আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (34 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) একজন ছেলেকে ফরজ ইসলামিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়। এখন এখানে ফরজ ইসলামিক জ্ঞান বলতে মূলত কোন কোন বিষয়গুলোকে বুঝানো হচ্ছে? 


২) যে স্ত্রী তার স্বামীর অবাধ্যচরণ করে তার বাধ্য না হওয়া পর্যন্ত তার নামায কবুল হয় না। আস-সিললাতুস সহীহাহ্-২৮৮।  এ কথাটি কি সত্য?  


৩) বর্তমানে অনেক মানুষ রয়েছে যারা পবিত্রতা এবং ফরয গোসল সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা তাদের অজ্ঞতার কারণে পবিত্রতার অনেক বিষয়ে সম্পর্কে জানে না। এ ধরনের মানুষের নামায হয়?

আর এ ধরনের মানুষ ঘরে থাকলে তাদের নাপাক হিসেবে ধরতে হয়? 

বিঃদ্রঃ অনেক মানুষ ভুল জানে পবিত্রতার ব্যাপারে এবং অনেক মানুষ জানার পরেও মানতে  চায় না সেভাবে।  এদের বিধান কি?


৪) নখ কি রাতেও কাটা যায়? 

 

৫) কাউকে ভালো থাকিস বললে কি ইমান চলে যায়? 

 

৬) আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পেলে কি ইমান চলে যায়?  বা ভয়ের ব্যাপারটা অন্য কারো ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে যেমন কেউ অন্যজনকে ভয় পাচ্ছে তাহলে কি ইমান চলে যায়? 



 

জাযাকাল্লাহু খাইরান 

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হযরত আনাস ইবনে মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ

ﻋﻦ ﺃﻧﺲ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲِّ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻠﻴﻪِ ﻭﺳﻠَّﻢ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝَ : ( ﻃَﻠَﺐُ ﺍﻟﻌِﻠْﻢِ ﻓَﺮِﻳْﻀَﺔٌ ﻋَﻠَﻰْ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ) . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ( 224 ) .

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’ইলম বা জ্ঞানার্জন (দ্বীনি জ্ঞানার্জন) করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয। 
(ইবনু মাজাহ্ ২২৪, সহীহুল জামি‘ ৩৯১৩, য‘ঈফুল জামি‘ ৩৬২৬, বায়হাক্বী ১৫৪৪,মিশকাত ২১৮।)
,
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ-

وَفَرْضٌ عَلَى كُلِّ مُكَلَّفٍ وَمُكَلَّفَةٍ بَعْدَ تَعَلُّمِهِ عِلْمَ الدِّينِ وَالْهِدَايَةِ تَعَلُّمُ عِلْمِ الْوُضُوءِ وَالْغُسْلِ وَالصَّلَاةِ وَالصَّوْمِ، وَعِلْمِ الزَّكَاةِ لِمَنْ لَهُ نِصَابٌ، وَالْحَجِّ لِمَنْ وَجَبَ عَلَيْهِ وَالْبُيُوعِ عَلَى التُّجَّارِ لِيَحْتَرِزُوا عَنْ الشُّبُهَاتِ وَالْمَكْرُوهَاتِ فِي سَائِرِ الْمُعَامَلَاتِ. وَكَذَا أَهْلُ الْحِرَفِ،

প্রত্যেক মুকাল্লাফ-মুকাল্লাফাহ(আক্বেল-বালেগ নর-নারী)এর উপর দ্বীনের প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জনের পর ফরয হচ্ছে,ওজু,গোসল,নামায এবং রোযা,এর জ্ঞান অর্জন করা।
এবং নেসাবপ্রাপ্ত মালের মালিকের উপর যাকাতের জ্ঞান অর্জন করা।
এবং যার উপর হজ্ব ফরয,তার জন্য হজ্বের বিধি-বিধান অর্জন করা।
এবং ব্যবসায়ীদের উপর ব্যবসা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করা।এজন্য ফরয,যাতে তারা উক্ত বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন অস্পষ্টতা,সন্দেহ ও অপছন্দনীয় দিবসসমূহ থেকে অনায়াস বেছে থাকতে পারে।ঠিকতেমনিভাবে পেশাজীবীদের জন্য সংশ্লিষ্ট পেশা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ফরয।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
ফরজে আইন ইলম হলোঃ 
আল্লাহর ফরয হুকুমকে ঠিক ঠিক ভাবে অনুসরণ করতে এবং নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বাঁচতে যত বিষয় সম্পর্কে যতটুকু ইলমের প্রয়োজন ততটুকু ইলম শিক্ষা ফরয।যেমন,নামায আল্লাহর ফরয বিধান,নামায পড়ার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত।তাই পবিত্রতার ইলম অর্জন ফরয।ঠিকতেমনি কেরাত ফরয, তাই কেরাত শিক্ষা ফরয।ঈমান আনয়নের জন্য শিরক মুক্ত হয়ে মনেপ্রাণেএকমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করা ও তার বিধি-বিধান কে মান্য ফরয।তাই এ সম্পর্কীয় ইলম অর্জন ফরয।এবং রোযা আল্লাহর ফরয বিধান।রোযা রাখতে হলে তার করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।অর্থাৎ যতটুকু ইলম হলে রোযাকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়,ততটুকু পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।ইত্যাদি ইত্যাদি।

আরো জানুনঃ

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

رواه الحاكم في "المستدرك" (7330) عن ابن عمر رضي الله عنهما، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اثنان لا تجاوز صلاتهما رءوسهما: عبد آبق من مواليه حتى يرجع، وامرأة عصت زوجها حتى ترجع  وصححه الألباني في صحيح الجامع برقم 136

রাসূল (ছাঃ) বলেন, দু’জন ব্যক্তির ছালাত তার মাথা অতিক্রম করবে না (কবুল হবে না)। (১) যে দাস তার মালিক হ’তে পলায়ন করেছে যতক্ষণ না সে ফিরে আসে। (২) অবাধ্য স্ত্রী যতক্ষণ না সে আনুগত্যে ফিরে আসে (হাকেম হা/৭২৩০; ছহীহাহ হা/২৮৮; ছহীহুত তারগীব হা/১৮৮৮)। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
অবাধ্য স্ত্রীর নামাজ কবুল হবে না মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। 
তবে সে যদি তওবা করে আবার আনুগত্য ফিরে আসে, তাহ’লে কবুল হবে।

قال المناوي في فيض القدير (1/ 150): " (امرأة عصت زوجها) بنشوز، أو غيره مما يجب عليها أن تطيعه، فلا تُرفع صلاتها كما ذُكر، (حتى ترجع) إلى طاعته فإباقه ونشوزها بلا عذر كبيرة. قالوا: ولا يلزم من عدم القبول عدم الصحة، فالصلاة صحيحة لا يجب قضاؤها، لكن ثوابها قليل أو لا ثواب فيها. أما لو أبق لعذر كخوف قتل أو فعل فاحشة أو تكليفه على الدوام ما لا يطيقه، أو عصت المرأة بمعصية ، كوطئه في دبرها أو حيضها، فثواب صلاتهما بحاله ، ولا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى.
সারমর্মঃ-
ইমাম মুনাবী রহঃ বলেন, এখানে নামাজ কবুল না হওয়া দ্বারা নামাজই সহীহ হবেনা বিষয়টি এমন নহে। নামাজ সহীহ হয়ে যাবে,তার কাজা আবশ্যক হবেনা। তবে ছওয়াব কম হবে অথবা ছওয়াবই হবেনা।

(০৩)
তারা অপবিত্র অবস্থায় বা এক দিরহাম হতে বেশি পরিমান নাপাকি লাগা কাপড়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবেনা।

(০৪)
হ্যাঁ, নখ রাতেও কাটা যায়।
এতে শরীয়তের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

(০৫)
না,এতে ঈমান চলে যায়না।

(০৬)
এতে ঈমান চলে যায়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...