আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
228 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (9 points)

প্রথম প্রশ্ন : আমার বাবা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (আগারগাঁও - ঢাকা - বাংলাদেশ) তে চাকরী করেন (সরকারী চাকুরীজীবী) ।। আমার জানা মতে >>> সরকারী চাকরী এটা হওয়ার সময় আমার বাবা ২০০০০ টাকা দিয়ে (ঘুষ দিয়ে) + একজনের সুপারিশ এর মাধ্যেমে চাকরিটা পায় ।। চাকরিটা পাওয়ার পর তিনি হালাল ভাবেই তার চাকরী করেন >>> মানে >>> অনেক সরকারী চাকুরীজীবী আছে না এক টেবিল থেকে অন্য টেবিল এ একটা ফাইল নিয়ে দিতে ঘুষ নেয়; আবার অনেকে আদমশুমারি বা গণশুমারি বা এ জাতীয় অন্যান্য পরিসংখ্যান এ যে চাকরির বাহিরে যে এক্সট্রা কাজ থাকে (যার জন্য সরকার বেতনের বাহিরে এক্সট্রা টাকাও দিয়ে থাকে) এসব কাজে নানা অনৈতিক ভাবে টাকা মেরে নেয়, কাজ ঠিকমতো না করে ভুলভাল তথ্য দেয়; আবার অনেকে প্রমোশন তাড়াতাড়ি করার জন্য ঘুষ দিয়ে দ্রুত প্রমোশন করিয়ে নেয় ।। এই ধরনের কাজ থেকে আমার বাবা ৯৯% বাহিরে ।। এগুলোর সাথে জড়িত নেই ।। শুধু একটাই দোষ চাকরির শুরুতে ঘুষ আর সুপারিশের মাধ্যেমে চাকরী নেয়া ।। (উল্লেখ্য যে >>> এই চাকরির জন্য যে আমার বাবাই যোগ্য পার্থী এটার কোন নিশ্চয়তা নেই >>> ০.১% ও নিশ্চিত না >>> আমার বাবা থেকেও যোগ্য পার্থী থাকতে পারে)

এখন আমার মূল প্রশ্ন এই যে >>> আমি যদি আমার বাবার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেই ২ বছরের জন্য; সেই ১ লক্ষ টাকা দিয়ে আমি একটা ইনস্টিটিউট (এই ইনস্টিটিউট এ কুরআন তেলাওয়াত + আরবী ভাষা শিক্ষানো হবে) দিয়ে যে টাকা উপার্জন হবে সেখান থেকে বাবার কাছ থেকে ঋণ নেয়া ১ লক্ষ টাকা ২ বছরের মধ্যে পরিশোধ করে দিলে কি আমার ইনস্টিটিউট এর থেকে যে টাকা উপার্জন হবে সেই টাকা কি আমার জন্য হালাল হবে নাকি হারাম হবে ??? যদি হালাল হয় কেনো হবে আর যদি হারাম হয় কেনো হবে ??? কুরআন এবং সহীহ হাদীস এর আলোকে (হাদীস এর রেফারেন্স + কুরআনের আয়াতের নম্বর সহ --- আমি যেনো মিলিয়ে দেখতে পারি) আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য উস্তাদ কে অনুরোধ করছি ।।

দ্বিতীয় প্রশ্ন : আমার এক হাফেজ বন্ধুর সাথে একদিন আসরের নামাজের পর দেখা হয় ।। তখন আমি তাকে বলি তোর কাছে যদি কোনো স্টুডেন্ট থাকে যে কিনা কুরআন তেলাওয়াত শিখতে চায় আমাকে বলিস আমি পড়াবো ।। সে আমাকে বলে তার কাছে একটা স্টুডেন্ট আছে চাইলে আমি পড়াতে পারবো ।। তখন আমি তাকে স্টুডেন্ট এর অভিভাবকের সাথে কথা বলে আমাকে জানাতে বললাম ।। অভিভাবক তাকে বলেছে উস্তাদ কে বইলেন আমার সামর্থ্য কম তাই বেশি হাদীয়া দিয়ে পড়াতে পারবো না উস্তাদ যদি পড়াতে রাজি হয় উস্তাদ যেনো আমাকে কল দেয় ।। তাই আমি আমার মোবাইল ফোন দিয়ে স্টুডেন্ট এর অভিভাবক কে কল করে ১০০০ টাকা হাদীয়া ফিক্সড করে পড়াতে রাজি হই ।। এখনও আমি তাকে পড়াই।। উল্লেখ্য যে >> বর্তমানে আমি প্রতি মাসে সর্বমোট এই ১০০০ টাকা উপার্জন করি ।।

এখন আমার মূল প্রশ্ন এই যে >>>> উপরের প্রশ্নেই বুঝতে পেরেছেন আমার বাবার উপার্জন হালাল নাকি হারাম ।। যে ফোন দিয়ে আমি আমার এই টিউশন টা কনফার্ম করেছি সেটা আমার বাবার টাকা দিয়ে কিনেছি ।। অর্থাৎ এই ফোন টাও হালাল নাকি হারাম আমার বাবার টাকার উপর নির্ভর করতেছে ।। এখন আমি যে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা উপার্জন করি এটা কি হালাল নাকি হারাম ??? যদি হালাল হয় কেনো হবে আর যদি হারাম হয় কেনো হবে ??? কুরআন এবং সহীহ হাদীস এর আলোকে (হাদীস এর রেফারেন্স + কুরআনের আয়াতের নম্বর সহ --- আমি যেনো মিলিয়ে দেখতে পারি) আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য উস্তাদ কে অনুরোধ করছি ।।

উল্লেখ্য যে আমি আমার এই টিউশন এর পিছনে সর্বমোট একবার ব্যাবহার করেছি (টিউশন কনফার্ম করার সময়) এই মোবাইল ফোন ।।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

ifatwa.info/42454/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 

ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ .

অনুবাদঃ ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১ সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০

 

তবে একটি মাসয়ালা হলোঃ-  ঘুষ দেওয়া ব্যতীত যদি নিজ প্রাপ্য হক আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে এমতাবস্থায় ঘুষ দেয়া জায়েয। অন্যথায় ঘুষ দেয়া হারাম। তবে ঘুষ গ্রহণ করা সর্বাবস্থায়-ই নাজায়েয ও হারাম। প্রয়োজনে ঘুষ দেয়া জায়েয।

 

এ বিষয়ের উপর উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন। হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇِﻥَّ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢْ ﻟَﻴَﺴْﺄَﻟُﻨِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺄَﻟَﺔَ ﻓَﺄُﻋْﻄِﻴﻬَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻴَﺨْﺮُﺝُ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﺘَﺄَﺑِّﻄُﻬَﺎ ، ﻭَﻣَﺎ ﻫِﻲَ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻻ ﻧَﺎﺭٌ ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻓَﻠِﻢَ ﺗُﻌْﻄِﻴﻬِﻢْ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﻳَﺄْﺑَﻮْﻥَ ﺇِﻻ ﺃَﻥْ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻧِﻲ ، ﻭَﻳَﺄْﺑَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻲ ﺍﻟْﺒُﺨْﻞَ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার কাছে যাকাতের মাল থেকে কিছু দেওয়ার জন্য সুওয়াল করে। অতঃপর আমি তাকে কিছু দিয়ে দেই। তথা তার সুওয়াল আমার কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয়। তবে এই গ্রহণকৃত জিনিষ তাদের জন্য আগুনের মত। তখন উমর রাযি বললেন, হে রাসূলুল্লাহ! তাহলে আপনি কেন দেন?তারা আমারকে লেপ্টে ধরেছে। অথচ আল্লাহ আমাকে কৃপণতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছন। মুসনাদে আহমদ-১০৭৩৯

 

বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/604/

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 

১. কোনো যোগ্য ব্যক্তি যদি  নিজ প্রাপ্য হক আদায়ের লক্ষ্যে ঘুষ দেয়, অবস্থা যদি এমন হয় যে ঘুষ না দিলে তার এই চাকুরী হবেনা, তাহলে  এমন অবস্থায় ঘুষ দেওয়া যাবে। তার বেতন হালাল হবে। তবে যারা এই ঘুষ গ্রহন করবে, তাদের ক্ষেত্রে তা গ্রহন হারাম হবে।

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার বাবা তার চাকুরীতে শ্রমের বিনিময়েই বেতন পাচ্ছে, তাই তার চাকুরীর বেতন হালাল হবে।

 

২. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউট থেকে যে টাকা উপার্জন হবে তা আপনার জন্য জায়েজ হবে এবং টিউশনের টাকাও আপনার জন্য জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (9 points)
জাযাকুমুল্লাহ ।। আমি অপেক্ষায় আছি উস্তাদ ।। আমার প্রশ্নের উত্তর আমার মন মত হোক বা না হোক,,, প্রশ্নের এই বেড়াজাল থেকে আমি মুক্তি পেলেই আমি খুশি ।। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা ।। রিজিকের দায়িত্ব তার কাছেই,,, আমার হাতে নেই,,, আমি চেষ্টা করতে পারি শুধু ।।
by (9 points)
reshown by
উস্তাদ ফতোয়া টা কখন পেতে পারি ??? আমি অপেক্ষায় আছি ।।
by (9 points)
কিন্তু চাকরিটা যে ঘুষ দিয়ে নেয়া হয়েছে ??? এখন তিনি যে চাকরিটা জন্য যোগ্য পার্থী এটা তে নিশ্চিত না ।। পরীক্ষার রেজাল্ট এর ভিত্তিতে হোক বা সার্টিফিকেট এর জিপিএ এর ভিত্তিতে হোক ।। এর পর ও কি বেতন হালাল হবে ???

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...