আমাদের কাছে পাওয়া তথ্য মতে প্রণোদিত উপায়ে মুক্তা চাষ নিম্নোক্ত ৩ পদ্ধতিতে করা যায়-
ম্যান্টল টিস্যু অপারেশন পদ্ধতি:
এই অপারেশন দুটি ধাপে সম্পন্ন করা হয়। প্রথমে ম্যান্টল টিস্যুর টুকরা তৈরি করা হয় তারপর ঝিনুকে প্রতিস্থাপিত করা হয়। এক্ষেত্রে অপারেশনের জন্য ১–২ বৎসর বয়সের ঝিনুক (৬–৮ সে.মি) স্বাস্থ্যবান এবং শক্ত ঝিনুকের ম্যান্টল টিস্যুর কিনারার দিক থেকে টিস্যু সংগ্রহ করতে হবে। টিস্যু সংগ্রহের সময় ঝিনুকটি সম্পূর্ণ খুলে বা ফাঁক করে ম্যান্টল টিস্যুর বহিঃত্বক লম্বা করে কেটে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এভাবে বিচ্ছিন্ন করা টিস্যু একটি গ্লাস বোর্ডে রেখে ছোট ছোট টুকরা করে কাটতে হবে।
প্রতিস্থাপনের জন্য অপর একটি শক্ত স্বাস্থ্যবান ও প্রশস্ত ঝিনুকের দুটি খোলস ৮–১০ মিমি পর্যন্ত ফাঁক করতে হবে। দুই খোলসের মাঝে কাঠের কীলক স্থাপন করতে হবে যাতে খোলসদুটি বন্ধ হয়ে না যায়। ঝিনুকের পেছন দিকের অংশের ম্যান্টলের বহিঃপ্রান্তে টিস্যু প্রতিস্থাপন করা ভাল। প্রতিস্থাপনের জন্য প্রথমেই হুক এবং নিডল এর সাহায্যে এক টুকরা ম্যান্টল টিস্যু নিতে হবে। উলম্বভাবে ঝিনুকের ম্যান্টলে একটি গর্ত করে তাতে টুকরাটি স্থাপন করতে হবে। এভাবে পেছন থেকে সামনের দিকে একের পর এক টুকরা ম্যান্টল টিস্যু স্থাপন করতে হবে। ঝিনুকের আয়তন অনুযায়ী যে কয়টি টুকরা প্রতিস্থাপন করা যায় ততটি মুক্তা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
(খ) নিউক্লিয়াস অপারেশন পদ্ধতি:
এই প্রক্রিয়ায় একটি নিউক্লিয়াস হিসেবে বহিঃস্থ টিস্যু যেমন ছোট পুতি, ছোট মুক্তা, মাছের চোখের বল, পাথর কণা ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে ঝিনুকের তিনটি স্থান যেমন পিছনের দিকে যেখানে ম্যান্টল বেশ পুরু, পরিপাকতন্ত্রের উপরিভাগে এবং পায়ের মাংসে নিউক্লিয়াস প্রতিস্থাপন করতে হবে। প্রতিস্থাপনের জন্য একটি ধারালো সূচের সাহায্যে ঝিনুকের দেহে একটি ছোট গর্ত তৈরি করে তাতে নিউক্লিয়াসটি স্থাপন করতে হবে। নিউক্লিয়াসের গায়ে একটি ম্যান্টলের টুকরা স্থাপন করার পর গর্তের মুখ বন্ধ করে দিতে হবে।
(গ) ইমেজ মুক্তা অপারেশন পদ্ধতি:
ঝিনুকের ম্যান্টলের নিচে একটি ইমেজ প্রবেশ করিয়ে দিলে সেই ইমেজের উপর মুক্তার একটি প্রলেপ পড়ে যা দেখতে খুবই সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। মুক্তার প্রলেপযুক্ত এই ইমেজকে ইমেজ মুক্তা বলা হয়। মোম, খোলস, প্লাস্টিক, স্টিল ইত্যাদি পছন্দমাফিক ইমেজ তৈরি করে তা প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে। তারপর একটি পাতলা পাত দিয়ে খোলসের কিছু অংশ থেকে ম্যান্টল আলাদা করে সেখানে ইমেজটি সাবধানে ঢুকিয়ে দিতে হবে। সাবধানে ম্যান্টলের গর্ত থেকে বাতাস ও পানি বের করে দিতে হবে।
(সংগৃহীত।)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ ، فَإِذَا قَتَلْتُمْ فَأَحْسِنُوا الْقِتْلَةَ ، وَإِذَا ذَبَحْتُمْ فَأَحْسِنُوا الذَّبْحَ ، وَلْيُحِدَّ أَحَدُكُمْ شَفْرَتَهُ وَلْيُرِحْ ذَبِيحَتَهُ " . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
শাদ্দাদ ইবনু আওস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক জিনিসের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং যখন তোমরা কোন ব্যক্তিকে (ক্বিসাস ইত্যাদিতে) হত্যা করবে, তখন তাকে উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে। আর যখন কোন প্রাণীকে যাবাহ করবে, তখন তাকে উত্তমরূপেই যাবাহ করবে। তোমরা অবশ্যই ছুরি ধার দিয়ে নেবে এবং যাবাহকৃত পশুকে শান্তি দেবে।
সহীহ : সহীহ মুসলিম ৫১৬৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৮৮৪, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৮৬৫৮, শু‘আবুল ঈমান ১১০৭১, আবূ দাঊদ ২৮১৫, ইবনু মাজাহ ৩১৭০, দারিমী ১৯৭০, নাসায়ী ৪৪১২, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৬৯৭৭, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৬৫০২, আল মু‘জামুল কাবীর ৭১১৪, মুসনাদে আহমাদ ১৭১১৬, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ১০৮৯, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৫৫৯, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ৮৬০৪, মুসান্নাফ আবী শায়বাহ্ ২৭৯৩১।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এক ও দুই নং অপারেশন পদ্ধতির ক্ষেত্রে যেহেতু ঝিনুককে কষ্ট দেয়া হয়,তাই শরীয়ত প্রানীকে কষ্ট দিয়ে অপারেশনের এই পদ্ধতিকে সমর্থন করেনা। উক্ত অপারেশন পদ্ধতি অবলম্বন করা মাকরুহ হবে
তবে এই পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ করা হলেও তার ইনকামকে হারাম বলা যাবেনা। ইনকাম হালালই থাকবে।