আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
161 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
একজন লোক ৫ মাস হলো বিয়ে করেছে। বাড়িতে সে, তার বৃদ্ধা মা, আর স্ত্রী থাকেন। বাড়িতে এই ৩ জনেরই বসবাস। লোকটি প্রায় সারাদিন চাকরি করার সুবাদে বাইরে থাকেন, আর সন্ধ্যায় ফিরেন। এক দিন সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে মাগরিব কিংবা এশার পরে খেতে বসেছেন। ভাতের পাত্রে দেখেন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক ভাত। তখন তার মা অন্য রুমে শুয়ে ছিলো। আর স্ত্রীও রুমের বাইরে ছিলো। স্ত্রী রুমে আসলে লোকটির মুখ থেকে আকস্মিক একটি বাক্য উচ্চারিত হয়। তখন স্বামী স্ত্রী ছাড়া ঐ রুমে আর কেউ ছিলো না।

 বাক্যটি হলোঃ
"মা, সরি বউ/বোন (মুখ থেকে মা বের হওয়ার সাথে সাথে সরি বলে বোন নাকি বউ কোনটা মুখ থেকে বের হয়েছে তা সুস্পষ্ট ছিলো না), এখানে এতগুলো ভাত কার জন্য?"

লোকটি তার স্ত্রীকে রাগ করে কিংবা আদর করে এ কথা বলেনি তা সুনিশ্চিত। স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলো। তার স্ত্রীকে মা বলার কোন চিন্তা বা ইচ্ছাই তার মধ্যে ছিলো না। আর এখনো নাই। ঐ সময় ভাতের কথা জিজ্ঞেস করতে গিয়ে মুখ ফসকে প্রথমে মা উচ্চারিত হয়, তাৎক্ষনিকভাবে  সাথে সাথেই বাক্যটি বলার আগেই সরি বলে বউ বলতে গিয়ে বউ নাকি বোন উচ্চারিত হয়েছে সেটা সুস্পষ্ট ছিলো না। তবে, প্রথমে যে "মা" উচ্চারিত হয়েছে তা সুস্পষ্ট ছিলো।

 বাক্যটি উচ্চারিত হওয়ার পর পরই লোকটির মনে মোচড় দিয়ে উঠে। তারপর তার স্ত্রী মুচকি হেসে আলতো করে তাকে একটি ঘুষি দিয়ে অন্য কাজে চলে যায়।

এমতবস্থায়,
প্রশ্ন ১ঃ উল্লিখিত ঘটনাটি কী যিহার হিসেবে গন্য হবে?

প্রশ্ন ২ঃ যিহার হিসেবে গন্য হলে লোকটির এখন করনীয় কী?

প্রশ্ন ৩ঃ এই ঘটনাটি ঘটেছে ১২ দিন হলো। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত লোকটি মাসয়ালাটি সম্পর্কে স্পষ্ট  না হওয়ায় ভয়ে স্ত্রীর সাথে সহবাস করে নাই। এবং স্ত্রী থেকে একটু দূরত্বে থাকার চেষ্টা করছে। তবে, বিভিন্ন সময় হাত ধরা, চুম্বন করা, আলিংগন করা ইত্যাদি করে ফেলেছে। এবং একসাথে এক বিছানায় ঘুমিয়েছে। এতে করে কী লোকটি গোনাহগার হয়েছে? তাহলে, করনীয়?

প্রশ্ন ৪ঃ স্ত্রী তো এ সম্পর্কে কিছুই জানে না। স্বামীর ঐ শব্দের কারনে এবং পরবর্তীতে একত্রে বসবাস করতে থাকার কারনে কী স্ত্রী গোনাহগার হবে? সেক্ষেত্রে স্ত্রীর করনীয় কী?

ইসলামি শরিয়তের আলোকে মাসয়ালাটির সমাধান পেলে লোকটি কৃতজ্ঞ থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(১.২)
এক্ষেত্রে যিহার হয়নি।

(০৩)
লোকটি গুনাহগার হয়নি।

(০৪)
না,এতে স্বামী স্ত্রী কেহই গুনাহগার হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার হয়নি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...