখী করে সম্পূর্ণরূপে মিলিয়ে রাখা। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ১৮৮৮২/ সহীহ ইবনে খুযাইমাহ, হাদীস নং- ৬৪৩)

৪. তারপর উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলির মাথা বরাবর নাক রাখা।(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ১৮৮৮০)

৫. তারপর কপাল রাখা। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং- ১৮৮৮০)

৬. অতঃপর দুই হাতের মাঝে সিজদা করা এবং দৃষ্টি নাকের অগ্রভাগের দিকে রাখা। (মুসলিম, হাদীস নং- ৪০১/ মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং- ১৭৬১)

৭. সিজদায় পেট উরু থেকে পৃথক রাখা। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ২৩৬৬২/ আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭৩৫)

৮. পাঁজড়দ্বয় থেকে উভয় বাহু পৃথক রাখা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮০৭)

৯. কনুই মাটি ও হাঁটু থেকে পৃথক রাখা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮২২)

১০.সিজদায় কমপক্ষে তিনবার সিজদার তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা ) পড়া।

১১. তাকবীর বলা অবস্থায় সিজদা হতে উঠা। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮২৫)

১২. প্রথমে কপাল, তারপর নাক, তারপর উভয় হাত, তারপর উভয় হাঁটু উঠানো। (তিরমিযী, হাদীস নং- ২৬৮/ মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ২৯৫৮)

বি.দ্র.- দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় হাঁটু মাটিতে লাগার আগ পর্যন্ত বুক সম্পূর্ণ সোজা রাখা জরুরী। বিনা ওজরে বুক ঝুঁকিয়ে সিজদায় গেলে একাধিক রুকু হয়ে সুন্নাতের খেলাফ হবে। দু‘সিজদার মাঝে সম্পূর্ণ সোজা হয়ে এক তাসবীহ পরিমাণ স্থির হয়ে বসা জরুরী।(আবু দাউদ হাদীস নং- ৮৩৮/ শামী, ১:৪৬৪)

১. বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা। ডান পা সোজা ভাবে খাড়া রাখা। উভয় পায়ের আঙ্গুলসমূহ সাধ্যমত কিবলার দিকে মুড়িয়ে রাখা। (নাসাঈ, হাদীস নং- ১১৫৮)

২. উভয় হাত রানের উপর হাঁটু বরাবর করে রাখা এবং দৃষ্টি দুই হাঁটুর মাঝ বরাবর রাখা। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ১৬১০৬)

৩.‘আশ্হাদু’ বলার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলির মাথা এক সাথে মিলিয়ে গোলাকার বৃত্ত বানানো এবং অনামিকা ও কনিষ্ঠাঙ্গুলিদ্বয় মুড়িয়ে রাখা এবং ‘লা-ইলাহা’ বলার সময় শাহাদাত আঙ্গুল সামান্য উঁচু করে ইশারা করা। অতঃপর ‘ইল্লাল্লাহু’ বলার সময় আঙ্গুলের মাথা সামান্য ঝুঁকানো। হাঁটুর সাথে না লাগানো। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৭২৬/ নাসাঈ, হাদীস নং- ১২৭৪)

৪. আখেরী বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর দরূদ শরীফ পড়া। (তিরমিযী, হাদীস নং- ৩৪৭৭)

৫. দরূদ শরীফের পর দু‘আয়ে মাছুরা পড়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮৩৪/ তিরমিযী, হাদীস নং- ৫৯৩)

৬. উভয় দিকে সালাম ফিরানো। (তিরমিযী, হাদীস নং- ২৯৫)

৭. ডান দিকে আগে সালাম ফিরানো। উভয় সালাম কিবলার দিক থেকে আরম্ভ করা এবং সালামের সময় দৃষ্টি কাঁধের দিকে রাখা। (মুসলিম, হাদীস নং- ৫৮২)

৮. ইমামের উভয় সালামে মুক্তাদী, ফেরেশতা ও নামাযী জ্বিনদের প্রতি সালাম করার নিয়ত করা। (মুসলিম, হাদীস নং- ৪৩১)

৯. মুক্তাদীগণের উভয় সালামে ইমাম, অন্যান্য মুসল্লী, ফেরেশতা ও নামাযী জ্বিনদের প্রতি সালাম করার নিয়ত করা।(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ৩১৪৯, ৩১৫২)

১০. একাকী নামাযী ব্যক্তি শুধু ফেরেশতাগণের প্রতি সালাম করার নিয়ত করা। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ৩১৪০)

১১. মুক্তাদীগণের ইমামের সালাম ফিরানোর পরপরই সালাম ফিরানো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৮৩৮)

১২. দ্বিতীয় সালাম প্রথম সালাম অপেক্ষা আস্তে বলা।(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং- ৩০৫৭)

১৩. ইমামের দ্বিতীয় সালাম ফিরানো শেষ হলে মাসবূকের ছুটে যাওয়া নামায আদায়ের জন্য দাঁড়ানো। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ৩১৫৬)
(সংগৃহীত।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...