بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
নামাযে কেবলামুখী হওয়া (তথা
বাইতুল্লাহমুখী বা কাবামুখী হওয়া) নামাযের অন্যতম প্রধান ফরয। যারা বাইতুল্লাহ দেখতে
পাওয়া যায় এমন স্থানে নামায পড়েন তাদেরকে হুবহু বাইতুল্লাহ বা হুবহু কাবা শরীফ বরাবর
মুখ করে নামায আদায় করতে হয়। এটাকে বলা যায় ‘আইনে কেবলা’ (একেবারে সোজা কেবলা)।
তাদের জন্য সোজা কেবলামুখী-কাবামুখী হওয়া জরুরি। আর যেখান থেকে বাইতুল্লাহ দেখতে পাওয়া
যায় না এমন কোনো স্থানে কেউ নামায পড়লে (চাই বিশ্বের যেখানেই হোক না কেন) তার মুখ
হুবহু বাইতুল্লাহ বরাবর না হলেও চলে, তবে বাইতুল্লাহর বা কেবলার দিকের মধ্যে থাকতে হবে। একে
বলা হয় ‘জেহাতে কেবলা’। জেহাতে কেবলা অর্থ কেবলার দিক বা বাইতুল্লাহর দিক। এই ‘কেবলার
দিক’ বা ‘বাইতুল্লাহর দিক’ বলতে বোঝায় বাইতুল্লাহ যে বরাবর অবস্থিত তার থেকে ডান দিকে
৪৫ ডিগ্রী এবং বাম দিকে ৪৫ ডিগ্রী এই সর্বমোট ৯০ ডিগ্রী অঞ্চলকে। নামাযীকে অবশ্যই এই
৯০ ডিগ্রীর মধ্যে অভিমুখী থাকতে হবে। এর বাইরে অভিমুখী হয়ে গেলে নামায হবে না।
https://ifatwa.info/19450/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায
সহীহ হবার জন্য শর্ত। কিবলামুখী না হলে নামায শুদ্ধই হবে না।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
قَدْ نَرَىٰ
تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ
فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا
وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ
أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ
[٢:١٤٤]
নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার
আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ
করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক,
সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব,
তারা অবশ্যই জানে যে,
এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ
বেখবর নন, সে
সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}
★নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায সহীহ হবার জন্য শর্ত। কিবলামুখী
না হলে নামায শুদ্ধই হবে না। যারা সরাসরি কিবলা দেখতে পায় না,
তাদের জন্য যেহেতু সরাসরি বাইতুল্লামুখী
হওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদের জন্য আবশ্যক হল জিহাতে কিবলা তথা কিবলামুখী হওয়া। আর যারা
সরাসরি বাইতুল্লাহ দেখে তাদের জন্য সরাসরি বাইতুল্লাহমুখী হওয়া আবশ্যক। নামাযে কিবলামুখী হওয়া আবশ্যকীয়
বিষয়। এটি ছাড়া নামাযই শুদ্ধ হয় না। তাই নামায পড়ার সময় ভাল করে কিবলা দিক ঠিক করে
নেয়া জরুরী।
★
মসজিদ যদি বেঁকে গিয়ে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত
ঘুরে যায়, তাহলে
এইভাবে নামাজ হবেনা। এক্ষেত্রে নামাজের সময় সঠিক ভাবে কিবলার দিক মুখ করে কাতার সোজা
করা বাধ্যতামূলক। বা সঠিক দিক করে কাতারের দাগ দিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তির
দ্বারা মেপে নিতে হবে।
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
https://ifatwa.info/4942/
★তার পরেও কিবলার দিক জানা যদি সম্ভব না হয়,তাহলে আপনিই বাহিরে তাকিয়ে চাঁদ সূর্যের দিক ইত্যাদির
দিক লক্ষ্য করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন,
তার পরেও কিবলার দিক জানা সম্ভব না হলে চিন্তা ফিকির করে যেই দিকে মনের প্রবল ধারনা
হয়,সেই দিক হয়েই নামাজ
আদায় করবেন।
وإن اشتبہت
علیہ القبلة ولیس بحضرتہ من یسألہ عنہا اجتہد وصلی فإن علم أنہ اخ۔أ بعد ما صلی لا
یعیدہا․ (الہندیة: ۱/۶۴)
সারমর্মঃ তার কাছে যদি জেনে
নেওয়ার মতো কেউ না থাকে,তাহলে
ইজতিহাদ করে নামাজ পড়বে,পরবর্তীতে
এই নামাজ আর পড়তে হবেনা।
من أخطأ جهة
القبلة صحيحة لا تلزمه إعادتها إن اجتهد فأداه اجتهاده إلى تلك الجهة. وأما إن صلى
بغير اجتهاد أو أمكنه السؤال عن جهة القبلة فلم يفعل فعليه الإعادة. جاء في
الاختيار قال : وإن اشتبهت عليه القبلة وليس له من يسأل اجتهد وصلى، ولا يعيد وإن
أخطأ. لما روي أن جماعة من الصحابة اشتبهت عليهم القبلة في ليلة مظلمة، فصلى كل
واحد منهم إلى جهة وخط بين يديه خطا، فلما أصبحوا وجدوا الخطوط إلى غير القبلة،
فأخبروا بذلك رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال : تمت صلاتكم . وفي رواية : لا
إعادة عليكم
সারমর্মঃ ইজতিহাদ,
চিন্তা ফিকির করে কিবলার দিক ধরে নিয়ে
নামাজ নামাজ আদায়ের পর যদি সেই দিক ভূল হয়ে থাকে,তাহলে পরবর্তীতে এই নামাজ আর পড়তে হবেনা।
তবে যদি ইজতিহাদ,
চিন্তা ফিকির করা ছাড়া,
অথবা কাহারো থেকে জেনে নেওয়া সম্ভবপর হওয়া
সত্ত্বেও না জেনে নিয়ে নামাজ পড়ে, তাহলে (ভুল হলে) সেই নামাজ পরবর্তীতে আবার আদায় করতে হবে।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি ইজতিহাদ,
চিন্তা ফিকির করা ছাড়া,
অথবা কাহারো থেকে জেনে নেওয়া সম্ভবপর হওয়া
সত্ত্বেও না জেনে নিয়ে নামাজ পড়ে থাকেন, তাহলে উক্ত নামাজ কাযা করে নিবেন। অন্যথায় নয় কাযা করা
লাগবে না।
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি আপনি সোজা কেবলা দিক থেকে ২০-৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত
ঘুরে যান তাহলে আপনার নামাজ সহিহ হবে সেক্ষেত্রে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করার
কোন প্রয়োজন নেই।