আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,473 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

হুজুর,

১)  রক্ষ মেজাজ, মনের কাঠিন্য দূরকরণ এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করা যায়, রাগ সম্পর্ণ দূর করা সম্ভব কিনা যে রাগ আসবে না,

২) "পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়" এ কথাটি ইসলাম সমর্থন করে কি?
৩) কিছু সংখ্যক হক্কানী শায়খে তরীকতের নাম লোকেশন জানতে চাচ্ছি যাতে আত্মিক রোগের চিকিৎসা করাতে  মুরুব্বি হিসেবে একজন কে গ্রহণ করা যায়,

আর অনেকজন শায়খে তরীকতের মধ্য থেকে কিভাবে নিজের মন সায় দেয় এমন একজন কে মুরুব্বি হিসেবে নেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিব। মাঝে মাঝে ভাবি, কাশফ হয় এমন একজন শায়খ যদি পাই তাহলে তাকেই মুরুব্বি বানাবো ইনশা আল্লাহ। এ সম্পর্কে পরামর্শ চাচ্ছি।

৪) আমি অবিবাহিত। যখন ভাবিযে পরিপূর্ণ দ্বীন জানবো যাতে পরিপুর্ণ মানতে পারি তখনই প্রায় সময়ই এই খেয়াল কেন চলে আসে যে, আমি দ্বীনদার হলে দ্বীনদার পরহেযগার একজন স্ত্রী পাব ইনশা আল্লাহ। অথচ কারও বিবাহ পর্যন্ত হায়াত থাকবে কিনা তারও তো কোনো গ্যারান্টি নেই। তাছাড়া দ্বীন মানতে হবে আল্লাহর জন্য। তাহলে এমন ভাবনা কেন মনে চলে আসে, আর এমনটা আমার মন রিয়া হিসেবেই সায় দিতে থাকে। অথচ রিয়া করলে তো সবশেষ!!! হুজুর, কী করা যায় নসীহত চাচ্ছি ?
জাজাক আল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদিস শরিফে  বলা হয়েছে, 
‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে। ’ -তিরমিজি

আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। 

অনেক উলামায়ে কেরামগন রাগ উঠলে   
‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম’ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
,
রক্ত মানুষ বলতেই রাগ আসবেই,এটাই স্বাভাবিক।
সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় রাগ সম্পর্ণ দূর করা সাধারণত  সম্ভব নয়।
,
(০২)

"পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়" এ কথাটি ইসলাম সমর্থন করে না।

যিনার শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ বলেন: 
الزانية والذاني فاجلدوا كل واحد منهما مأة جلدة

ব্যাভিচার পুরুষ এবং ব্যবভিচারিনী নারীকে একশ দোররা প্রদান করো৷

 চুরির শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ বলেন:

السارق والسارقة فاقطعوا ايديهما

চোর পুরুষ হোক আর নারী হোক তাদের হাত কেটে দাও৷

সব জায়গাই চোর ও যিনাকার ও ব্যাভিচরিনীকে শাস্তি দেয়া কথা বলছে৷ চুরি যিনা ও অপরাধ কে শুধু ঘৃনা করার মধ্যে সীমিত করে দেয় নি।
বরং পাপিকে দুনিয়াতেই মানুষের হাতে শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছেন।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺑْﻐَﺾَ ﻋَﺒْﺪًﺍ ﺩَﻋَﺎ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞَ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﺑْﻐِﺾُ ﻓُﻠَﺎﻧًﺎ ﻓَﺄَﺑْﻐِﻀْﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻴُﺒْﻐِﻀُﻪُ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞُ، ﺛُﻢَّ ﻳُﻨَﺎﺩِﻱ ﻓِﻲ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳُﺒْﻐِﺾُ ﻓُﻠَﺎﻧًﺎ ﻓَﺄَﺑْﻐِﻀُﻮﻩُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻴُﺒْﻐِﻀُﻮﻧَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺗُﻮﺿَﻊُ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﺒَﻐْﻀَﺎﺀُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ

অর্থ: আল্লাহ তাআলা যখন কোনো লোককে অপছন্দ করেন তখন জিবরিল আ. কে ডাক দিয়ে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে অপছন্দ করি তুমিও তাকে অপছন্দ কর, তখন জিবরিল আ. তাকে অপছন্দ করেন।তারপর তিনি আকাশবাসীদেরকে ডাক দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অমুক বান্দাকে অপছন্দ করেন, তাই আপনারাও অপছন্দ করুন, তখন লোকেরা তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। অত:পর পৃথিবীতে তার জন্য ঘৃণা লিখে দেওয়া হয়।
সহিহ মুসলিম (২৬৩৯)
,
ﺑﻐﺾ শব্দ এসেছে, যার অর্থ ঘৃণা করা , বিদ্বেষ পোষণ করা, অপছন্দ করা।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত "পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়" এ কথাটি ইসলাম সমর্থিত কথা নয়।
,
(০৩)
বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামগন আমাদের দেশে বর্তমান যেসব হক্কানী মাশায়েখদের কথা বলেছেন,
তাদের মাঝে রয়েছেন–
১-    সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এর খলীফাগণ।
২-    হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ এর খলীফাগণ।
৩-   সাইয়্যেদ আস’আদ মাদানী রহঃ এর খলীফাগণ।
৪-    হাকীম আখতার রহঃ এর খলীফাগণ।
৫-    হারদুই রহঃ এর খলীফাগণ।
৬-   চরমোনাইয়ের পীর।
৭-    মুফতী আহমদ শফী রহঃ এর খলিফাগন  ।
৮-   মাওলানা আব্দুল মতীন দা.বা. ঢালকানগর মাদরাসা।
৯-   মাওলানা ইদ্রিস শায়েখে সন্দিপী রহঃ এর খলীফাগণ।
১০-   হাফেজ্জী হুজুর রহঃ এর খলীফাগণ।
১১-   উজানীর পীর।
১২-   মাওলানা আব্দুল হামীদ মধুপুর।
এছাড়া আরো অনেক পীর মাশায়েখ রয়েছেন আমাদের দেশে। যারা মাজারপূজা, কবরপূজা, পীরপূজা ও বাউলগান, গান-বাজনা করার শিক্ষা নয়, বরং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্বের দিকে আহবান করেন।
তাদের যে কাউকে মুরব্বি বানাতে পারেন।
,
স্থানীয় কোনো কওমী মাদ্রাসার ওস্তাদদের থেকেও এই বিষয়ে সহায়তা পরামর্শ নিতে পারেন।     
,
(০৪)
আপনি দ্বীনদার হলে দ্বীনদার পরহেযগার একজন স্ত্রী পাবেন, ইনশা আল্লাহ। 
আল্লাহ তায়ালা বলেন      

الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ ۚ أُولَٰئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ ۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ [٢٤:٢٦

দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। [সূরা নূর-২৬]

প্রশ্নে উল্লেখত কথা কোনো রিয়া নয়।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত টেনশন অন্তর থেকে ঝেড়ে ফেলুন। 
মন দিয়ে ইবাদত করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
–1
৪ নাম্বার উত্তরটার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি।
এই আয়াতটিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা চরিত্র অনুযায়ী আমাদের জন্য কেমন মেয়ে উপযুক্ত হবে সেটাই বলেছেন।

যদি আপনি সঠিক বলে থাকেন তাহলে বলুন,

ফেরাউন দুশ্চরিত্র ছিল, তার স্ত্রী কি দুশ্চরিত্রা ছিল?
বর্তমান সমাজেও স্ত্রী পরহেজগার স্বামী দুশ্চরিত্র অথবা স্বামী পরহেজগার স্ত্রী দুশ্চরিত্রা এরকম দেখা যায় - এটার কি ব্যাখ্যা দিবেন আপনি?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...