আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (66 points)
#Kind_of_urgent
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
মাস ২/৩ আগে ফেসবুকে এক ছেলেকে দেখি, ছেলে দাওয়াহর কাজে একটিভ আলহামদুলিল্লাহ। ছেলের অজ্ঞাতনামে মেসেজ দেওয়ার ওয়েবসাইট আছে দেখতে পাই। ওখানে গিয়ে অনেক মানুষ অনেক প্রশ্ন করেছেন আর ছেলেটি তার রিপ্লাইও দিয়েছে দেখলাম। ওখানে তার মানসিকতা সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পাই। ফেসবুক দেখে তার বাবা মা ভাই বোন সবাইকে খুঁজে পাই। ঘটনাক্রমে জানতে পারি যে তার দেশের বাড়ি আর আমাদের দেশের বাড়ি একই জেলায়। আমিও অজ্ঞাতনামে কিছু মেসেজ পাঠিয়ে তার মানসিকতা আরও বিস্তারিত জানতে পারি(বুঝতেই পারছেন যেহেতু এনোনিমাস, তাই তিনি জানেন না যে মেসেজ কে পাঠিয়েছে)। তার বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মানুষজনের থেকে তার ব্যাপারে খোঁজ লাগাই।শেষে আমি যা জানতে পারি তা হল তিনি নম্র, ভদ্র, প্র্যাকটিসিং মুসলিম, দ্বীনদার, আমানতের খিয়ানত করেন না, দায়িত্বশীল, পরিশ্রমী। আমাদের কুফু তথা ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও অনেক বেশি মেলে, দ্বীনের ব্যাপারে তার সাপোর্ট পাব ইনশাআল্লাহ এটা বুঝা গেছে। আব্বু আম্মু তখনো জানেন না এই ব্যাপারে। আমাকে অন্য পাত্রদের কাছে ছবি পাঠাতে জোর করায়(যেটা আমি চাই না দিতে) আমি এনার ছবি দেখিয়ে দেই। ছেলের মা, বাবা, ভাই, বোনকে দেখে পছন্দ করেন, ছেলেকে অতটা পছন্দ হয়না যদিও। কুফু মেলে জানতে পেরে ছেলের বায়োডাটা জোগাড় করতে বলেন।

আমি পরিচিত একজনকে দিয়ে ওনার বায়োডাটা জোগাড়ের চেষ্টা করি। কিন্তু উনি বলেন যে অপরিচিত কাউকে এভাবে বায়োডাটা দেবেন না, মেয়ে যেন নিজের পরিচয় দিয়ে ইমেইল করে ওনাকে। উনি গার্ডিয়ানের সাথে কথা বলে গার্ডিয়ান সম্মত হলে জানাবেন মেয়েকে। বিয়ের ব্যাপারে এভাবে কথা বলা জায়েজ জানি(শুধু প্রয়োজনীয়)। আমি একটু সংকোচ বোধ করায় এটা এখনো পাঠাইনি। সেদিন আবার আমাকে বাসায় বলা হল পরেরদিনই পাত্রপক্ষের কাছে ছবি পাঠিয়ে দেবেন, আমি না চাইলেও। তখন আবার এর প্রসঙ্গ আনি, বলি এখনো বায়োডাটা জোগাড় হয়নি। পাত্রী নিজে ইমেইল করবে এটা আব্বু আম্মু মেনে নেবেন না এজন্য বলি নি। পরে আমার কাছে ওনার ফেসবুক আইডি চাওয়া হয়। আমি অনেক দ্বিধাদন্দের পর বিসমিল্লাহ বলে পাঠিয়ে দেই ওনার আইডি। আম্মু ওনার ছবি দেখে আঁতকে ওঠেন। না, চেহারা খারাপ নয় আম্মু ওনার চেহারায় রাফনেস দেখেছেন, কোমলতা নয়। ওনার মনে হয়েছে যে ছেলে রুক্ষ ও কঠোর প্রকৃতির(আমারও মনে হয়েছিল কিন্তু সামনাসামনি কথা বলে জানতে চেয়েছি উনি আসলে কেমন)। আমি যতই বলি যে ওনার পরিচিতরা বলেছেন যে উনি নম্র ভদ্র প্রকৃতির, কোন লাভ হয় না। আমাকে মানা করে দিয়েছেন ছেলের সাথে ফারদার যোগাযোগ না করতে। আমি তাও বলেছি সামনাসামনি কথা বলতে, হয়ত দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু আম্মু বলেছেন যে তোমার আব্বু খোঁজ নেবেন, তুমি কিছুই করবে না। আব্বু সিরিয়াসলি খোঁজ নেবেন না, আমি জানি(ভুল হলে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন)। কারণ তারা অন্য পাত্র নিয়ে অবসেসড, এই ছেলে তাদের কাছে গুরুত্ব বহন করে না। তার উপর ছেলে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা ধরেছে। আমার কাছে এই ছেলে হাতছাড়া হওয়া মানে এমন একজন হাতছাড়া হওয়া যে নিজেও দ্বীনদার আর আমাকে দ্বীনের ব্যাপারে সাপোর্টও জোগাবে ইনশাআল্লাহ। বেদ্বীন পরিবার কোনদিন দ্বীনদার পাত্রের গুরুত্ব বুঝবে না।

মুফতি সাহেব হয়ত বলবেন যে আব্বু আম্মু যাকে বলে তাকেই বিয়ে করতে যদি দ্বীনের ব্যাপারে সাপোর্ট করে। আচ্ছা মুফতি সাহেব বলুন তো, শুধু নামাজ রোজা করতে দিলেই কি দ্বীনের ব্যাপারে সাপোর্ট দেয়া হয়ে যায়? যেই ছেলে দ্বীনের ব্যাপারে জানে না বা জানলেও মনে করে ১৪০০ বছর আগের রুলস এখন চলবে না সে কি কোনদিন বুঝবে যে তার বাবা ভাই বা পুরুষ আত্মীয়ের সামনে মেয়ের আসা নিরুৎসাহিত। হলুদ ও engagement না করা, দেওর বা শালির সাথে অযথা কথা না বলা, নজর হেফাজত করা, মেয়ের বাড়ি থেকে কিছু না নেওয়া, মেয়ের বাসায় বরযাত্রী নিয়ে হুলুস্থুল না করা, ছেলের উপর দেনমোহরের বোঝা না চাপানো, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি না করা, সিম্পল বিয়ে করা, নতুন বউকে শাড়ি পরে বারবার আত্মীয়দের সামনে আসতে না বলা, বিয়ের গেট ধরাকে জুলুম মনে করা, দেনমোহর শোধ করা, নিজের ইচ্ছা থেকে আল্লাহর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া, আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা এগুলো কি কখনো ইসলামকে নিজের লাইফস্টাইলে ইমপ্লিমেন্ট করে নি এমন কারো থেকে পাওয়া পসিবল তা সে যতই দ্বীনের ব্যাপারে supportive হোক?

আমার জন্য পাত্রের requirement যতই বলি না কেন, ওনারা যখন ঘটককে বলেন তখন বলেন যে ছেলে ৫ ওয়াক্ত নামাজ না পড়লেও অন্তত ৩ ওয়াক্ত পড়ুক আর ছেলে ইসলামিক না হলেও যেন বাবা মা ইসলামিক হয়(আমার কথা হল বাবা মা দ্বীনদার না হলেও ছেলের যেন দ্বীনের বুঝ থাকে, অন্তত আমার সংগ্রামটা বুঝে আমাকে সাহায্য করতে পারবে, কট্টর ট্যাগ দিবে না)। আমি জানি না আপনাকে বুঝাতে পেরেছি কিনা। শুধু নামাজ রোজা করে নিজেকে প্র্যাকটিসিং মুসলিম ভাবা ছেলে থেকে আল্লাহ আমাকে হেফাজত করুন। আমীন!
ওদিকে আমার বড় ভাই এই ছেলেকে পছন্দ করেছেন আর আমাকে যোগাযোগ করতে বলেছেন। আর আব্বু আম্মু কোন যোগাযোগ করতে মানা করেছেন। তারা যেরকম পাত্র খুঁজছেন তাতে হয় আমাকে মডারেট মুসলিম হয়ে যেতে হবে নাহলে নিজের জীবন শেষ করে দিতে হবে(আল্লহই ভালো জানেন)। আমি কি শুধু প্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য ঐ ছেলের সাথে ইমেইলে/মেসেজে নিজের পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করব? এদিকে আমার অন্তরও প্রচণ্ড কঠিন হয়ে গেছে, আমি বেদ্বীন পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারি না। মনেও থাকে না কি দুয়া করব। গুনাহ খতিয়ে দেখেও সেরকম পাই নি যে তা আল্লাহর কাছে কান্না প্রতিরোধ করে দেবে। ইস্তিখারার কথা মনে থাকে না।

 বিঃদ্রঃ বেদ্বীন পরিবারে দ্বীন পালনের কষ্ট আপনারা যারা ছোট থেকেই দ্বীনি পরিবেশে বড় হয়ে এসেছেন তারা কোনদিন বুঝবেন না, কোনদিন না। কিছু মনে করবেন না আমার কথাগুলো খারাপ লাগলে।
by (66 points)
একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো। আমি হানাফী মাজহাবের কিন্তু ছেলে হাম্বলি মাজহাবের। এক্ষেত্রে কি কোন সমস্যা হতে পারে দ্বীনের ব্যাপারে? 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


বিবাহের ক্ষেত্রে রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের মাঝে কুফুর সামঞ্জস্যতা রয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ। 

তবে এক্ষেত্রে তার ফেসবুক আইডি হতে ছবি দেখার পর হতে আপনার মা আর সেদিকে এগোতে দিতে চাচ্ছেননা।

এক্ষেত্রে আপনার প্রতি পরামর্শঃ-
আপনি নিজে তার সাথে যোগাযোগ করবেননা,এতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয়না।

তবে আপনার বড় ভাই যেহেতু এই ছেলেকে পছন্দ করেছেন,আর আপনাদের দেশের বাড়ি আর ঐ ছেলের দেশের বাড়ি যেহেতু একই জেলায়।
তাই পরামর্শ থাকবে, আপনার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে এই বিবাহ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করা। আপনার বড় ভাই সরাসরি তার বাড়িতে যেতে পারেন,ছেলেকে দেখে তার পরিবারের সাথে কথা বলতে পারেন।
ছেলের পরিবারকে রাজী করিয়ে তাদেরকে দিয়ে আপনার বাবাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়ার কথা বলতে পারেন।

পাশাপাশি আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন,ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
ভাইয়া নিজে নয়, চান আমি নিজে কথা বলি ছেলের সাথে। ভাইয়া বিদেশে থাকেন, এভাবে ছেলের বাসায় আসা যাওয়া তার পক্ষে করা সম্ভব না। আমি ফেসবুক থেকে জেনেছি একই জেলায় বাড়ি কিন্তু আমরা দুজনেই ঢাকায় থাকি। ঢাকায় কোথায় বাসা/দেশের বাড়ি কোন গ্রামে এটা জানতে গেলেও তো ছেলের বায়োডাটা লাগবে। আমি না হয় ইমেইলের BCC তে ভাইয়াকে রাখলাম।
by (565,890 points)
আপনার ভাইকে ছেলের আইডি দিবেন,তিনি ছেলের সাথে ফোনে/অনলাইনে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিবেন। আরো জানার জন্য আপনার অন্য কোনো মাহরাম পুরুষ এর সহায়তা নিতে পারেন।
অথবা আপনার ভাই কাউকে বিষয়টি জানার দায়িত্ব দিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...