আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
468 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আপনাদের ফাতওয়ায় দেখেছি যে টাখনুতে কাপড় গেলেই গুনাহ হবে, কিন্তু কারও কারও মতে, যেমন শাইখ উসাইমিন এর মতে টাখনুর নীচে গেলে গুনাহ, টাখনুতে কাপড় থাকলে সমস্যা নেই। আমার এক ছোট ভাই এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে যেখানে টাখনুর ওপর কাপড় পরলে নানান রকমের ঝামেলায় পড়তে হয়,পূর্বেও কেউ কেউ পড়েছে। তাই সে হানাফি মাজহাবের অনুসারী হয়েও কি এই মাসয়ালাটার ক্ষেত্রে শাইখ উসাইমিন কে অনুসরণ করতে পারবে (বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায়)? টাখনু পর্যন্ত (টাখনু কিছুটা ঢেকে) কাপড় রাখলে হয়ত তেমন একটা বোঝা যাবে না, কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে না।
ঝামেলা বলতে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জরিমানাও হতে পারে, বাবা-মা ডেকে অপমান করতে পারে অথবা অন্য কোন অপমানজনক শাস্তিও দিতে পারে।

যদি সে শাইখ উসাইমিনকে এই মাসয়ালার ক্ষেত্রে অনুসরণ করে তাহলে কি কেবল বিপদ হতে পারে এমন জায়গাতেই অনুসরণ করবে নাকি যে কোন সময়, অর্থাৎ বাসায় থাকলেও অনুসরন করতে পারবে?

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ-
হাদীসে এসেছে,রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻻَ ﻳُﻜَﻠِّﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻻَ ﻳَﻨْﻈُﺮُ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻻَ ﻳُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢْ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ - ﺍﻟْﻤُﺴْﺒِﻞُ ( ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﺇﺯﺍﺭﻩ ) ﻭَﺍﻟْﻤَﻨَّﺎﻥُ [ ﻭﻓﻰ ﺭﻭﺍﻳﺔ : ﺍَﻟَّﺬِﻯْ ﻻَ ﻳُﻌْﻄِﻰْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻻَّ ﻣِﻨْﻪُ ] ﻭَﺍﻟْﻤُﻨَﻔِّﻖُ ﺳِﻠْﻌَﺘَﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﻠِﻒِ ﺍﻟْﻜَﺎﺫِﺏِ –
তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ কেয়ামতের দিন কোনো কথা বলবেন না,এবং তাদের দিকে তাকাবেন মও না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
তারা হ’ল-
(১) টাখনুর নীচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গী) পরিধানকারী,
(২( খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোন কিছু দান করে না) 
(৩) মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী।
(মুসলিম ১০৬ মিশকাত ২৭৯৫)


টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান সম্পর্কে তিনটি সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়।যথাঃ-(১)হারাম।(২)মাকরুহ(৩)মুবাহ

অহংকারের উদ্দেশ্যে হলে হারাম।
অহংকার ব্যতীত এমনিতেই টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান মাকরুহ।আর বে-খেয়ালে হলে মুবাহ।
تَقْصِيرُ الثِّيَابِ سُنَّةٌ وَإِسْبَالُ الْإِزَارِ وَالْقَمِيصِ بِدْعَةٌ يَنْبَغِي أَنْ يَكُونَ الْإِزَارُ فَوْقَ الْكَعْبَيْنِ إلَى نِصْفِ السَّاقِ وَهَذَا فِي حَقِّ الرِّجَالِ، وَأَمَّا النِّسَاءُ فَيُرْخِينَ إزَارَهُنَّ أَسْفَلَ مِنْ إزَارِ الرِّجَالِ لِيَسْتُرَ ظَهْرَ قَدَمِهِنَّ. إسْبَالُ الرَّجُلِ إزَارَهُ أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ إنْ لَمْ يَكُنْ لِلْخُيَلَاءِ فَفِيهِ كَرَاهَةُ تَنْزِيهٍ، كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.
মর্মার্থ- পরুষের জন্য অহংকার ব্যতীত টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা মাকরুহে তানযিহি।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৩৩)


পূর্বে আমরা https://www.ifatwa.info/8258 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ করেছি যে,
উসূলঃ প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে সিদ্ধ করে দেয়।
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।

 যথাক্রমেঃ-
(১) ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।
যেমনঃ-কোরআন থেকে 
 ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
তরজমাঃ-কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।(সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিশেষ জরুরতের কারণে পড়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (17 points)
জাযাকাল্লহ শাইখ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...