আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। উস্তাদ আমার অবস্থা বুঝে উত্তম পরামর্শ দিবেন প্লিজ।

আমার পরিবার প্র‍্যাক্টিসিং নয়। বিয়ের জন্য যখন আমার ছবি, বায়োডাটা ঘটককে দিতে চাচ্ছিলেন, তখন নামাজ-রোজা নিয়মিত পালন করেন এমন দু:সম্পর্কের এক আত্মীয় থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে। কিন্তু আমার পরিবার এতে রাজি ছিলেন না, এর প্রধান কারণ বরপক্ষের আর্থিক অবস্থা নড়বড়ে। তাই আমার পরিবার বলেন, তুমি যদি বিদেশ যাও (যেখানে আমার বড় ভাই থাকেন এবং আমার ভাবি অমুসলিম) তাহলে এখানে বিয়ে হবে। ওই প্রস্তাবে রাজি না হলে আমার ছবি কতজনের হাতে চলে যাবে। এদিকে আমি বিদেশ গেলে আমার ভাইর অমুসলিম ওয়াইফ ও পরিবারকে ইসলামের দাওয়াত দিতে পারব ইনশা আল্লাহ। অমুসলিম হলেও উনি একাধিকবার আমাদের বাসায় এসেছেন এবং ইসলাম সম্পর্কে উনার জানার মা শা আল্লাহ আগ্রহও আছে। আলহামদুলিল্লাহ আমার সাথে উনার ভালো সম্পর্কও। আমাদের বাসায় এসে উনি রোজাও রেখেছেন, নামাজ পড়তে চেয়েছেন। অল্প কয়েকদিনের জন্য আসেন এবং ভাষা ভিন্ন বিধায় এখনো সেভাবে উনাকে দাওয়াত দিতে পারি নি কিন্ত আমার বিশ্বাস উনাকে দাওয়াত দিলে উনি মুসলিম হবেন ইনশা আল্লাহ। আর আমি বাইরে গেলে স্থায়ীভাবে থাকার ইচ্ছাও নেই। আল্লাহ চাইলে ভিসা নাও হতে পারে ইত্যাদি দিক ভেবে আমি বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে রাজি হই এবং বিয়েও হয়। আমরা ওই দেশে এপ্লাইও করি এবং আলহামদুলিল্লাহ ভিসা রিজেক্ট হয়। সত্যি বলতে এই ১০ মাস আমি একবারও ভিসা হওয়ার জন্য দোয়া করি নি। বরং আল্লাহকে বলেছি আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য যা উত্তম তাই দিন। এখন সমস্যা হচ্ছে আমার শশুড়বাড়ির মানুষও প্র‍্যাক্টিসিং না। উনারা চাচ্ছেন আমরা আবার বিদেশ ট্রাই করি। শশুড়-শাশুড়ি, ভাসুর-দেবর-ননদ সবার ইচ্ছা এক আর আমি মোটেও চাচ্ছি না। আমার হাসবেন্ড আসলে সহজ-সরল মানুষ, উনার মাঝে দুরদর্শিতা কম। সহজে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যান। তাই উনার অবস্থান এমন যে আমি রাজি হলে উনি আবার এপ্লাই করবেন। এ অবস্থায় আমি পরিবারের শত্রু হয়ে যাচ্ছি। আমার শাশুড়ী কান্নাকাটি, অস্থিরতা এবং আমাদের মানষিক চাপ প্রয়োগ করছেন। একই ঘরে এভাবে সবার বিরুদ্ধে থাকা কতটা কষ্টকর তা বলার উপেক্ষা রাখে না। এদিকে এতদিন আমি বাইরে চলে যাব ভেবে আমাকে পর্দার ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন। এখন সেসবেও ভয় কাজ করছে। আমার শাশুড়ীর মতে, দেবর-ভাসুর ভাইর মত। উনাদের সামনে না গেলে রাগ করেন, নানু শাশুড়ীও আমাকে বুঝান। আমার শশুড়বাড়িতে কোনো কিছুর রুটিন নেই। মূলত আমার শশুড় বিদেশ থাকায় এই পরিবারটি এলোমেলোভাবে বড় হয়েছে। বাসায় সব সময় ঘন্টার পর ঘন্টা গীবত চলে। এখানে কথা বলা মানেই এক প্রকার গীবত। সারাটা সময় এগুলো এড়িয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে উনাদের আর্থিক অবস্থায়ও দিনদিন খারাপ হচ্ছে। আমার শশুড়ের কাজ চলে গেছে, আর দেশে যে দোকান আছে সেটায় অনেকদিন থেকে লসে আছেন। ইতিমধ্যে শাশুড়ী আর দেবর কোথায় থেকে সুদে বড় অংকের টাকা ধারও এনেছেন। এটা শুনে খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমি হারামে জড়াতে চাই না, আমার শরীর হারাম আয়ে বেড়ে উঠবে এটা মেনে নিতে পারছি না। আলহামদুলিল্লাহ, একমাত্র আমার হাসবেন্ড আমার মেন্টালিটি বুঝেন এবং সহযোগিতা করেন। কিন্তু এদিকে পারিবারিক অশান্তি লেগে থাকে। অবস্থা এমন যে আমি চাইলে পরিবারে ভালো আয়ের মাধ্যম (আমি স্টুডেন্ট ভিসা এবং আমার হাসবেন্ড ওয়ার্ক পারমিটে ট্রাই করবেন) হতে পারি কিন্তু আমি শুধু নিজের মনের কথা শুনছি। আমার বাবারবাড়ির অবস্থাও প্রায় এক। বিশেষত আমার বড় ভাই আমার উপর রেগে আছেন। মূলত বিদেশ প্রসেসিং এর টাকা আমার বড় ভাই দিয়েছেন এবং উনিও চাচ্ছেন আমরা যেন আবার চেষ্টা করি। উনার আসলে আমার শশুড়বাড়ির কাউকে তেমন পছন্দ না, বিশেষত আমার শাশুড়ীকে। আমার ভাই চান না আমি এখানে কষ্ট করে থাকি। ভাই হিসেবে উনি খুবই ভালো, ইসলামের বোধ না থাকায় আমার দ্বিমতের কারণ বুঝতে পারছেন না। দিনদিন আমাদের সাথে ২ পরিবারের (বাবারবাড়ি+শশুড়বাড়ি) সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। সবার চোখে আমি জেদী, একরোখা মানুষে পরিণত হচ্ছি।

আমি এভাবে পরিবারের শত্রু হয়ে থাকতে চাই না কিন্তু বিদেশও যেতে চাই না। এই অবস্থায় কি আমাদের আবার বিদেশের জন্য (যেখানে আমার ভাই তার অমুসলিম ওয়াইফ নিয়ে থাকেন) চেষ্টা করা জায়েজ হবে? (বিদেশ গেলেও স্থায়ীভাবে থাকার নিয়্যাত নেই। আল্লাহ চাইলে টাকা জমিয়ে দেশে ফিরে আমার হাসবেন্ডের কিছু করার ইচ্ছা। উনার কাছে কোনো মূলধন নেই বিধায় নিজ থেকে কিছু করতে পারছেন না আর অনার্স ইনকমপ্লিট বিধায় মোটামুটি লেভেলের চাকরীও হচ্ছে না)

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও জীবিকা উপার্জনের কোন সোর্স ব্যবস্থা করতে না পারে, এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপারে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে যায়, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে জায়েয কোনো চাকরি পেয়ে যায়,তাহলে দু’টি শর্ত সাপেক্ষে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং বসবাস করা জায়েয হবে।
যথাঃ- 
এক. সেখানে আমলী জিন্দিগী তথা, ইসলামী বিধি-বিধান পরিপালনে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে হবে। দুই. সেখানকার প্রচলিত অশ্লীলতা, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।

কেননা, হালাল জীবিকা অন্বেষণ করাও ফরজ ইবাদতসমূহের পর একটি অন্যতম ফরজ কাজ। আর জীবিকা উপার্জনের জন্য ইসলাম কোনো জায়গাকে নির্দিষ্ট করে দেয়নি। বরং জীবিকা উপার্জনের ব্যাপারে ইসলামের ব্যাপক অনুমতি রয়েছে যে, যেখান থেকে ইচ্ছা করবে সেখান থেকে জীবিকা উপার্জন করতে পারবে। 
যেমন কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে :
ﻫﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﺟﻌﻞ ﻟﻜﻢ ﺍﻻﺭﺽ ﺫﻟﻮﻻ ﻓﺎﻣﺸﻮﺍ ﻓﻲ ﻣﻨﺎﻛﺒﻬﺎ ﻭﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﺭﺯﻗﻪ ﻭﺍﻟﻴﻪ ﺍﻟﻨﺸﻮﺭ-
“আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন সুগম, সুতরাং তোমরা তাতে ভ্রমণ কর এবং তার দেয়া জীবিকা থেকে আহার কর, তোমাদেরকে তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে”। (সূরা মুল্ক ঃ আয়াত, ১৫)

তবে বিনা প্রয়োজনে সেখানে চাকরী এবং বসবাসের কোনো অনুমিত শরীয়তে নেই।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3447


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার সমস্ত বিবরণ পড়ে আমাদের জন্য এটা বলাই উচিৎ মনে হচ্ছে যে, আপনি দাওয়াহ এর নিয়ত অন্তরে পাকাপোক্ত রেখে বিদেশে চলে যাবেন।মুসলিম কোনো দেশে যাওয়া সম্ভব না হলে অমুসলিম দেশে যাওয়ার জন্য এপ্লাই করতে পারেন। কেননা সেখানে অন্ততপক্ষে ঘরের ভিতর নিজের সুবিধামত পর্দা পুশিদা রক্ষা করতে পারবেন। আল্লাহ আপনার সহায় হোক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (583,410 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...