আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
199 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)

আসসালামু আলাইকুম তারিখগুলো একটু গুরুত্বপূর্ণ, তাই দেওয়া

ফেব্রুয়ারি ২০২১: স্বামী হিসেবে প্রায় বছর যোগাযোগ না রাখা কোনো দায়িত্বই পালন না করায় নাজনীন ফয়সালকে তালাকের নোটিশ পাঠায়। লক্ষ্য করুন: নোটিশে উকিল লিখেন- ফয়সালকে নাজনীন তিন তালাক দিয়েছেন (নিজের নফসের ওপর নয়) নাজনীন সেই নোটিশ স্বাক্ষর করে ফয়সালের ঠিকানায় পাঠান। ফয়সাল বিষয়টা জানলেও কিছু বলেনি।

১২ জানুয়ারি ২০২২: নাজনীন এবং আকাশ ধর্মীয় সামাজিকভাবে বিয়ে করে

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩: আকাশ জানতে পারে স্ত্রী তিন তালাক দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আকাশ ঢাকা থেকে ফোনে নাজনীনকে ফয়সালের নাম উল্লেখ করে নিজের নফসের ওপর এক তালাক, দুই তালাক তিন তালাক নিতে বলে। নাজনীন ফয়সালের কাছ থেকে নিজের নফসের ওপর তিন তালাক নেয়

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩: আকাশ নাজনীনের মধ্যে ঝগড়া হয়। আকাশ ঢাকা কাজী অফিস থেকে কক্সবাজারে নাজনীনের কাছে এক তালাকের (বায়েন) নোটিশ পাঠায়। 

১৭ জুলাই ২০২৩: আকাশ তিন মাসের বেশি সময় পর ঢাকা কাজী অফিসে বায়েন তালাক রেজিস্ট্রি করে। নাজনীনকেও সেটা জানায়

১৯ জুলাই ২০২৩: আকাশ নাজনীনকে মুখে উচ্চারণ করে তিন তালাক দেয়। নাজনীন সেটা শোনে

প্রশ্ন:

. ফয়সাল নাজনীনের তালাক হয়েছিল কি-না?

. নাজনীন আকাশের বিয়ে সঠিক ছিল কি-না?

. নাজনীন দ্বিতীয় স্বামী আকাশের কথায় প্রথম স্বামী ফয়সালের কাছ থেকে নিজের নফসের ওপর যেভাবে তালাক দিয়েছে সেটা সঠিক হয়েছে কি-না?

. আকাশের তালাকের নোটিশ, ইদ্দত শেষে তালাক রেজিস্ট্রি তিন তালাকের পর তাদের সম্পর্ক আসলে ঠিক কী পর্যায়ে আছে? আকাশ নাজনীনের বিয়ে তালাক সঠিক ছিল কি-না?

. আকাশ নাজনীন আবার বিয়ে করতে চাইলে কী করতে হবে?

বি. দ্র. ফয়সাল-নাজনীন এবং আকাশ-নাজনীন, কোনো সংসারেই সন্তান হয়নি।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।    

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

ফয়সাল  নাজনীনের তালাক হয়েছিলো না।

নাজনীন  আকাশের বিয়ে সঠিক ছিলনা।

. নাজনীন যদি স্বামী (ফয়সাল) কর্তৃক নিজের নফসের উপর তালাক প্রদানের অধিকার দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে নাজনীন দ্বিতীয় স্বামী আকাশের কথায় প্রথম স্বামী ফয়সালের কাছ থেকে নিজের নফসের ওপর যেভাবে তালাক দিয়েছে, সেটা সঠিক হয়েছে।

আকাশ  নাজনীনের বিয়ে  তালাক কোনোটিই সঠিক ছিলনা।না?

আকাশ  নাজনীন আবার বিয়ে করতে চাইলে এক্ষেত্রে দেখতে হবে যে নাজনীন কি তার স্বামী (ফয়সাল) কর্তৃক নিজের নফসের উপর তালাক প্রদানের অধিকার প্রাপ্ত কিনা,যদি অধিকার প্রাপ্ত হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এর পর থেকে নাজনীন এর ইদ্দতকাল (৩ হায়েজ) শেষ হয়ে থাকলে তারা এখন পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিয়ে ঘর সংসার করতে পারবে।

আর যদি নাজনীন তার স্বামী (ফয়সাল) কর্তৃক নিজের নফসের উপর তালাক প্রদানের অধিকার প্রাপ্ত না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে ফায়সাল নাজনীনকে তালাক দেয়া ও তালাক পরবর্তী ইদ্দত পালনের আগ পর্যন্ত আকাশ তাকে কোনো ক্রমেই বিবাহ করতে পারবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
ফয়সাল (প্রথম স্বামী) ও নাজনীনের নিকাহনামার ১৮নং কলামে স্ত্রীকে নিজের নফসের ওপর তালাক নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া ছিল।
by (574,260 points)
এক্ষেত্রে নাজনীন দ্বিতীয় স্বামী আকাশের কথায় প্রথম স্বামী ফয়সালের কাছ থেকে নিজের নফসের ওপর যেভাবে তালাক দিয়েছে, সেটা সঠিক হয়েছে।

★সুতরাং ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এর পর থেকে নাজনীন এর ইদ্দতকাল (৩ হায়েজ) শেষ হয়ে থাকলে তারা এখন পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিয়ে ঘর সংসার করতে পারবে। নতুন করে অবশ্যই বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...