بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
এক. https://ifatwa.info/26130/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়ঃ
এক. জাগ্রত বা ঘুমন্ত অবস্থায় উত্তেজনার সঙ্গে বীর্যপাত হওয়া।
ঘুমন্ত অবস্থায় উত্তেজনা অনুভব না হলেও গোসল ফরজ। কেননা ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে
মানুষ অনেক সময় টের পায় না। তাই কোনো ব্যক্তি ঘুম থেকে ওঠার পর যদি তার কাপড়ে নাপাকির
চিহ্ন দেখে, তাহলে তার
স্বপ্নদোষ বা বীর্যপাতের কথা স্মরণ থাকুক বা না থাকুক, সর্বাবস্থায়
গোসল ফরজ হবে। (হেদায়া ১/৪৫, আন নুতাফ ফিল ফাতাওয়া পৃ. ২৯)
عن علي رضي
الله عنه قال : كنت رجلا مذاء فقال لي رسول صلي الله عليه وسلم الله إذا رأيت
المذي فاغسل ذكرك وتوضأ وضوءك للصلاة و إذا فضخت الماء فاغتسل .رواه النسائي بسند
صحيح (193)
যার সারমর্ম হলো
যখন পানি উত্তেজনার সাথে (টপকিয়ে) পড়বে তখন গোসল ফরজ হবে।
ফাতাওয়ায়ে তাতারখানীয়াতে
আছে
لمافی
الفتاوٰی التاتارخانیۃ (۱۵۲/۱): أسباب الغسل ثلاثۃ الجنابۃ والحیض
والنفاس۔
যার সারমর্ম হলো
৩ টি কারনে গোসল ফরজ হয়। জানাবত,হায়েয,নিফাস।
দুই. স্ত্রী সহবাস করা। সহবাসের ক্ষেত্রে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে
পুরুষাঙ্গের সর্বনিম্ন সুপারি পরিমাণ অংশ প্রবেশ করালেই উভয়ের ওপর গোসল ফরজ হয়ে যাবে, চাই বীর্যপাত হোক বা না হোক। (বুখারি,
হা. ২৯১, মুসলিম, হা. ৩৪৩)
হাদীস শরীফে এসেছে
عن عائشة رضي
الله عنها قالت : قال رسول صلي الله عليه وسلم الله : ( إذا جاو ز الختان الختان
فقد وجب الغسل )رواه ابن حبان بسند صحيح
( 1177)
যার সারমর্ম হলো
রাসুল সাঃ বলেছেন যখন পুরুষের লিঙ্গ মহিলার
লজ্জাস্থানে প্রবেশ করে, তখন গোসল
ফরজ হয়ে যাবে। অন্যত্রে এসেছে ,
عن أبي هريرة
رضي الله عنه عن النبي صلي الله عليه وسلم قال : إذا جلس بين شعبها الأربع وأجهد
نفسه فقد وجب الغسل أنزل أو لم ينزل. رواه أحمد بسند صحيح
(8557)
রাসুল সাঃ বলেছেন
যে যখন পুরুষ মহিলার চারযানুর মাঝে বসে সহবাসের
চেষ্টা করবে,তখনই গোসল
ফরজ হয়ে যাবে, বির্যপাত হোক বা না হোক।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে
আছে
وفی الھندیۃ(۱۵/۱): الإیلاج
فی أحد السبیلین اذا تواترت الحشفۃ یوجب الغسل علی الفاعل والمفعول بہ أنزل
أولم ینزل۔
স্ত্রীর যৌনাঙ্গে
পুরুষাঙ্গের সর্বনিম্ন সুপারি পরিমাণ অংশ প্রবেশ করালেই উভয়ের ওপর গোসল ফরজ হয়ে যাবে, চাই বীর্যপাত হোক বা না হোক।
তিন. নারীদের হায়েয (ঋতুস্রাব) এবং নেফাস (সন্তান প্রসবোত্তর
স্রাব) বন্ধ হওয়ার পরও গোসল ফরজ। (রদ্দুল মুহতার ১/১৬৫)
হাদীস শরীফে এসেছে,
وعن عائشة
رضي الله عنها قالت دخلت أسماء رضي الله عنها على رسول الله - صلي الله عليه وسلم
- فقالت يارسول صلي الله عليه وسلم الله كيف تغتسل إحدانا إذا طهرت من المحيض قال
« تأخذ سدرها وماءها فتوضأ ثم تغسل رأسها وتدلكه حتى يبلغ الماء أصول شعرها ثم
تفيض على جسدها ثم تأخذ فرصتها فتطهر بها » رواه أبود أو د بسند صحيح
314
যার সারমর্ম হলো
হযরত আসমা রাঃ রাসুল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন যে আমরা যখন হায়েয থেকে পবিত্র হবো,তখন কিভাবে গোসল করিবো?
তখম রাসুল সাঃ
গোসলের নিয়মাবলি বলে দিলেন,,,,,,,,,,
★গোসলের
ফরয তিনটি:
১. গড়গড়াসহ কুলি
করা।
২. নাকের নরম জায়গা
পর্যন্ত পানি পৌছানো।
৩. সমস্ত শরীরে
এমন ভাবে পানি পৌছানো যাতে কোনো জায়গায় চুল পরিমাণও ফাঁকা না থাকে।
★ফরজ
গোসলের নিয়ম:
১. গোসলের জন্য
মনে মনে নিয়্যাত করতে হবে। ৭
২. প্রথমে দুই
হাত কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধুতে হবে।
৩. এরপর ডানহাতে
পানি নিয়ে বামহাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধুতে হবে। শরীরের অন্য কোন
জায়গায় বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধুতে হবে।
৪. এবার বামহাতকে
ভালো করে ধুইয়ে ফেলতে হবে।
৫. এবার ওজুর নিয়মের
মত করে ওজু করতে হবে।
৬. ওজু শেষে মাথায়
তিনবার পানি ঢালতে হবে।
৭. এবার সমস্ত
শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে ৩ বার ডানে তারপরে ৩ বার বামে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুতে হবে, যেন শরীরের কোন অংশই বা কোন লোমও শুকনো না থাকে।
নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় পানি দিয়ে ধুতে হবে।
৮. সবার শেষে একটু
অন্য জায়গায় সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ধুতে হবে।
মনে রাখতে হবে:
১. পুরুষের দাড়ি
ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে।
২. এই নিয়মে গোসলের
পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নাই, যদি ওজু না ভাঙ্গে।
দুই. **অবাঞ্ছিত লোম,
নখ ইত্যাদি বিনা ওজরে চল্লিশ দিন পর কাটাকে
মাকরূহ তাহরীমি বা গোনাহর কাজ। এ মর্মে সাহাবী আনাস রাযি. বলেন,
وُقِّتَ
لَنَا فِي قَصِّ الشَّارِبِ، وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ، وَنَتْفِ الإِبِطِ،
وَحَلْقِ الْعَانَةِ، أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ يَوْماً
অর্থাৎ,
গোঁফ ছোট রাখা ,
নখ কাঁটা,
বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা এবং নাভীর নিচের
লোম চেঁছে ফেলার জন্যে আমাদেরকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যেন,
আমরা তা করতে চল্লিশ দিনের অধিক দেরী না
করি। (মুসলিম ২৫৮)
**নাভীর নীচের
অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা হলো : পায়ের পাতার উপর ভর করে বসা অবস্থায় নাভী থেকে চার পাঁচ
আঙ্গুল পরিমাণ নীচে যে ভাঁজ বা রেখা সৃষ্টি হয় সেখান থেকেই অবাঞ্ছিত লোমের সীমানা শুরু।
ঐ ভাঁজ থেকে দুই উরু পর্যন্ত ডান বামের লোম, গোপনাঙ্গের চার পাশের লোম,
অণ্ডকোষ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত উদগত লোম
এবং প্রয়োজনে মলদ্বারের আশ-পাশের লোম অবাঞ্ছিত লোমের অন্তর্ভুক্ত। (আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা
কুয়েতিয়্যা ৩/২১৬-২১৭, মরদূকে
লেবাস আউর বালূঁকে শরয়ী আহকাম ৮১)
**পুরুষের জন্য
চেঁছে ফেলা এবং মহিলাদের জন্য উপড়িয়ে ফেলা মুস্তাহাব। (কিতাবুল ফিকহ আ’লাল মাযাহিবিল
আরবাআ’ ২/৪৫)
** ব্লেড,
ক্ষুর বা কাঁচি দ্বারা গোপনাঙ্গের লোম
পরিস্কার করা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য জায়েয। অনুরূপভাবে হেয়ার রিমুভার জাতীয় ক্যামিক্যাল
দ্বারা পরিস্কার করাতেও শরীয়তের কোন বাধা নেই। কেউ যদি কাঁচি দ্বারা ছোট করে রাখে,
তাহলে জায়েয হবে,
তবে উত্তম হবে না।
فإن أزال
شعره بغير الحديد لا يكون على وجه السنة
যদি কেউ চেঁছে
না ফেলে অন্য কোনভাবে পরিষ্কার করে তাহলে তা সুন্নাহ অনুযায়ী হবে না। (কিতাবুন নাওয়াযিল
১৫/৫৪৭)