আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেব,
আমার মহল্লার দুইজন ভাই দুটি প্রশ্ন জানতে চেয়েছেন আমার কাছে। আমার উত্তর জানা না থাকায় জেনে জানাব বলেছি।

১ম প্রশ্ন:
Expert option, Pocket option এই ধরনের ওয়েবসাইট বা App থেকে ইনকাম জায়েজ কিনা?
কিভাবে এগুলো কাজ করে জানতে চাইলে
যা বলেছেন তিনি নিচে আমি তা লিখেছি,

' পকেট অপশনে দুই ধরনের কাজ, up down.
up এ যদি আপনি 1 ডলার দেন, সময় ২ মিনিট,  এই সময়ের মধ্যে যদি up হয়, একাউন্টে 1 ডলার লাভ হবে।  আর না হইলে 1 ডলার বাদ যাবে।ওই রকমি down নিচে নামলে ঐ সময়ের মধ্যে, তাইলে লাভ নইলে লস। '

২য় প্রশ্ন:
Vape, ই- সিগারেট এর বিধান কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মূলত জুয়া বলা হয়, যা লাভ ও লোকশানের মাঝে ঝুলন্ত থাকে, এমন অর্থের খেলার নাম  জুয়া।

كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الْقِمَارِ فَهُوَ مِنَ الْمَيْسِرِ حَتَّى لَعِبِ الصِّبْيَانِ بِالْجَوْزِ.
প্রত্যেক বাজি মাইছির তথা জুয়ার অন্তর্ভূক্ত এমনকি শিশুদের হারজিতের খেলাও জুয়ার অন্তর্ভূক্ত। [তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/১১৬, সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৯০-৯৩]
,
শরীয়তের বিধান মতে জুয়া স্পষ্ট আকারে হারাম।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا  [٢:٢١٩]

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]

হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এখানে লাভ লোকসান উভয়টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সুতরাং এখানে জুয়ার অর্থ পাওয়া যাচ্ছে।
বিধায় এটি জায়েজ নেই। 

(০২)
ইলেকট্রনিক সিগারেটের ভেতরে থাকে নিকোটিনের দ্রবণ যা ব্যাটারির মাধ্যমে গরম হয়। এর ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়। এটি মস্তিষ্কে ধূমপানের মতো অনুভূতির সৃষ্টি করে। 

গবেষকরা বলছেন, যারা ই-সিগারেট সেবন করছেন তাঁদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। দি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-সিগারেটে আছে জীবাণুনাশক ফরমালডিহাইড,যেটি ক্যানসার তৈরির উপাদান। 

জানুয়ারির ২৮ তারিখে ক্যালিফোর্নিয়া হেলথ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ই-সিগারেট মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং এটিকে আইনের আওতায় আনা উচিত। 

ই সিগারেটে আরো কিছু বিষয় রয়েছেঃ

ই-লিকুইড : ই-লিকুইড অথবা ই-জুস। এগুলো এমন এক ধরনের দ্রবণ যেগুলো তাপ উৎপাদন করে এবং অ্যারোসোলে রূপান্তর হয়। যেটা বাষ্পায়িত হয়ে বুকের ভেতরে প্রবেশ করে।

নিকোটিন : ই-সিগারেট এবং সাধারণ সিগারেট দুই ধরনের সিগারেটেই নিকোটিন ( নেশা জাতীয় দ্রব্য) থাকে। এটি মস্তিস্কের মধ্য স্নায়ুতে উদ্দীপকের কাজ করে। এটি রক্তচাপ, শ্বাসপ্রশাস এবং হৃদস্পন্দন বাড়ায়।

‘মানুষ সাধারণত ধূমপান করে নিকোটিনের কারণে’, বলে জানিয়েছেন গবেষক ডাক্তার মেসিজ গনিওইজ। তিনি নিউইর্কের রসওয়েল পার্ক সেন্টারের ইনস্টিটিউট ইন বাফেলো এর টোবাকো এবং ই-সিগারেট বিশেষজ্ঞ। ‘নিকোটিনের নেশা তৈরি করে। কিন্তু এটি ক্যানসার তৈরির কারণ নয়। কিন্তু ই-লিকুইডে থাকা  অন্যান্য উপাদান বেশ উদ্বেগ জনক।’

ফ্লেভোরিংস : ডাক্তার গনিওইজ জানান, একশোরও বেশি স্বাদের ই-সিগারেট রয়েছে। চেরি, চিজ কেক, সিনামোন, টোবাকো ইত্যাদি। এগুলো সব গন্ধযুক্ত খাবারে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ডায়াসেটিল রয়েছে। এটি সাধারণত পপকর্নের মাখনযুক্ত গন্ধ তৈরি করে। এর সাথে ফুসফুসের রোগের একটি যোগসূত্র রয়েছে এবং এটি বেশ ক্ষতিকরও।

প্রোপাইলিন গ্লাইকোল (পিজি) : পিজি গবেষণাগারে বানানো লিকুইড যা খাদ্য, ওষুধ এবং কসমেটিক বানানোর জন্য নিরাপদ। এটি রক-কনসার্টে কৃত্রিম ধোঁয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ফুসফুস এবং চোখে বিরক্তির উদ্রেগ করে। এটি ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের জন্য ক্ষতিকর। যেমন : অ্যাজমা ও এমপাইসিমা।

গ্লিসারিন : এটি গন্ধহীন এবং বর্ণহীন। তরল গ্লিসারিন অনেকটা মিষ্টি স্বাদের হয়। এটি বিভিন্ন পণ্যে পাওয়া যায়।

ধোয়া তৈরির তরল : ই-সিগারেটে ধোয়া তৈরির জন্য এক ধরনের ই-লিকুইড বা তরল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ধোয়া শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমন ক্ষতি সত্যিকারের সিগারেটেও হয় না বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালোফোর্নিয়ার অধ্যাপক বেনোউইটজ।

ই-সিগারেটে যেসব ক্যামিক্যাল রয়েছে : ই-সিগারেটে রয়েছে ফরমালডিহাইড ও এসিটালডিহাইড নামের দুটি রাসায়নিক দ্রব্য। এই উপাদান ই-লিকুইডের তাপমাত্রা বাড়ায়। দুর্ভাগ্যবশত এর ফলে আরো নিকোটিন তৈরি হয়। এ মধ্যে থাকা একরোলিন উত্তপ্ত গ্লিসারিন থেকে গঠিত। এটি ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।ধূমপায়ীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

বস্তুকণা এবং ধাতু

ই-সিগারেটের এরোসোল রয়েছে যেটি ক্ষতিকারক। এটি শরীরে শিরাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে। এবং স্নায়ুর  ওপর চাপ ফেলে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত বা টক্সিক ধাতু ই-সিগারেটের এরোসোলের ভেতর পাওয়া গেছে। যেমন : টিন, নিকেল, ক্যাডিয়াম, লেড ও মারকারি।
(সংগৃহীত।)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
Vape, ই- সিগারেট এর বিধান সিগারেটের বিধানের মতোই।
মাকরুহে তাহরিমি হবে। অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে হারাম।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لا ضرر ولا ضرار ক্ষতি ও ক্ষতি সাধনের কোন অনুমতি নেই। (সুনানে দারাকুতনী ৩০৭৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...