بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো যদি রোযাদার
হস্তমৈথুনের কারনে বীর্যপাত করে, তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে শুধু কাজা ওয়াজিব
হবে। কাফফারা
আদায় করতে হবেনা। আর এটা যে ভয়াবহ গুনাহের
কাজ তা বলাই বাহুল্য। হাদীস শরীফে কামেচ্ছা চরিতার্থ করা থেকে বিরত থাকাকে রোযার অংশ
হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ঐ সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জান। রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার
নিকট মেশকের চেয়েও বেশি প্রিয় (আল্লাহ তাআলা বলেন,) রোযাদার আমার জন্য পানাহার করা থেকে এবং কামেচ্ছা চরিতার্থ
করা থেকে বিরত থাকে।-সহীহ বুখারী ১/২৫৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭২; ফাতাওয়া শামী ২/৩৯৯
الصَّائِمُ
إذَا عَالَجَ ذَكَرَهُ حَتَّى أَمْنَى يَجِبُ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ، وَهُوَ
الْمُخْتَارُ كَذَا فِي التَّجْنِيسِ والولوالجية وَبِهِ قَالَ عَامَّةُ
الْمَشَايِخِ كَذَا فِي النِّهَايَةِ (البحر الرائق، كتاب الصوم، باب ما يفسد
الصوم وما لا يفسده-2/475، وكذا فى الهندية-1/205، الباب الرابع فيما يفسد وما لا
يفسد، كتاب الصوم(
সারমর্মঃ রোযাদার যদি নিজ লিঙ্গকে চেষ্টা (মৈথুন) করে,তাতে যদি বীর্যপাত হয়ে যায়,তাহলে রোযার কাজা
আদায় করা ওয়াজিব হবে।
https://ifatwa.info/56305/?show=56305#q56305
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
যেনা অনেক উঁচু স্তরের গুনাহ। হস্তমৈথুন
করা যদিও বড় গুনাহ,তবে
যেনা থেকে নিম্নস্তরের গুনাহ। এই জন্যই কিছু ইসলামি স্কলারগন যেনায় লিপ্ত হওয়ার প্রবল
আশংকা হলে হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত করার অনুমতি প্রদান করে থাকেন।
হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে
বীর্যপাত, স্বমৈথুন
বা হস্তমৈথুন করা কোরআন সুন্নাহ ও সুস্থ বিবেকের নির্দেশ মতে হারাম ও কবিরা গুনাহ।
আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عبد الله بن
عمرو بن العاص عن النبي صلى الله عليه وسلم سبعة لا ينظر الله عز وجل إليهم يوم
القيامة ولا يزكيهم ويقول : ادخلوا النار مع الداخلين : الفاعل والمفعول به ،
والناكح يده ، وناكح البهيمة ، وناكح المرأة في دبرها ، وناكح المرأة وابنتها ،
والزاني بحليلة جاره ،والمؤذي لجاره حتى يلعنه
“সাত শ্রেণীর লোকের
উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষণ করেন, কিয়ামতের দিন এদের দিকে তাকাবেন না এবং এদেরকে জাহান্নামে প্রবেশের
আদেশ দিবেন। এরা হল–সমকামী,
হস্তমৈথুনকারী,
জীবজন্তুর সাথে সঙ্গমকারী,
স্ত্রীর সঙ্গে পুংমৈথুনকারী,
কোন মহিলা ও তার কন্যাকে একসাথে বিবাহকারী,
প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারকারী
এবং প্রতিবেশীকে এমন কষ্টদানকারী যে, যার কারণে সে তাকে অভিশাপ দেয় । তবে এরা যদি তাওবা করে
তাহলে তারা সবাই হয়ত ক্ষমা পেতে পারে।” (বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান৭/৩২৯)
★সুতরাং সকলের জন্য উচিত যে আগে এই জঘন্য কাজ ছেড়ে দিতে হবে। শুধু রোযা রাখা হলো,কিন্তু হস্তমৈথুন চালিয়ে যাওয়া হলো,এটি ঠিক নয়। এটি একটি মারাত্মক রোগ,
যেটি পুরোপুরি ছাড়া অনেকের কাছে খুবই মুশকিল।
★নিচের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে:
নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে
এবং আল্লাহর কাছে বেশী বেশী ইস্তেগফার করে, তাঁকে
স্মরণ করে, তাঁর
কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
اتْلُ مَا
أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى
عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ
مَا تَصْنَعُونَ
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট
কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত
রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)
একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ
ﷺ-কে বলল,
অমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে
জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, সে
কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই
বলল, হ্যাঁ,
পড়ে। রাসূলুল্লাহ ﷺ
বললেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন
খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)
হস্তমৈথুনের বিধান সম্পর্কে
জানুনঃ https://ifatwa.info/347/
হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার বিস্তারিত
আমল জানুনঃ https://ifatwa.info/9968/
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে যদি সামনের রাস্তায় ঘষার পর বীর্যপাত হয়
তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে। উক্ত নফল রোজার নিয়ত করার কারণে তা কাযা করা আবশ্যক। বীর্যপাত না হলে রোজা ভঙ্গ
হবে না। তবে নারীদের জন্য যদিও তা হস্তমৈথুনের
অন্তর্ভূক্ত নয় বলে কেউ কেউ মত ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু নি:সন্দেহে
এটি একটি নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ,
যা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কেননা,
এমন কাজের দ্বারা বীর্যপাত হওয়ার সমূহ
সম্ভবনা থাকে। আর ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত করালে তা লজ্জাস্থানের খেয়ানতের মধ্যে পরিগণিত
হবে। বিধায় আপনার জন্য উচিত দ্রুত বিয়ে করা। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য এবং নিজের লজ্জাস্থানকে
হেফাজতের জন্য আপনার উপর বিয়ে করা আবশ্যক।