আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
770 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (65 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।

কি কি বিষয়ে ইলম অর্জন করা ফরয?

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
 الجواب باسم ملهم الصواب 
بسم اللّٰه الرحمن الرحيم ، 

 জ্ঞানার্জন সম্পর্কে অসংখ্য আয়াত এবং হাদীসে তাগিদ এসেছে। আপাতত আপনাদের সামনে একটি হাদীস উল্লেখ করছি।  হযরত আনাস ইবনে মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ
 ﻋﻦ ﺃﻧﺲ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲِّ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻠﻴﻪِ ﻭﺳﻠَّﻢ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝَ :  ﻃَﻠَﺐُ ﺍﻟﻌِﻠْﻢِ ﻓَﺮِﻳْﻀَﺔٌ ﻋَﻠَﻰْ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ 
জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।)(সুনানু ইবনি মা’জা-২২৪)
 

এখন প্রশ্ন হল কতটুকু জ্ঞানার্জন একজন মুসলমানের উপর ফরয? 

  • এ সম্পর্কে ইবনে আবেদীন শামী রাহ.বলেনঃ
 لَا شَكَّ فِي فَرْضِيَّةِ عِلْمِ الْفَرَائِضِ الْخَمْسِ وَعِلْمِ الْإِخْلَاصِ؛ لِأَنَّ صِحَّةَ الْعَمَلِ مَوْقُوفَةٌ عَلَيْهِ وَعِلْمِ الْحَلَالِ وَالْحَرَامِ وَعِلْمِ الرِّيَاءِ؛ لِأَنَّ الْعَابِدَ مَحْرُومٌ مِنْ ثَوَابِ عَمَلِهِ بِالرِّيَاءِ، وَعِلْمِ الْحَسَدِ وَالْعُجْبِ إذْ هُمَا يَأْكُلَانِ الْعَمَلَ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ، وَعِلْمِ الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ وَالنِّكَاحِ وَالطَّلَاقِ لِمَنْ أَرَادَ الدُّخُولَ فِي هَذِهِ الْأَشْيَاءِ 
দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ফারাইয(ভিত্তি) তথা কালেমা,নামায,রোযা,হজ্ব,যাকাত সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন ফরয। এতে কোনো প্রকার সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা উপরোক্ত ফারাইযের উপর আমল করা সে সম্পর্কে জানাশোনা এবং হালাল-হারাম ও রিয়া সম্পর্কে জানাশোনার উপর নির্ভরশীল। কারণ এবাদত কারী রিয়ার কারণে তার কৃত আমলের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। এবং হিংসা-নিন্দা ও অন্যর ভালোতে অপচন্দনীয় মনোভাব সবই আ'মলের সওয়াব বিনষ্টকারী।এমনভাবে যে,যেমনভাবে আগুন লাকড়িকে জ্বালিয়ে দেয়। এবং ক্রয়-বিক্রয় ও বিবাহ-তালাকে প্রবেশকারী ব্যক্তিবর্গের জন্য সে সম্পর্কে জ্ঞানার্জন ফরয। 
  • তিনি আরো বলেনঃ-
 وَعِلْمِ الْأَلْفَاظِ الْمُحَرَّمَةِ أَوْ الْمُكَفِّرَةِ، وَلَعَمْرِي هَذَا مِنْ أَهَمِّ الْمُهِمَّاتِ فِي هَذَا الزَّمَانِ؛ لِأَنَّك تَسْمَعُ كَثِيرًا مِنْ الْعَوَّامِ يَتَكَلَّمُونَ بِمَا يُكَفِّرُ وَهُمْ عَنْهَا غَافِلُونَ، وَالِاحْتِيَاطُ أَنْ يُجَدِّدَ الْجَاهِلُ إيمَانَهُ كُلَّ يَوْمٍ وَيُجَدِّدَ نِكَاحَ امْرَأَتِهِ عِنْدَ شَاهِدَيْنِ فِي كُلِّ شَهْرٍ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ، إذْ الْخَطَأُ وَإِنْ لَمْ يَصْدُرْ مِنْ الرَّجُلِ فَهُوَ مِنْ النِّسَاءِ كَثِيرٌ. 
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরা হারাম সাব্যস্তকারী শব্দাবলী এবং কুফুরীর দিকে ধাবমান শব্দাবলী সম্পর্কে জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয। আমার জীবনের শপথ।বর্তমান সময়ে এ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।কেননা তুমি অনেক জনসাধারণকে দেখতে পাবে, যারা হরহামেশা এমন আলাপে লিপ্ত,যার ফলাফল সম্পর্কে তারা পুরোটাই গাফিল।বর্তমান সময়ে সতর্কতাবশত দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দৈনিক একবার ঈমানকে দোহরানো উচিৎ। এবং প্রতি মাসে অন্তত একবার বা দুইবার দুই সাক্ষীর সামনে নতুনকরে নিকাহ করা উচিৎ। স্পর্শকাতর ভুলভ্রান্তি যদিও পুরুষদের থেকে কম সংগঠিত হয়,কিন্তু মহিলাদের থেকে তা অহরহই সংগঠিত হয়। 
  •  তিনি আরো বলেনঃ-
 مِنْ فَرَائِضِ الْإِسْلَامِ تَعَلُّمُهُ مَا يَحْتَاجُ إلَيْهِ الْعَبْدُ فِي إقَامَةِ دِينِهِ وَإِخْلَاصِ عَمَلِهِ لِلَّهِ تَعَالَى وَمُعَاشَرَةِ عِبَادِهِ. 
প্রত্যেক মুসলমানের উপর ইসলামের ফরয বিধানসমূহ থেকে একটি ফরয হচ্ছে। দ্বীন প্রতিষ্টা তথা এখলাছের সাথে তার উপর আমল করতে প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন করা ও মানুষের সাথে সদাচরণের জ্ঞানার্জন করা(ফরয)।
 وَفَرْضٌ عَلَى كُلِّ مُكَلَّفٍ وَمُكَلَّفَةٍ بَعْدَ تَعَلُّمِهِ عِلْمَ الدِّينِ وَالْهِدَايَةِ تَعَلُّمُ عِلْمِ الْوُضُوءِ وَالْغُسْلِ وَالصَّلَاةِ وَالصَّوْمِ، وَعِلْمِ الزَّكَاةِ لِمَنْ لَهُ نِصَابٌ، وَالْحَجِّ لِمَنْ وَجَبَ عَلَيْهِ وَالْبُيُوعِ عَلَى التُّجَّارِ لِيَحْتَرِزُوا عَنْ الشُّبُهَاتِ وَالْمَكْرُوهَاتِ فِي سَائِرِ الْمُعَامَلَاتِ. وَكَذَا أَهْلُ الْحِرَفِ، 
প্রত্যেক মুকাল্লাফ-মুকাল্লাফাহ(আক্বেল-বালেগ নর-নারী)এর উপর দ্বীনের প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জনের পর ফরয হচ্ছে,ওজু,গোসল,নামায এবং রোযা,এর জ্ঞান অর্জন করা। এবংনেসাবপ্রাপ্ত মালের মালিকের উপর যাকাতের জ্ঞান অর্জন করা। এবং যার উপর হজ্ব ফরয,তার জন্য হজ্বের বিধি-বিধান অর্জন করা। এবং ব্যবসায়ীদের উপর ব্যবসা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করা।এজন্য ফরয,যাতে তারা উক্ত বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন অস্পষ্টতা,সন্দেহ ও অপছন্দনীয় দিবসসমূহ থেকে অনায়াস বেছে থাকতে পারে।ঠিকতেমনিভাবে পেশাজীবীদের জন্য সংশ্লিষ্ট পেশা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ফরয। ইবনে আবেদীন শামী রাহ.জ্ঞান শিক্ষা ফরয সম্পর্কিত একটি মূলনীতি তুলে ধরেন।যাকে আমাদের সামনে আসলে,ভবিষ্যৎ অনেক অস্পষ্টতা দূরবিত হয়ে যাবে ইনশা'আল্লাহ। 
  • তিনি আরো বলেনঃ
 وَكُلُّ مَنْ اشْتَغَلَ بِشَيْءٍ يُفْرَضُ عَلَيْهِ عِلْمُهُ وَحُكْمُهُ لِيَمْتَنِعَ عَنْ الْحَرَامِ فِيهِ اهـ 
এবং যে বক্তিই কোনো জিনিষের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে,তার উপর উক্ত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ফরয।যাতে করে উক্ত বিষয় ও বিষয় সংশ্লিষ্ট সমস্ত হারাম থেকে সে অনায়াসে বেছে থাকতে পারে।(রদ্দুল মুহতার-১/৪২)
هذا ما وجدت ،والله أعلم بحقيقة الحال 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...