আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
114 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড সমস্যা থাকতে পারে সেটা স্বাভাবিক।এখন সেখানকার স্টুডেন্ট যদি কোনো গ্রুপে এ ব্যাপারে আলোচনা করে অথবা পার্সোনালি কারো সাথে কথা বলে, এবং ব্যবস্থাপনার পেছনে কে বা কারা আছে সে সম্পর্কেও জানে তাহলে কি গিবত হবে?নিয়ত টা ব্যবস্থাপনার পেছনে যারা আছে তাদের ছোট করা বা ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে মন্দ কথা বলা নয়। উদাহরণ স্বরুপ, আমার কোনো শিক্ষিকা সময়মতো ক্লাস এ না আসেন না বা নির্দিষ্ট একটা সময় প্রশ্ন দিবেন জন্য উপস্থিত হতে বলে কোনো কারণে উনার রেস্পন্স পাওয়া যায়নি সে সময়ে। সেক্ষেত্রে এই ব্যাপার গুলো কিছুটা এলোমেলো লাগা স্বাভাবিক এবং স্টুডেন্ট হিসেনে মন:ক্ষুন্ন হওয়াটাও দোষের নয়। এবং কিছু বিষয়ে উনার সাথে এই ব্যাপার গুলো ডিল করা নিয়ে অনেকের ই অভিযোগ।তবে সেই শিক্ষিকার প্রতি ভালোবাসা,শ্রদ্ধা সবটাই বহাল আছে কারণ তিনি আসলেই ভালো লাগার যোগ্য।

এটা যদি কোনো গ্রুপে আলোচনা করা হয় সেক্ষেত্রে তা কি সেই শিক্ষিকার নামে গিবতের শামিল?অবশ্যই শিক্ষিকাকে নিয়ে এমন কিছু প্রকাশ করা হয় না, যে উনি ভালো না,বিরক্তিকর মানুষ,এতটুকু দায়িত্ব নেই ইত্যাদি ইত্যাদি।কার কেমন অভিজ্ঞতা সেটা শুধু বলা হয়েছে।এবং বিরতিহীন ভাবে এ ব্যাপারে বলা হয় বিষয় টা এমন না।খুবই রেয়ার বলা হয়েছে দুই একবার।

ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড বিষয়ের সম্পূর্ণ ব্যাপার যেহেতু সরাসরি উনার সাথেই আমাদের ডিল করতে হচ্ছে তাই উনার নাম জানি।প্রশ্ন হচ্ছে, উনার নাম জানলে গিবত হবে আর নাম না জানলে গিবত হবে না বিষয় টা কি এমন হতে পারে?

আর সমাধান হিসেবে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খেয়াল করেন নি বোধহয়।এক প্রকার ভয়েই কেউ কম্পলেইন করে না অবশ্য সরাসরি এডমিনের কাছে।কারণ একাডেমি টা খুব বেশি স্ট্রিক্ট।

এবং শিক্ষিকাকেও সরাসরি কিছু বলার সাহস করে না ফ্রি না হওয়ায়।

বিষয়টা একটু বড় ছিলো।এজন্য চেষ্টা করলাম পুরোপুরি ভাবে বিশ্লেষণ করে বলতে।এখন একটু আমাকে বলবেন দয়া করে জিনিস টা কি গিবতের দিকে যাচ্ছে কিনা।আবারো বলছি,শিক্ষিকা অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ উনার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা আছে,মন থেকে খাইরের দু'আ করি উনার জন্য।উনাকে ছোট করার নিয়তে কিছুই বলা হয় নি কারণ এই অনূভুতি টাই আসে নি। ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রের ত্রুটি টাই মূখ্য বিষয় ছিলো।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

★ যে সমস্ত কারণে গিবত করা বৈধ হয়।
 أمور تباح فيها الغيبة: الأصل في الغيبة التحريم للأدلة الثابتة في ذلك، ومع هذا فقد ذكر النووي وغيره من العلماء أمورا ستة تباح فيها الغيبة لما فيها من المصلحة؛ ولأن المجوز في ذلك غرض شرعي لا يمكن الوصول إليه إلا بها وتلك الأمور هي: 

কুরআন-হাদীসের অসংখ্য দলীল প্রমাণ থাকায় গীবত মূলত হারাম।তবে ইমাম নববী রাহ সহ অনেক উলামায়ে কেরাম ছয়টি বিষয়ে গীবতের অনুমোদন দিয়ে থাকেন।বিভিন্ন মুসলিহত ও হেকমত থাকর ধরুণই উলামায়ে কেরাম মূলত এ অনুমতি দিয়ে থাকেন।শরীয়য়ত অনুমোদিত কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই রুখসত প্রদান করা হচ্ছে, কেননা গীবত ব্যতীত এই উদ্দেশ্য হাসিল হওয়া প্রায়-ই অসম্ভব।

 الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك. 

(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

 الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما. 

(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

গীবতের বৈধ ও অবৈধ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1715

★কারো নাম,পরিচয়  উল্লেখ না করলে এতে গীবত হয় না। কিন্তু উপস্থিত লোকেরা যদি বুঝতে পারে যে অমুক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তবে তা গীবত বলে গণ্য এবং হারাম হবে।
হ্যাঁ বিশেষ মাছলাহাত এর স্বার্থে,যেমন তাকে বললে সে আর এমন কাজ করবেনা,তাহলে এটা বলা যেতে পারে।
তবে সীমাতিরিক্ত বলা যাবেনা,এমনি এক জনের কাছে বলা যাবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড সমস্যা এমন ব্যাক্তির কাছে বলা যাবে,যে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে বা সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হবে।

ইহা ছাড়া অন্যদের কাছে বলাটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

হ্যাঁ এমন কাউকে বলা,যে সেই প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের কাউকেই চিনেনা,সেক্ষেত্রে নাম ও পরিচয় না বলে এভাবে বলা যাবে। 
তাহলে গীবত হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...