আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
89 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)

আসসালামু আলাইকুম,
আমার কিছু প্রশ্ন আছে
পবিত্র কোরআন ও সহীহ হাদিসের রেফারেন্স সহ আমার প্রশ্নের উত্তর দিলে উপকৃত হব।

প্রশ্ন-১ঃ আল্লাহর কোন নামটি বান্দার ক্ষেত্রে আব্দুর যোগ করে রাখা বাধ্যতামূলক আর কোন নামটি আব্দুর যোগ করা ছাড়াও রাখা যায়?
প্রশ্ন-২ঃ এবং কেন কিছু নামের ক্ষেত্রে এই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে? আর কেনই বা কিছু নামের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়নি?
 

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

تَسَمّوْا بِأَسْمَاءِ الْأَنْبِيَاءِ، وَأَحَبّ الْأَسْمَاءِ إِلَى اللهِ عَبْدُ اللهِ، وَعَبْدُ الرّحْمَنِ، وَأَصْدَقُهَا حَارِثٌ، وَهَمّامٌ، وَأَقْبَحُهَا حَرْبٌ وَمُرّةُ.

তোমরা নবীদের নামে নাম রেখো। আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান। সবচেয়ে সত্য নাম হারেস ও হাম্মাম আর সবচেয়ে খারাপ নাম হারব ও মুররাহ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৫২

ফাতওয়ার কিতাব সমুহে রয়েছেঃ-
وجا
ز التَسْمیة بعلیّ ورشید من الأسماء المشترکة ویراد فیحقنا غیر مایراد فی حق اللّٰہ -تعالیٰ -وفی ردّ المحتار: الذی فی التّاتر خانیہ عن السراجیہ: التّسمیة باسم یوجد فی کتاب اللّٰہ تعالیٰ کالعلی والکبیروالرشید والبدیع جائزة․․ (شامی: ۵۹۸/۹کتاب الحضر والاباحہ: باب الاستبراء: ط: زکریا دیوبند) فصل: وَمِمَّا یمْنَع تَسْمِیَة الْإِنْسَان بِہِ أَسمَاء الرب تبَارک وَتَعَالی فَلَا یجوز التَّسْمِیَة بالأحد والصمد وَلَا بالخالق وَلَا بالرازق وَکَذَلِکَ سَائِر الْأَسْمَاء المختصة بالرب تبَارک وَتَعَالیٰ وَلَا تجوز تَسْمِیَة الْمُلُوک بالقاہر وَالظَّاہِر کَمَا لَا یجوز تسمیتہم بالجبار والمتکبر وَالْأول وَالْآخر وَالْبَاطِن وعلام الغیوب․
সারমর্মঃ-
যে সমস্ত নাম আল্লাহর সাথেই খাছ,যেমন আহাদ,সমাদ,খালিক,রাযিক এ নাম গুলো দ্বারা সরাসরি কাহার নামকরণ জায়েজ নেই। ইহা ছাড়া অন্যান্য নাম যাহা কিতাবুল্লাহ তে পাওয়া যায়,সেগুলো দ্বারা বান্দার নাম রাখা যাবে,যেমন উলা,কাবির,রশিদ,বাদি'।

وَأما الْأَسْمَاء الَّتِی تطلق عَلَیْہِ وعَلیٰ غَیرہ کالسمیع والبصیر والرؤوف والرحیم فَیجوز أَن یخبر بمعانیہا عَن الْمَخْلُوق وَلَا یجوز أَنْ یتسمّی بہَا علی الْاِطْلَاق بِحَیْثُ یُطلق عَلَیْہِ کَمَا یُطلق علی الربّ تَعَالٰی․ (تحفة المودود بأحکام المولود: ۱۲۷/۱الفصل الثانی فی ما یستحب من الأسماء وما یکرہ، ط: مکتبہ دارالبیان/دمشق)
সারমর্মঃ-
যেসমস্ত নামের ইতলাক আল্লাহর উপরেও হয়,বান্দার উপরেও হয়,যেমন সামি' বাছির,রউফ,রহিম,এগুলোর অর্থ দ্বারা মাখলুকের খবর দেয়া জায়েজ আছে। 

https://ifatwa.info/463/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
আল্লাহ তা'আলার ঐ সমস্ত আসমায়ে হুসনা(সুন্দর সিফাতি নাম সমূহ) যা আল্লাহ তা'আলার সত্বাগত(জাতি)নাম সমূহের মধ্য থেকে একটি।অথবা যে আসমায়ে হুসনা শুধুমাত্র আল্লাহ তা'আলার সিফাতে মাখছুছ(বিশেষত সিফাত) অর্থে ব্যবহৃত হয়।সেই আসমায়ে হুসনা সমূহকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য ব্যবহার করা জায়েয হবে না যেমনঃ

اللّٰه ،الرحمن ،القدوس ،الجبار،المتكبر،الخالق،البارئ،المصور،الرزاق ،الغفار،القهار ،التواب،الوهاب،الخلاق،الفتاح،القيوم ،الرب،المحيط ،المليك،الغفور، الأحد ،الصمد،الحق،القادر،المحي،
উচ্ছারণঃ আল্লাহ,রাহমান,কুদ্দুস,জাব্বার,মুতাকাব্বির,খালিক্ব,বারী,মুসাওয়ির,রাজ্জাক,গাফ্ফার,ক্বাহ্হার,তাওয়্যাব,ওয়াহ্হাব,খাল্লাক্ব,ফাত্তাহ,কাইয়্যুম,রাব্ব,মুহিত্ব,মালী...ক,গাফুর,আহাদ,সামাদ,হাক্ব,ক্বাদির,মুহয়ী।

২. ঐ সমস্ত আসমায়ে হুসনা যা আল্লাহ তা'আলার সিফাতি অর্থ ব্যতীত অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয়।সুতরাং অন্য অর্থ হিসেবে ঐ সমস্ত নামের ব্যবহার গায়রুল্লাহর জন্যও জায়েয হবে।তবে বিষয়টা ব্যাখা সাপেক্ষ্য।


যদি কুরআন-হাদীস ও উম্মাহর তা'আ'মূল(ব্যবহার) এবং উরফে আম(সমাজ ব্যবস্থায়) এ- ঐ সমস্ত আসমায়ে হুসনা দ্বারা গায়রুল্লাহর নাম রাখা প্রমাণিত থাকে, তাহলে সে সমস্ত আসমায়ে হুসনা দ্বারা নাম রাখা যাবে।এতে  কোনো প্রকার সমস্যা নেই।যেমনঃ
عزيز، علي، كريم، رحيم، عظيم، رشيد، كبير، بديع، كفيل، هادي، واسع، حكيم ،
যেমনঃ আযীয, আলী, কারিম, রাহিম, আজীম, রাশিদ, কাবির, বাদি', কাফিল, হাদী, ওয়াসি', হাকীম, ইত্যাদি।

এবং যে সমস্ত আসমায়ে হুসনা দ্বারা গায়রুল্লাহর নাম রাখা কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়,বা মুসলমানদের রীতিনীতিতে প্রচলিত নয়,সে সমস্ত আসমায়ে হুসনা দ্বারা গায়রুল্লাহর নাম রাখা অনুচিত।অত্যাবশ্যকীয় পরিত্যাজ্য।

৩.উপরোক্ত দু'টি মূলনীতির আলোকে তৃতীয় আরেকটি বিষয় আমাদের সামনে পরিস্কার হয়ে যায় যে,যে সমস্ত আসমায়ে হুসনা সম্পর্কে এ কথা জানা যাবে না যে,ঐগুলা কুরআন-হাদীস বা উম্মাহর তা'আমুল(ব্যবহার) বা উরফে(সমাজে) গায়রুল্লাহর জন্য প্রচলিত ছিল কি না? এমন আসমায়ে হুসনা দ্বারা নাম রাখা থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।কেননা আসমায়ে হুসনার মধ্যে মূলকথা হল,সেগুলো দ্বারা গায়রুল্লাহর নাম রাখাটা নাজায়েয। সুতরাং জায়েয হওয়ার জন্য অবশ্যই দলিলের প্রয়োজন পড়বে।


উপরোক্ত উসূলের ভিত্তিতে সমস্ত আসমায়ে হুসনার ব্যাপারে আ'মল করা হবে।যেহেতু এই জবাব উসূল দ্বারা লিখিত,অন্যদিকে প্রত্যেক নামের ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো আলোচনা কোথাও পাওয়া যায়নি।বিধায় এ ব্যাপারে আমাদের আরো গবেষনা চালিয়ে যাওয়া উচিৎ।সম্ভব হলে এব্যাপারে বিজ্ঞজনদের নিকট থেকে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।(ফাতাওয়ায়ে উসমানি-১/৫২)

আবদ আরবী শব্দ।যার অর্থ হল,গোলাম।উপরের সকল প্রকার আল্লাহর সিফাতি নাম সমূহের পূর্বে আবদ শব্দ যোগ করে কারো নাম রাখতে কোনো অসুবিধে নেই।যেমন, আব্দুল্লাহ,আব্দুর রহমান ইত্যাদি।তবে ডাকার সময়ে অবশ্যই আবদ যোগে পূর্ণ শব্দ দ্বারাই ডাকতে হবে।আবদকে ছেড়ে দিয়ে ডাকা যাবে না।হ্যা যে সমস্ত আসমায়ে হুসনা দ্বারা গায়রুল্লাহর নাম রাখা যায়,যেমন উপরে বর্ণিত রয়েছে, সে সমস্ত নামের কাউকে আবদ ব্যতীতও ডাকা যাবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত আলোচনা ভালোভাবে পড়লে আপনি সমস্ত প্রশ্নের পেয়ে যাবেন,ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...