জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তে ঈমানের পরই নামাযের স্থান এবং তা ইসলামের স্তম্ভ ও বড় নিদর্শনের একটি। পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদায় করা ফরয। কখনো কোনো ওয়াক্তের ফরয নামায ছুটে গেলে কিংবা দীর্ঘকাল অবহেলাবশত নামায না পড়লে পরবর্তীতে এর কাযা আদায় করতে হবে। এ বিষয়টি সহীহ হাদীস, আছারে সাহাবা ও ইজমায়ে উম্মত দ্বারা প্রমাণিত।
এখানে কাযা আদায়ের বিধানটি শুধু ঘুম ও বিস্মৃতি এই দুই অবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। বরং অবহেলাবশত ছেড়ে দিলেও কাযা জরুরি।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى
অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২)
ওমরি কাজা আদায় সহজের লক্ষ্যে উলামায়ে কেরামগন এর পদ্ধতি বলেছেনঃ
এখন একটি হিসেব কষতে হবে যে জীবনে বালেগ/বালেগাহ (মনে না থাকলে ১৫ বছর বয়স থেকে হিসেব করতে হবে)
হওয়ার পর সর্বমোট কত ওয়াক্ত নামাজ কাজা হয়েছে।
,
যদি স্পষ্ট মনে না আসে,তাহলে প্রবল ধারনার ভিত্তিতে একটি হিসেব কষতে হবে।
দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ এবং বিতর মোট ৬ ওয়াক্ত নামাজের হিসেব বের করতে হবে।
প্রতি নামাজের হিসেব লিখে প্রতিদিন সময় বের করে তার কাজা আদায় করবে।(নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত)
,
এই ভাবে মনে মনে নিয়ত করবে যে আমার জীবনের ১ম ফজরের নামাজ যেটার কাজা আমি আদায় করিনি,সেটা আদায়ের নিয়ত করছি।
আমার জীবনের ১ম জোহরের নামাজ যেটার কাজা আমি আদায় করিনি,সেটা আদায়ের নিয়ত করছি,,,,,।
,
এবং সাথে সাথে নির্দিষ্ট ওয়াক্তে নামাজ আদায় না করার কারনে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে।
আরো জানুনঃ
,
(০২)
জায়েজ আছে।
,
(০৩)
এক হাতের মধ্যে যতটুকু স্থান,তাকে অঞ্জলি বলে।
দুই হাত একত্রে করলে যে অঞ্জলি গঠিত হয়।
তাকেও অনেকে অঞ্জলি বলে।
,
শীতকালে শুষ্কতার কারণে চামড়ার ভাঁজে সহজে পানি পৌঁছে না। পা ভিজিয়ে নিলে ধোয়া সহজ হয়। তাই সতর্কতামূলক আগে পা ভিজিয়ে নেওয়া বা পানি ছিটিয়ে দেওয়া ভালো। এতে দোষের কিছু নেই।
-বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯; ইলাউস সুনান ১/১৩৩; রদ্দুল মুহতার ১/১৩১)
,
(০৪)
শরীয়তের বিধান হলো বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছেলে সন্তানের ভরনপোষণ পিতার উপর ওয়াজিব।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার ভাই যদি তার প্রতি দয়া করা তার খরচ দেয়,তাহলে তার জন্য এটি গ্রহন জায়েজ।
তবে এর জন্য ভাইয়ের উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করা যাবেনা।
কারন এটি তার অধিকার নয়।
তারা দিলে সেটি ইহসান হবে।
আরো জানুনঃ
(০৫)
কোনো জিন যদি সব ধরনের ভাষা শিখে,তাহলে সব ধরনের ভাষা বুঝবে।
,
(০৬)
কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম।
এটি মাখলুক নয়।
وإن القرآن کلام اللہ، منہ بدا بلا کیفیة
قولاً وأنزلہ علی رسولہ وحیاً وصدقہ الموٴمنون علی ذلک حقاً وأیقنوا أنہ کلام اللہ تعالی بالحقیقة لیس بمخلوق ککلام البریة (العقیدة الطحاویة، ص: ۱۲)،
সারমর্মঃ কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম
والقرآن کلام اللہ تعالی غیر مخلوق (العقائد النسفیة مع شرحھا للتفتازاني، ص: ۴۶)
কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম। মাখলুক নয়।
,
(০৭)
নাপাকি অবস্থায় বিনা প্রয়োজনে এক মুহুর্তও অপেক্ষা করা ঠিক নয়।
এর জন্য এক ওয়াক্ত নামাজের প্রশ্নে উল্লেখিত মত আমরা পাইনি।
,
(০৮)
তার যদি শরীর,কাপড় পাক থাকে,তাহলে সে নামাজ পড়তে পারবে।
,
(০৯)
বার্ধক্য বলতে আসলে আমাদের দেশে ৬০/৬৫+ কে বুঝায়।
এর জন্য শারীরিক দূর্বলতা বলতে যেটা বলা হয়,সেটা হলো শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলো আস্তে আস্তে কাজ করা কমে দেয়।
,
(১০)
আল্লাহ তা’আলা বলেন
, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ.
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং যারা (কথা ও কাজে) সত্যবাদী তাদের সঙ্গে থাকো। (সূরা তাওবা :১১৯)
সদিকীন বলে কারা উদ্দেশ্য? আল্লাহ তা’আলা সূরা হুজরাতে সদিকীনদের পরিচয় দিচ্ছেন,
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ.
মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে অতপর কোনরূপ সন্দেহ পোষণ করেনি এবং নিজের সম্পদ ও নিজের জান দিয়ে আল্লাহর পথে জেহাদ করেছে। তারাই হল সাদিকীন-(কথা ও কাজে) সত্যবাদী। (সূরা হুজুরাত: ১৫)
অন্য আরও কিছু আয়াতে সাদিকীনের পরিচয় এসেছে, যেমন, সূরা আহযাবে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُم مَّن قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا لِيَجْزِيَ اللَّهُ الصَّادِقِينَ بِصِدْقِهِمْ وَيُعَذِّبَ الْمُنَافِقِينَ إِن شَاء أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا.
মুমিনদের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছে। তাদের কেউ কেউ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ (শাহাদাত লাভের) প্রতীক্ষায় রয়েছে। আর তারা (তাদের সংকল্প) মোটেই পরিবর্তন করেনি। এটা এজন্য যেন আল্লাহ, সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতার কারণে প্রতিদান দেন এবং মুনাফেকদেরকে চাইলে শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা আহযাব: ২৩,২৪)