শরীয়তের বিধান মতে তালাকের পর স্ত্রী যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে,এ শর্তে সন্তান ছেলে হলে ৭ বছর,মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত তার লালন পালন স্ত্রী তথা সন্তানের মা করতে পারবে।
এটি তার হক,তবে তিনি অন্যত্রে বিবাহ বসলে তার হক আর থাকবেনা।
এ সময়ের মধ্যে তিনি যদি তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে দূরে চলে যায়,তাহলে সেটি মন্দ বিষয়।
সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেওয়া তার পিতার প্রতি জুলুম।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর সাথে ঝগড়া না করে,এমনিতেই নিজ প্রয়োজনে অন্য কোনো জেলায় স্ত্রী স্থানান্তরিত হতে পারবে।
তবে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে যদি এমনটি করে,তাহলে সেটি জায়েজ নয়।
,
যেহেতু সন্তানের সাথে তার পিতার হক রয়েছে,যেটি অন্য দেশে গেলে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে,তাই স্ত্রী তথা সন্তানের মা তাকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারবেনা।
আবু দাউদ শরীফের ২২৭৬ নং হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو يَعْنِي الْأَوْزَاعِيَّ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার।
(আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: সনদ সহীহ।)
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 19755 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তান আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার মার হয়।
কিন্তু খরচ বাবার।
এর পর পিতা নিতে পারবে,যদি মায়ের কাছে সন্তানের থাকার দরুন তার আখলাক মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে তার আগেই তাকে তার বাবা নিতে পারবে।
মা ঝগড়া করে সন্তানকে নিয়ে অন্যত্রে চলে যাওয়া,অনেক মন্দ বিষয়।
,
মোট কথা পিতার সাথে তার দেখা করতে না দেওয়া, এটি সন্তানের বাবার উপর জুলুম।
নয় বছর পর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার।
,
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144001200246 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তানের আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের মা তার লালন পালন করতে পারবে,খরচ দিবে তার পিতা।
,
তবে শর্ত হলো তার মা অন্যত্রে বিবাহ না বসা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১০/১৪৩)
,
যদি বিবাহ হয়ে যায়,তাহলে তার মায়ের হক আর থাকবেনা।
যদি মা খারাপ পথে যায়,তাহলে মেয়ে সন্তানের নয় বছর পর্যন্ত সন্তানের নানি (নানি মারা গেলে সন্তানের দাদি) তার লালন পালন করতে পারবে।
ছেলে সন্তান সাত বছর আর মেয়ে সন্তান নয় বছর হওয়ার পর তার লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার।
এক্ষেত্রে কেউই তার হক নষ্ট করতে পারবেনা।
মহিলার ২য় স্বামী যদি মহিলাকে তার ১ম স্বামীর ঘরের সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেয়,তাহলে সে তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাহিরে গিয়ে দেখা করতে পারবেনা।
হ্যাঁ যদি ১ম স্বামীর ঘরের সন্তানেরা ঐ মহিলা যেই বাড়িতে অবস্থান করছে,সেখানে দেখা করতে আসে,সেক্ষেত্রে তাদের সাথে দেখা করতে পারবে।
মোট কথা ১ম স্বামীর ঘরের সন্তানের সাথে দেখা করার জন্য মহিলা তার ২য় স্বামীর ঘর হতে স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাহিরে যেতে পারবেনা।