আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।আমি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপলক্ষ নিয়ে ডিজাইন করে থাকি। কয়েকদিন পর ব্ল্যাক ফ্রাইডে নামক একটি উপলক্ষ আসবে যে দিন ইউরোপের দেশগুলোতে শপিং এর ক্ষেত্রে বিশাল পরিমাণ ছাড় দেয়া হয়। এই ছাড় গুলোর প্রচার করার জন্য বিভিন্ন কম্পানি বিভিন্নরকম পোস্টার ডিজাইন করার কাজ দেন আমাদের। তো ব্ল্যাক ফ্রাইডে সম্পর্কিত এই ডিজাইন এর কাজগুলো করা কি ইসলাম এর দৃষ্টিতে জায়েয হবে?  কাজগুলো কি আমি করতে পারবো? বোঝার সুবিধার জন্য ব্ল্যাক ফ্রাইডের একটি ডিজাইন এর লিংক নিচে যুক্ত করে দিলাম।

https://images.app.goo.gl/DK4J7o251ZBjMUuZ7

জাযাকুমুল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ সম্পর্কে পড়াশোনা করে যতটুকু জানতে পেরেছি,তাহা হলোঃ-

‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ আসলে কী

যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের চতুর্থ বৃহস্পতিবার ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’ (শুকরিয়া দিবস) হিসেবে পালিত হয়। এর পরের দিন—অর্থাৎ প্রতি নভেম্বর মাসের শেষ শুক্রবার ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হিসেবে পরিচিত। তবে সেটি একই তারিখে হওয়ার কোনো নিয়ম নেই। ২০১৫ সালে সেটি হয়েছে ২৭ নভেম্বর, ২০১৬ সালে ২৫ নভেম্বর, আর ২০১৭ সালে ২৪ নভেম্বর।

তারিখ নয়, বরং নভেম্বর মাসের শেষ শুক্রবার হওয়াই এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

১৮৬৯ সালের দিকে আমেরিকায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল, সেই সময় মন্দা থেকে উত্তরণের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ দিবসের কথা ভেবেছিলেন ব্যবসায়ীরা। ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তাঁরা পণ্যে বিশেষ ছাড় দেন। কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, ওই ছাড়ে তাঁদের অনেক লস হয়। পরে দিনটি ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

সাধারণত ব্যবসায়ীরা ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’তে পণ্য বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করেন। ওই দিন ৭০ থেকে ৯০ ভাগ পর্যন্ত মূল্য ছাড় দেওয়ার নজিরও রয়েছে। ন্যূনতম এক ভাগ হলেও ছাড় দেওয়া হয়। মূলত ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টানদের বড়োদিন উপলক্ষে কেনাকাটা ওই দিন থেকে শুরু হয়। সে উপলক্ষেই এ ছাড়।

তাহলে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ নামটি কোত্থেকে এসেছে? এ বিষয়ে কয়েকটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।

এক. ১৯৫০ সালে ফিলাডেলফিয়া রাজ্য পুলিশ ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’র পরের দিনকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ নামে অভিহিত করেছিল। কারণ এই দিনে আমেরিকায় বছরের সবচেয়ে বড় লেনদেন হতো ও বছরের সবচেয়ে উত্তেজনাকর ফুটবল গেম অনুষ্ঠিত হতো। ওই ফুটবল প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত আমেরিকার সেনাবাহিনী। এই খেলার ফলে শহরের রাস্তাজুড়ে থাকত প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম। এ ছাড়া ফুটপাতে লেগে থাকত মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। এসব সামলাতে বেশ বেগ পেতে হতো ফিলাডেলফিয়া পুলিশ ও বাস ড্রাইভারদের। তাই দিনটি পুলিশদের জন্য ছিল খুবই বাজে একটা দিন। এ জন্য তারাই এই দিবসের নাম দিয়েছিলেন ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’। 

দুই. অনেকের মতে, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ শুরু হয় মধ্যরাত থেকে। মধ্যরাতেই ক্রেতাদের লাইন ধরা শুরু হয়, অন্ধকার থাকতেই স্টোর ওপেন করে দেওয়া হয়। মানুষ হুড়মুড় করে দোকানের ভেতর ঢুকে যে যেটা আগে ধরতে পারে, সে সেটা কিনে নেয়। পণ্য বিক্রির এ ব্যাপারটা শেষ হয়ে যায় দিনের আলো ফোটার আগে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল’। 

তিন. ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা হলো—যেসব বিক্রেতার বিক্রি-বাট্টা কমতে কমতে হিসাবের খাতায় লাল দাগ নেমে যায়, তাঁদের এই দিনের বিক্রির পর পুনরায় তা কালো কালির আঁচড়ে ফিরে আসে। তাই এ শুক্রবারকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বলে অভিহিত করা হয়।

চার. বিশ্বের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শুক্রবার দিনটিতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সেই দুঃসহ স্মৃতি থেকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ শব্দের প্রচলন হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক সংকট দেখা দেয়। ৮ জুন, ১৬৮৮ সালে কিং জেমস দ্বিতীয় সাতজন ‘অ্যাংলিকান বিশপ’কে গ্রেপ্তার করেন। ১৮ অক্টোবর, ১৮৮১ সালে হারিকেনের আঘাতে স্কটল্যান্ডের আইমাইথে প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়। ১৮ নভেম্বর, ১৯১০ সালে ইংল্যান্ডে নারীর ভোটাধিকারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা হয়। ২০ অক্টোবর, ১৯১৬ সালে লেইক এরিতে প্রচণ্ড ঝড়ে চারটি জাহাজ ডুবে যায়।

২২ নভেম্বর, ১৯৬৩ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে গুপ্তহত্যা করা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮ সালে ইরানের তেহরানে অবস্থিত ‘ময়দানে জালেহে’ বিক্ষোভকারীদের গণহত্যা করা হয়। ৩১ জুলাই, ১৯৮৭ সালে কানাডায় ভয়াবহ টর্নেডো আঘাত হানে। ১২ মার্চ, ১৯৯৩ ভারতের মুম্বাইয়ে সিরিজ বোমা হামলা হয়। ২৬ জুন, ২০১৫ ফ্রান্স, কুয়েত, সোমালিয়া, সিরিয়া ও তিউনিসিয়ায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। কাকতালীয়ভাবে উল্লিখিত দিনগুলো ছিল শুক্রবার। তাই অনেকের কাছে শুক্রবার ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ নামে পরিচিত।
(সংগৃহীত।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত বিবরণ মতে বুঝা যায় যে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ আসলে মুসলিমদের পালন করার মতো কোনো দিন নয়। 
এ দিনকে কেন্দ্র করে কুলক্ষন ইত্যাদি 
শরীয়াহ বিরোধী আকীদা থাকায় এদিন কোনো মুসলিমের জন্য পালন করা জায়েজ নয়।

★ব্ল্যাক ফ্রাইডে সম্পর্কিত এই ডিজাইন এর কাজগুলো করার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।

কারো কারো মতে জায়েজ,কারো কারো মতে জায়েজ নয়।
মতবিরোধ থাকায় ব্ল্যাক ফ্রাইডে সম্পর্কিত ডিজাইন করে ইনকাম করলে সেই ইনকামকে হারাম বলা না গেলেও সতর্কতামূলক এমন ডিজাইন না করার পরামর্শ থাকবে। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...