আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
210 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার যাওজ আর আমার এইজ ডিফারেন্স একটু বেশি, তাছাড়া উনার লিভারের প্রব্লেম থাকায় চুল পেকে অনেক বেশি পরিমাণে সাদা হয়ে গিয়েছে। যা দেখে আমার ভীষণ ভীষণ মন খারাপ হয়। (শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় )। আমি উনাকে কালো রঙ করতে নিষেধ করি অনেক আগে। কিন্তু ওওই যে প্রব্লেম এর কথা বললাম এজন্য কী উনি কালো রং করতে পারবেন? এতে কী গুণাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/12756/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম জায়েয পরিবর্তন ও নাজায়েয পরিবর্তন সম্পর্কে মূলনীতি উল্লেখপূর্বক বলেনঃ

(ক) জায়েয শারীরিক পরিবর্তনঃ

যদি কোনো মানুষ কষ্ট দূরীকরণার্তে বা কোনো দোষ দূরীকরণার্তে চায় উক্ত দোষ নিজের মাধ্যমে আসুক বা কোনো অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত হোক তাহলে এমতাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তন জায়েয।

যেমন উরফুজা ইবনে আস'আদ রাযি থেকে বর্ণিত

عن ﻋﺮﻓﺠﺔ ﺑﻦ ﺃﺳﻌﺪ ﺃﻧﻪ ﻗﻄﻊ ﺃﻧﻔﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻜُﻼﺏ، ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﻓﻀﺔ ﻓﺄﻧﺘﻦ ﻋﻠﻴﻪ، ﻓﺄﻣﺮﻩ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﺫﻫﺐ

কিলাবের যুদ্ধে উনার নাক কর্তিত হয়ে যায়,তখন তিনি রূপার নাক তৈরী করে লাগিয়ে নেন।কিন্তু উক্ত নাকে দুর্গন্ধ হয়ে যায়,যে জন্য নবীজী সাঃ উনাকে সর্ণের নাক বাধার অনুমিত প্রদান করেন।অতঃপর তিনি সর্ণের নাক বেধে নেন। (সুনানে তিরমিযি-১৭৭০)

(খ) নিষিদ্ধ শারীরিক পরিবর্তন তা কয়েক ধাপে বিভক্ত। যেমনঃ

(১) শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধনের যেসমস্ত পদ্ধতিতে কোরআন-হাদীসে নিষেধ এসেছে,তা সর্বদাই নিষিদ্ধ,তা নিষিদ্ধ হওয়ার  কোনো কারণ খোজা যাবে না বরং তা সবসময়ই নিষিদ্ধ থাকবে। যেমনঃ ভ্রু-কে চেঁছে সরু (প্লাক) করা,বা দেহাঙ্গে ট্যাটু অংকন করা ইত্যাদি।

এবং প্রত্যেক ঐ সমস্ত শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন যা কোরআন-হাদীসে বর্ণিত তা বিনা দ্বিধায় জায়েয।যেমনঃখৎনা করা,নক কাটা,নাভীর নীচ পরিস্কার করা,ইত্যাদি।

(২) ঐ সমস্ত শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন যা শরয়ী দলীল দ্বারা সরাসরি প্রমাণিত নয়, তা দু-প্রকার। হয়তো তা বাস্তবিক পরিবর্তন হবে নতুবা বাহ্যিক পরিবর্তন হবে। যদি তা বাস্তবিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় তাহলে তাও উপরোক্ত দালিলিক চাহিদায় হারাম সাব্যস্ত হবে। যেমনঃ দাড়ী সেভ করা। আর যদি বাহ্যিক পরিবর্তন হয়,কিন্ত দেখতে বাস্তবিক পরিবর্তন-ই মনে হয়,তাহলে তাও বাস্তবিক পরিবর্তনের ন্যায় হারাম হবে।

(৩) শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন বাহিরের কোনো জিনিষ দ্বারা শরীরের বহির্ভাগে হতে হবে, সুতরাং যদি কোনো খাদ্য খাওয়ার দরুন অথবা হাটাচলা বা ব্যায়ামের ধরুন স্বাভাবিক নিয়মে শরীরে কোনো পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ঘটে,

তাহলে তা নিষিদ্ধতার আওতাধীন হবে না। "ইনজেকশনের মাধ্যমে চুল কালো করাও হারাম।"

ক্রিম, লোশন, আতর, আরো অন্যান্য হালাল সামগ্রী মহিলাদের জন্য ব্যবহার জায়েয।

খাওয়াতিনকে যেব ও জিনত-৮৬-১০৬-১০৭-মুফতী জিয়াউর রহমান-মাকতাবাতুস সাঈদ, করাচী কর্তৃক ২০০৯সালে প্রকাশিত। সাজগোছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/466

ফুকাহায়ে কেরামদের আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে,কালো কলপ বিশেষ কিছু শ্রেণী ব্যতীত একদমই দেওয়া যাবে না।(জাওয়াহিরুল ফিকহ, ৭/১৫৯-মাকতাবাতু দরুল উলূম করাচী)

কালো কলপ ব্যতীত চুলে যেকোনো কালার দেয়া যেতে পারে যদি তা কাফিরগণ কে অনুসরণ করে না করা হয়। এবং পরপুরুষ কে দেখানোর উদ্দেশ্য না থাকে। (যেব ও যি-নত কে শরয়ী আহকাম-৭১)

হরমোনাল কারণে যদি স্বাভাবিক চুল পাকার বয়সের পূর্বে চুল পেকে যায়,তাহলে কালো খেযাব দেয়া যাবে। কেননা এখানে তো ধোঁকা দেয়া হচ্ছে না। অথচ ধোঁকা হওয়া দরুণই মূলত চুলে কালো খেযাব দেওয়ার বিধান মাকরুহে তাহরীমি ছিলো।

কেননা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى صُبْرَةِ طَعَامٍ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيهَا، فَنَالَتْ أَصَابِعُهُ بَلَلًا فَقَالَ: «مَا هَذَا يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ؟» قَالَ أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «أَفَلَا جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ كَيْ يَرَاهُ النَّاسُ، مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি ধোকা দিবে সে আমার উম্মতভূক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১০২) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/11239

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

কালো কলপ করা জায়েজ নেই। অন্য কোনো কালারের কলপ ব্যবহার করা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ আছে। সুতরাং আপনার জাওয (স্বামী) কালো রং ব্যতীত যেকোনো কালার চুলে দিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...