আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
একদিন স্বপ্নে দেখি জোসনা রাত, পাশাপাশি দুটো কবর, একটা আমার নিজের আরেকটা আমার একটা কাকার,আমরা দুজন কবরের পাশে দাড়ানো,করব দুটো উন্মুক্ত,তখন কাকার কবর থেকে একটু মাকড়সা টাইপের বিচ্ছু উঠে আমার কবরে প্রবেশ করে,এবং পরক্ষণেই আকাশে দুটো মানুষের চেহারা ভেসে ওঠে,প্রথম একজনের চেহারা উঠলে তাকে আমার কাছে স্বপ্নের মধ্যেই খারাপ মানুষ মনে হয়, পরে একটা পবিত্র মানুষের চেহারা ভেসে উঠে,মুখভর্তি কালো দাড়ি, ফর্সা মুখ, আমাকে কোনো শব্দ বা কিছুর মাধ্যমে বলা হয়নি শুধু স্বপ্নের মধ্যে আমি যেন জানতাম বা মনে হচ্ছিলো এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এটা করোনাকালীন সময়ের এক রমাদান মাসে যখন দ্বিনের ন্যূনতম কিছু না মানা এবং অম্তরে নানান ইসলামবিদ্বেষ পোষন করা আমি অল্প অল্প করে কুরআনের বাংলা পড়তে শুরু করেছিলাম।
ওই স্বপ্নের কয়েকমাস পরে আরেকটা স্বপ্ন দেখি আমাকে কোনো একটা কণ্ঠস্বর বলছে সুরা ইমরানের এই আয়াতটা পড়তে "আমার জন্য কিছু নিদর্শন দাও। তিনি বললেন, তোমার জন্য নিদর্শন হলো এই যে, তুমি তিন দিন পর্যন্ত কারও সাথে কথা বলবে না। তবে ইশারা ইঙ্গতে করতে পারবে এবং তোমার পালনকর্তাকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে আর সকাল-সন্ধ্যা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করবে।"

আমি এই দুটো স্বপ্নের কোনোটাকেই তখন গুরুত্ব দেইনি কারন আমি দ্বীন বুঝতাম না এতো ভালোবাসতাম না,প্রথম স্বপ্নকে ভেবেছিলাম শয়তানের ধোকা, যে আমি এতোই খারাপ হয়ে গেছি শয়তান এখন আমার সামনে নবীর রুপে এসে ধোঁকা দিতে চায় এবং এই স্বপ্নের কথা প্রায় একপ্রকার ভুলতেই চাচ্ছিলাম, কিন্তু এখন আমার কাছে এই স্বপ্ন দুটোর অর্থ জানা গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, আমার কি দ্বিতীয় স্বপ্নের জন্য ওই কথা পালন করতে ৩ দিন ইশারায় কথা বলা উচিত,এবং বেশি বেশি রব্বের তাসবীহ পাঠ করা এবং স্মরণ করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (679,640 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/30361/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,

হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
ومن رای انہ مات…………ان رای شیئا من ہیئۃ الاموات کالغسل والکفن فذالک زیادۃ فی نقص دینہ (تعطیر الانام ۲۹۱؍ج۲؍باب المیم،موت،مطبوعہ مصر)

যার সারমর্ম হলো কেহ স্বপ্নে দেখে যে সে মারা গিয়েছে,,বা মৃতদের হালত,কাফন গোসল ইত্যাদি  দেখে,তাহলে সেটি নিজের দ্বীনের কমতি মনে করতে হবে।
,
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ তে এসেছে যে স্বপ্নে মৃত মানুষ দেখা এটি কবরের কথা স্বরন করে দেওয়ার জন্য।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ২৯/১৬০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার দ্বিতীয় স্বপ্নের জন্য ওই কথা পালন করতে ৩ দিন ইশারায় কথা বলা উচিত হবেনা।

বেশি বেশি রব্বের তাসবীহ পাঠ করা এবং স্মরণ করা আবশ্যক হবেনা। তবে তাসবিহ পাঠ যেহেতু নেকীর কাজ,তাই তাসবিহ পাঠ করতে পারেন।

১ম স্বপ্নের ক্ষেত্রে আপনার জন্য করনীয়ঃ- 
নিজ আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
দান ছদকাহ করতে হবে।
,
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...